ছক্কায় শুরু আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। ডাগআউটে সতীর্থরা তখন তাকিয়ে বিস্ময়ভরা মুগ্ধতায়! ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে সূর্যকুমার এভাবেই চমকে দেন সবাইকে।
ম্যাচ শেষে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি জানান, সূর্যকুমারের সাহস তাদেরকে কতটা বিস্ময় উপহায় দিয়েছে।
“ তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে এরকম শুরু করা সহজ কথা নয়। এর শট দেখে আমরা হতবাক হয়ে যাই। শুরুতেই নিজের কতৃত্বের ছাপ লাগিয়ে দিয়েছে সে।”
সূর্যকুমারের আগে ছক্কায় টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার শুরু করেছেন আর কেবল ৭ জন। সবার আগে করেছিলেন পাকিস্তানের সোহেল তানভির, ২০০৭ বিশ্বকাপে। সেটি ছিল তার ষষ্ঠ ম্যাচ।
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম বলেই ছক্কা মেরেছেন এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেরম টেইলর, জেভিয়ার মার্শাল, কাইরন পোলার্ড, টিনো বেস্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাঙ্গালিসো মোশেল ও আয়ারল্যান্ডের মার্ক অ্যাডায়ার।
সূর্যকুমারের মতো অ্যাডায়ার ও পোলার্ডের ছিল সেটি দ্বিতীয় ম্যাচ। টেইলরের তৃতীয় ম্যাচ, বেস্টের চতুর্থ। মার্শাল ও মোশেল মেরেছিলেন অভিষেক ম্যাচেই। মার্শালেরটি ছিল আবার ইনিংসেরই প্রথম বল, ব্রেট লিকে ছক্কায় উড়িয়ে দেন পুল শটে।
ম্যাচের পর সূর্যকুমার বললেন, আর্চারের ডেলিভারি তিনি আগেই অনুমান করতে পেরেছিলেন।
“আমার পরিকল্পনা পরিষ্কার ছিল। আইপিএলে তাকে (আর্চার) আমি গত ২-৩ মৌসুম ধরে দেখছি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও দেখেছি। নতুন ব্যাটসম্যানের জন্য তার পরিকল্পনা কেমন থাকে, খেয়াল করেছি। আমিও সেভাবেই পরিকল্পনা করে নেমেছি। জানতাম সে শর্ট বল করবে। আমি এই শট খেলার প্রস্তুতি নিয়েই গিয়েছিলাম। ভালো লাগছে যেভাবে সবকিছু হয়েছে।”
“এই শট আমি অনেক আগে থেকেই খেলে আসছি। ঘরোয়া ক্রিকেট, স্থানীয় ক্রিকেট, রাবার বল, টেনিস বল, সব জায়গায়ই খেলেছি। সিমেন্টের উইকেটে খেলতে খেলতে সেখান থেকেই এই শট এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলে এসেছে।”
অনেক দিন ধরেই ভারতীয় দলের দুয়ারে কড়া নাড়ছিলেন সূর্যকুমার। আইপিএলে তিনি নিয়মিত পারফরমার। ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যান্য আসরেও ভালো করছিলেন। একটা সময় তিনি শিরোনাম হয়েছিলেন শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনায়। ব্যাট হাতেও ছিলেন অধারাবাহিক। কিন্তু সেসব দিন পেছনে ফেলেছেন অনেক আগেই। তবু জাতীয় দলে সুযোগ মিলছিল না। অনেক অপেক্ষার পর অবশেষে সেই সুযোগ এলো ৩০ বছর বয়সে।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ইষান কিষানের সঙ্গে অভিষেক হয় তার। সেদিন কিষান ঝড়ো ফিফটিতে আলোড়ন তোলেন, সূর্যকুমার ব্যাট করার সুযোগই পাননি। পরের ম্যাচে চলে যান একাদশের বাইরে। অবশেষে বৃহস্পতিবার প্রথমবার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েই করলেন বাজিমাত।
সূর্যকুমারের কাছে এটি স্বপ্ন পূরণ হওয়ার মতো মুহূর্ত।
“ খুব ভালো লাগছে যে ম্যাচ জিতেছি। আমার সবসময়ই স্বপ্ন ছিল ভারতের হয়ে খেলব ও দেশকে ম্যাচ জেতাব। ব্যাটিংয়ে নেমে কোনো কিছু জটিল করতে চাইনি। নিজের সহজাত খেলা মেলে ধরেছি।”