‘জাতীয় লিগে মানিয়ে নিতেই ২ রাউন্ড চলে যাবে’

কাগজে-কলমে প্রস্তুতির জন্য সুযোগ ছিল ৯ দিন। তবে সব গুছিয়ে মাঠে নামতে এই কয়েক দিন অনুশীলনেরও সুযোগ মেলেনি। তাই ঘাটতি নিয়েই জাতীয় ক্রিকেট লিগে খেলতে যাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। ঢাকা বিভাগের প্রধান কোচ দিপু রায়ের শঙ্কা, মহামারীকালে লম্বা বিরতির জন্য বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে মানিয়ে নিতে হয়তো লেগে যাবে দুই রাউন্ড। 

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2021, 04:05 PM
Updated : 21 March 2021, 04:05 PM

চারটি ভেন্যুতে সোমবার শুরু হবে বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে দেশের প্রধান টুর্নামেন্ট জাতীয় লিগ। এই টুর্নামেন্ট দিয়েই মহামারীকালে মাঠে ফিরছে নিয়মিত প্রতিযোগিতাগুলো।

গত ১১ মার্চ প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন জানান, কোচ ও অধিনায়কদের সঙ্গে তারা ৮টি দলের জন্য ১৮ সদস্যের দল তৈরি করে দিয়েছেন। এর দুই দিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় অনুশীলন।

নানা কারণেই পুরো স্কোয়াড নিয়ে সব দল সেদিন থেকে অনুশীলন শুরু করতে পারেনি। বাংলাদেশ লেজেন্ডসের হয়ে ভারতে সাবেকদের ক্রিকেটে খেলার জন্য শুরু থেকে অনুশীলনে থাকতে পারেননি চট্টগ্রামের প্রধান কোচ আফতাব আহমেদ ও সিলেটের প্রধান কোচ রাজিন সালেহ।

ফিটনেস নিয়ে শঙ্কা

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের আরেক টুর্নামেন্ট বিসিএলের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চল। মহামারীকালে ঘরোয়া ক্রিকেটে সেটাই ক্রিকেটারদের সবশেষ বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচ।

এক বছরের বেশি সময় পরে স্কিল ফিটনেসে বিশেষ করে বোলিংয়ে মরচে পড়ার শঙ্কা দেখছেন দিপু।

ক্লোজ-ইন ফিল্ডিংয়ে উন্নতির সুযোগ জাতীয় লিগে কমই, বলছেন সংশ্লিষ্টরা। ফাইল ছবি।

“পুরো দল নিয়ে অনুশীলন শুরু করেছি চার-পাঁচ দিন ধরে। আরেকটু সময় পেলে তো অবশ্যই ভালো হতো। বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচ খেলে না ওরা অনেক দিন। ছন্দে ফেরার জন্য আরেকটু সময় পেলে তো অবশ্যই খুব ভালো হতো। সব মিলিয়ে দিন সাতেক সময় পাওয়া গেছে। সবারই তো একটা লম্বা বিরতি পড়ে গেছে। চার দিনের ম্যাচে মানিয়ে নিতে নিতে দেখা যাবে দুইটা রাউন্ড চলে গেছে।”   

“ফিটনেস লেভেলেরও একটা ব্যাপার আছে। সাধারণ ফিটনেসের পাশাপাশি স্কিল ফিটনেসের ব্যাপারটাও কিন্তু দেখতে হবে। দেখা গেল, এমনিতে ফিট কিন্তু দিনে ১৫ কিংবা ১৮ ওভার বোলিং করার মতো ফিটনেস নাই। ৫/৭ ওভার বোলিং করার পর যদি বারবার ফিজিওকে তার কাছে দৌড়ে যেতে হয়, তাহলে মুশকিল।”

ক্লোজ ক্যাচিং: সমাধান নেই জাতীয় লিগে?

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হারা টেস্ট সিরিজ দিয়ে আরও একবার সামনে এসেছে ক্লোজ ক্যাচিংয়ে বাংলাদেশের ফিল্ডারদের ব্যর্থতা। জাতীয় লিগ দিয়ে এই সমস্যা সমাধানের সুযোগ দেখেন না আফতাব আহমেদ, মার্শাল আইয়ুবরা।

চট্টগ্রামের অনুশীলন যখন শুরু হয় আফতাব তখন ভারতে। তার অনুপস্থিতিতে কাজ চালিয়ে নিয়েছেন সহকারী কোচ মাসুম উদ দৌলা। দেশে ফিরে দুই দিন দলের সঙ্গে কাজ করে আফতাব জানান, ক্লোজ ক্যাচিংয়ে উন্নতি করতে হলে সেই খেলোয়াড়েরই নিজের মতো করে সময় বের করে নিতে হবে।

“এনসিএলে খেলার মাধ্যমে এটা করা কঠিন। মূল কাজটা করতে হবে বাইরে, অনুশীলনে। একটা টুর্নামেন্ট চলার সময় এটা নিয়ে আলাদা কাজ করা কঠিন। টুর্নামেন্টের বাইরে সময় নিয়ে অনুশীলন করে উন্নতি করতে হবে।”

“বিষয়টি ফিল্ডারের নিজের উপর নির্ভর করে। খেলা তো চলতেই থাকবে, এর মধ্যে একটা সময় নিজের জন্য বের করে নিতে হবে। সে সময় অনুশীলন করে নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে। সেটাই ম্যাচে কাজে লাগবে।”

প্রায় একই মত ঢাকা মেট্রো অধিনায়ক মার্শালের। ৩২ বছর বয়সী এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান জানান, ঘরোয়া ক্রিকেটে স্লিপে নিয়মিত ক্যাচ না যাওয়ায় এখানে তৈরি হওয়া বেশ কঠিন। 

“ম্যাচের মধ্য দিয়ে উন্নতির কথা যদি বলেন, সেক্ষেত্রে আগে তো স্লিপে ক্যাচ আসতে হবে। ম্যাচে খুব একটা ক্যাচ স্লিপে আসে না। অনুশীলনের মধ্য দিয়েই এখানটায় উন্নতি করতে হবে।”

খেলোয়াড়ি জীবনে ক্লোজে দুর্দান্ত ফিল্ডার ছিলেন রাজিন। সিলেটের এই প্রধান কোচের মতে, শুধু অনুশীলনে কাজ হবে না, ক্লোজে ভালো ফিল্ডিং করতে প্যাশনও লাগবে।

“আমার প্যাশন ছিল। আমার মনে হয় প্রতিটা খেলোয়াড়ের মধ্যে একটা প্যাশন থাকা উচিত। স্রেফ ব্যাটিং করলাম, বোলিং করলাম, কিছুটা ফিল্ডিং করলাম, এভাবে হবে না। নির্দিষ্ট একটি জায়গায় ফিল্ডিং করার মানসিকতা থাকতে হবে। ফিল্ডিং নিয়ে প্যাশন তৈরি হলে কেবল এখানে উন্নতি হবে।”