সাইফের সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার টিকিট?

বাংলাদেশের সবশেষ টেস্টের বাস্তবতায় শ্রীলঙ্কা সফরের দলে সাইফ হাসানকে দেখা কঠিন। তবে সম্ভাবনার ফিকে হয়ে যাওয়া ছবি বেশ উজ্জ্বল করে তুললেন তরুণ এই ব্যাটসম্যান। জাতীয় লিগের প্রথম দিনেই তিনি ঢাকা বিভাগের হয়ে উপহার দিলেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2021, 11:55 AM
Updated : 22 March 2021, 03:10 PM

জাতীয় লিগের নতুন আসরের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান সাইফ। ঢাকা বিভাগের হয়ে সোমবার তিন নম্বরে নেমে ১২৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি ১১ চার ও ৫ ছক্কায়।

আলাউদ্দিন বাবুর ৪ উইকেটের সৌজন্যে অবশ্য ঢাকার রানকে নাগালের বাইরে যেতে দেয়নি রংপুর বিভাগ। প্রথম দিন শেষে ঢাকার রান ৮ উইকেটে ২৯৭।

গত মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজে তৃতীয় ওপেনার হিসেবে স্কোয়াডে ছিলেন সাইফ। দ্বিতীয় টেস্ট থেকে যখন চোটে ছিটকে গেলেন মূল ওপেনারদের একজন সাদমান ইসলাম, স্বয়ংক্রিয়ভাবেই একাদশে ঢোকার কথা সাইফের। কিন্তু স্কোয়াডের বাইরে থেকে জরুরী তলব করে সৌম্য সরকারকে এনে করানো হলো ওপেন। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন তখন বললেন, সাইফ প্রস্তুত নয়!

সেই ধাক্কার পর আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে একদিনের ম্যাচে সেঞ্চুরি ও এবার জাতীয় লিগের সেঞ্চুরিতে ২২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান হয়তো জানিয়ে দিলেন, আগামী মাসে বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য তিনি প্রস্তুত!

বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ঢাকার শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। স্কোর বোর্ডে কোনো রান ওঠার আগেই ফিরে যান দুই ওপেনার। রনি তালুকদারকে এলবিডব্লিউ করে ‘গোল্ডেন ডাক’-এর স্বাদ দেন মুকিদুল ইসলাম। আব্দুল মজিদকে কট বিহাইন্ড করেন আলাউদ্দিন।

দ্বিতীয় ওভারেই ক্রিজে যাওয়া সাইফ কিপার-ব্যাটসম্যান মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে নিয়ে গড়েন প্রাথমিক প্রতিরোধ। তিন পেসার বাবু-মুকিদুল-আরিফুল ইসলামদের ভালোভাবেই সামাল দেন এই দুই জন।

কঠিন সময় পার করে থিতু হয়ে গিয়েছিলেন মাহিদুল। জমে উঠেছিল সাইফের সঙ্গে তার জুটি। এমন সময়ে নিজের দোষেই ফিরে যান এই তরুণ। অফ স্পিনার মাহমুদুল হাসানের স্টাম্পের বলে শট না খেলে হন এলবিডব্লিউ। ৬ চারে তিনি করেন ৪৭। ভাঙে ৭৯ রানের জুটি।

তাইবু্র পারভেজ ও শুভাগত হোম খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি সাইফকে। দুই অঙ্কে গিয়েই ফিরে যান অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যান।

পেসাররা আক্রমণ থেকে সরার পর লম্বা একটা সময় কেবল স্পিনারদের ওপরই নির্ভর করেন রংপুর অধিনায়ক। এই সময়ে বেশ সহজেই খেলেন সাইফ ও নাদিফ চৌধুরি। রানও আসে। সহজাত আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের ওপর চড়াও হন নাদিফ।

এক-দুই নিয়ে প্রান্ত বদল করে খেলার সঙ্গে বাজে বল পেলেই বাউন্ডারি হাঁকান থাকেন সাইফ। তিনটি করে ছক্কা-চারে ৯১ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি। আলাউদ্দিনের বল ফাইন লেগে পাঠিয়ে দুই রান নিয়ে ১৬৭ বলে পৌঁছান তিন অঙ্কে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তার পঞ্চম সেঞ্চুরি।

সাইফের একশ রানের ৬২ আসে বাউন্ডারি থেকে। নাদিফের সঙ্গে তার জুটির সেঞ্চুরি হয় ১৭১ বলে।

সেঞ্চুরি ছুঁয়ে আরও এগিয়ে যাচ্ছিলেন সাইফ। নাদিফও খেলছিলেন আস্থায়। ৮১তম ওভারে দুই জনকেই ফিরিয়ে দেন আলাউদ্দিন। ২৩৩ বলে ১২৭ রান করা সাইফকে ফিরিয়ে ভাঙেন ১৩৭ রানের জুটি। পরে এলবিডব্লিউ করেন ঢাকা অধিনায়ক নাদিফকে। তার ১০৫ বলে খেলা ৬৯ রানের ইনিংস গড়া ২ ছক্কা ও ৮ চারে।

পরে নাজমুল ইসলাম অপুকে শূন্য রানে কট বিহাইন্ড করেন আলাউদ্দিন। ৫ উইকেটে ২৮০ রানের দৃঢ় অবস্থান থেকে ঢাকা ৭ রানের মধ্যে হারায় ৩ উইকেট। দিনের বাকি অংশটা কাটিয়ে দেন আরাফাত সানি জুনিয়র ও সুমন ইসলাম। 

পেস বোলিং অলরাউন্ডার বাবু ৪ উইকেট নেন ২৫ রানে। মাহমুদুল ৬০ রানে নেন ২ উইকেট। প্রথম দিন ৮ বোলার ব্যবহার করেছেন রংপুর অধিনায়ক নাঈম ইসলাম।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা বিভাগ ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৯৭/৮ (মজিদ ০, রনি ০, সাইফ ১২৭, মাহিদুল ৪৭, তাইবুর ১০, শুভাগত ১০, নাদিফ ৬৯, আরাফাত জুনিয়র ৮*, অপু ০, সুমন ৪*; আলাউদ্দিন ১৩-২-২৫-৪, মুকিদুল ১২-৩-৩৬-১, আরিফুল ৪-১-৯-০, সোহরাওয়ার্দী ২৬-২-৮০-১, রিশাদ ১৩-০-৫৯-০, মাহমুদুল ১৮-৩-৬০-২, তানবীর ৩-০-৮-০, নাসির ১-০-২-০)