লঙ্কান স্পিনে ঘায়েল গেইল-পোলার্ডরা

প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করেও কাইরন পোলার্ডের তাণ্ডবে আড়ালে পড়ে গিয়েছিলেন ভানিদু হাসারাঙ্গা। এবার আরেকটি দারুণ পারফরম্যান্সে নায়ক তরুণ এই লেগ স্পিনারই। সঙ্গে লঙ্কানদের অন্য দুই স্পিনার লাকশান সান্দাক্যান ও আকিলা দনঞ্জয়ার দুর্দান্ত বোলিংয়ে নাস্তানাবুদ ক্যারিবিয়ানরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2021, 03:44 AM
Updated : 6 March 2021, 03:44 AM

সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার জয় ৪৩ রানে। তিন ম্যাচ সিরিজে এখন ১-১ সমতা।

বাংলাদেশ সময় শনিবার সকালের ম্যাচে অ্যান্টিগায় টস জিতে শ্রীলঙ্কা ২০ ওভারে তোলে ১৬০ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট ১১৭ রানেই।

কুলিজ ক্রিকেট গ্রাউন্ডের উইকেট এ দিন সময়ের সঙ্গে মন্থর হতে থাকে বেশ। পেসার একজন কমিয়ে লঙ্কানরা দলে নেয় বাড়তি স্পিনার। দারুণ কাজে লেগে যায় এই কৌশল। লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গার শিকার গুরুত্বপূর্ণ তিন উইকেট। পাশাপাশি ব্যাট হাতে ছোট্ট গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসে তিনিই ম্যাচের সেরা।

লোয়ার-অর্ডারে দুটির পাশাপাশি চায়নাম্যান সান্দাক্যান নেন আগের ম্যাচে ছয় ছক্কার নায়ক পোলার্ডের উইকেট।

ওভারে ছয় ছক্কা ও ৪ ওভারে ৬২ রানের হতাশা ভুলে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আকিলা দনাঞ্জয়া ৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। এমনকি অনিয়মিত স্পিনার দানুশকা গুনাথিলাকাও পেয়ে যান জেসন হোল্ডারের মূল্যবান উইকেট।

একমাত্র বিশেষজ্ঞ পেসার দুশমন্থ চামিরা ২ উইকেট নেন মাত্র ২৬ রানে। কেবল থিসারা পেরেরা ছিলেন খরুচে। তার ২ ওভারে আসে ৪২ রান!

শেষ পর্যন্ত জয়টা বেশ বড় ব্যবধানে হলেও ম্যাচের মাঝবিরতিতে ২০-২৫ রান কম হওয়ার আক্ষেপ থাকার কথা লঙ্কানদের। ১০ ওভারেই যে দল তুলে ফেলে বিনা উইকেটে ৯৪, তারা মাত্র ১৬০ রানে সন্তুষ্ট হবে কেন!

দানুশকা গুনাথিলাকা ও তরুণ পাথুম নিসানকা লঙ্কানদের এনে দেন এই উড়ন্ত শুরু। পাওয়ার প্লেতে দুজন তোলেন ৫৬। এরপর ঝড়ের বেগে দুজন দলকে নিয়ে যান শতরানের পথে।

এরপরই শুরু বিপত্তির। ডোয়াইন ব্রাভোর দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে নিসানকা রান আউট হন ২৩ বলে ৩৭ রান করে। ওই ওভারেই দারুণ এক স্লোয়ারে ব্রাভো ফিরিয়ে দেন গুনাথিলাকাকে। ৪২ বলে ৫৬ করে ফেরেন এই বাঁহাতি।

এরপর তিন অভিজ্ঞ দিনেশ চান্দিমাল, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও থিসারা পেরেরা ব্যর্থ আবারও। ১০ ওভারের পর টানা ৭ ওভারে নেই কোনো বাউন্ডারি!

অষ্টাদশ ওভারে আশেন বান্দারার ছক্কায় কাটে সেই খরা। দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা এই তরুণ আউট হয়ে যান ১৯ বলে ২১ করে।

শ্রীলঙ্কা ১৬০ পর্যন্ত পেতে পারে মূলত হাসারাঙ্গার ক্যামিওতে। তিন বাউন্ডারিতে অপরাজিত থাকেন তিনি ১১ বলে ১৯ করে।

লঙ্কানদের দারুণ শুরু এনে দেন দানুশকা গুনাথিলাকা ও পাথুম নিসানকা। ছবি : শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট।

ব্যাটিংয়ে পর হাসারাঙ্গা দেখান বোলিং ঝলক। তার আগে ক্যারিবিয়ানদের বেঁধে রাখেন দনাঞ্জয়া।

প্রথম ৫ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করতে পারে ২৫, তাতে ৩ ওভার করে দনাঞ্জয়া দেন মাত্র ৬ রান! সঙ্গে এভিন লুইসের উইকেট।

থিসারার এক ২০ ওভারে ২০ রান নিয়ে লেন্ডল সিমন্স ও ক্রিস গেইল তবু পাওয়ার প্লের শেষটা করেন ভালো। তখনই দৃশ্যপটে হাসারাঙ্গা। এক ওভারেই তিনি ফিরিয়ে দেন গেইল (১৬ বলে ১৬) ও সিমন্সকে (১৯ বলে ২১)।

এরপর আর কেউ সেভাবে দাঁড়াতে পারেননি। অধিনায়ক পোলার্ড একটি ছক্কা মারলেও ১৩ রান করেন ১৫ বলে।

দশ নম্বরে নামা ওবেড ম্যাককয় শেষ দিকে থিসারার এক ওভারে দুটি চার ও দুটি ছক্কা মারলে একশ পার হতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হারের ব্যবধান তার পরও বেশ বড়।

সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচ বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোরে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা : ২০ ওভারে ১৬০/৬ (গুনাথিলাকা ৫৬, নিসানকা ৩৭, চান্দিমাল ৩, ম্যাথিউস ১৩, বান্দারা ২১, থিসারা ২, হাসারাঙ্গা ১৯*, ডিকভেলা ০*; এডওয়ার্ডস ২-০-১৯-০, সিনক্লেয়ার ৪-০-৩২-০, হোল্ডার ৪-০-৩৬-১, ম্যাককয় ৪-০-৩৪-১, ব্রাভো ৪-০-২৫-২, অ্যালেন ২-০-১১-০)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১৮.৪ ওভারে ১১৭ (সিমন্স ২১, লুইস ৬, গেইল ১৬, পুরান ৮, হোল্ডার ৯, ব্রাভো ২, পোলার্ড ১৩, অ্যালেন ১২, সিনক্লেয়ার ৩, ম্যাককয় ২৩, এডওয়ার্ডস ১*; দনাঞ্জয়া ৪-০-১৩-১, চামিরা ৪-০-২৬-২, থিসারা ২-০-৪২-০, হাসারাঙ্গা ৪-০-১৭-৩, সান্দাক্যান ৩.৪-০-১০-৩, গুনাথিলাকা ১-০-৮-১)।

ফল : শ্রীলঙ্কা ৪৩ রানে জয়ী।

সিরিজ : ৩ ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা।

ম্যান অব দা ম্যাচ : ভানিদু হাসারাঙ্গা।