শেবাগ ঝড়ে উড়ে গেল বাংলাদেশের সাবেকরা

বয়স পেরিয়ে গেছে ৪২। শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটি খেলেছেন ঠিক ৮ বছর আগে। কিন্তু বিরেন্দর শেবাগের ব্যাটিং দেখে সেটা কে বলবে! সেই আপার কাট, লফটেড শট, দুর্দান্ত সব ড্রাইভ। সাবেকদের লড়াইয়ে শেবাগ মনে করিয়ে দিলেন তার সেরা সময়কে। ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশের পুঁজি এমনিতেই ছিল মামুলি। শেবাগের তাণ্ডবে ভারত তা পেরিয়ে গেল যেন চোখের পলকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 March 2021, 06:17 PM
Updated : 5 March 2021, 06:17 PM

ভারতের রায়পুরে রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে প্রথম খেলতে নেমে পাত্তাই পেল না বাংলাদেশ লেজেন্ডস। শুক্রবার রাতে ভারত লেজেন্ডসের জয় ১০ উইকেটে।

বাংলাদেশের ১০৯ রান তাড়ায় ভারত জিতে যায় ১০.১ ওভারেই।

১০ চার ও ৫ ছক্কায় শেবাগ অপরাজিত ৩৫ বলে ৮০ রান করে। আরেক কিংবদন্তি ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বহু বোলিং আক্রমণ গুঁড়িয়ে দেওয়ায় শেবাগের সঙ্গী শচিন টেন্ডুলকার অপরাজিত থেকে যান ২৬ বলে ৩৩ রান করে।

টুর্নামেন্টে ভারতের এটি টানা তৃতীয় জয়।

বাংলাদেশের প্রথম আর ভারতের তৃতীয় ম্যাচের কারণ বুঝতে হলে যেতে হবে একটু পেছনে। টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছিল গত বছরের মার্চে, মুম্বাইয়ে। তখন আসরে ছিল না বাংলাদেশ। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপে স্থগিত হয়ে যায় সেই আসর। এবার সেখান থেকেই আবার শুরু হলো টুর্নামেন্ট, ভেন্যু এখন ছত্তিসগড়ের রাজধানী রায়পুর। কিন্তু কোভিড জটিলতার কারণে নাম প্রত্যাহার করে নেয় অস্ট্রেলিয়া। সুযোগ হয় বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের সাবেকদের। টুর্নামেন্টে টুর্নামেন্টে আরও আছে শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।  

শেষ মুহূর্তে ডাক পেয়ে তাড়াহুড়োয় দল খুব বেশি গোছাতে পারেনি বাংলাদেশ। মাঠের ক্রিকেটেও ছিল সেটির ছাপ। মোহাম্মদ রফিকের নেতৃত্বে নামা দলের পারফরম্যান্স ব্যাটে-বলে ছিল ছন্নছাড়া।

নাজিমউদ্দিনের সৌজন্যে শুরুটা যদিও ছিল দুর্দান্ত। টস জিতে ৬ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়েই ৫০ ছুঁয়ে ফেলে বাংলাদেশ।

উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৫৯ রান, তাতে নাজিমউদ্দিনেরই অবদান ৪৩। আরেক ওপেনার জাভেদ ওমর বেলিম তার খেলোয়াড়ী দিনগুলির মতোই ১২ রান করে আউট হন ১৯ বল খেলে।

প্রজ্ঞান ওঝার বলে জাভেদ স্টাম্পড হওয়ার পর মড়ক লাগে ইনিংসে। আর কোনো জুটি দুই অঙ্কই ছুঁতে পারেনি!

৮ চার ও ১ ছক্কায় ৩৩ বলে ৪৯ করে যুবরাজ সিংয়ের বলে বোল্ড হন নাজিমউদ্দিন। এরপর নাফিস ইকবাল, রফিক, হান্নান সরকাররা স্রেফ আসা-যাওয়া করেছেন। মিডল অর্ডারে রাজিন সালেহ ১২ রান করতে খেলেন ২৪ বল।

প্রজ্ঞান ওঝা, যুবরাজ সিং ও মাত্র গত মাসেই অবসর সেরা নেওয়া বিনয় কুমারের সামনে ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং।

এরপর শেবাগের সামনে খড়কুটোর মতো উড়ে যায় বাংলাদেশের বোলিং। মোহাম্মদ রফিকের করা ইনিংসের প্রথম ওভারেই শেবাগ মারেন তিন চার ও এক ছয়। তিন পেসার মোহাম্মদ শরিফ, আলমগির কবির ও খালেদ মাহমুদ বল ফেলারই জায়গা পাচ্ছিলেন না।

ম্যাচ শেষ করে ফেরার সময় শেবাগ আর টেন্ডুলকারের হাসি থামেই না। খুনসুটিতে দুজন হয়তো মনে করছিলেন সেই সোনালী দিনগুলি!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ লেজেন্ডস: ১৯.৪ ওভারে ১০৯ (নাজিমউদ্দিন ৪৯, জাভেদ ওমর ১২, নাফিস ইকবাল ৭, মোহাম্মদ রফিক ১, রাজিন সালেহ ১২, হান্নান সরকার ৩, আব্দুর রাজ্জাক ২, মোহাম্মদ শরিফ ৫, খালেদ মাসুদ ৬*, খালেদ মাহমুদ ৭, আলমগীর কবির ০; ইরফান পাঠান ২-০-১৩-০, বিনয় কুমার ৩.৪-০-২৫-২, মুনাফ প্যাটেল ২-০-২১-০, মানপ্রিত গনি ৪-০-১৯-১, প্রজ্ঞান ওঝা ৪-০-১২-২, যুবরাজ সিং ৩-০-১৫-২, ইউসুফ পাঠান ১-০-৩-১)।

ভারত লেজেন্ডস : ১০.১ ওভারে ১১৪/০ ( বিরেন্দর শেবাগ ৮০*, শচিন টেন্ডুলকার ৩৩*; মোহাম্মদ রফিক ৩-০-২৬-০, মোহাম্মদ শরিফ ৩-০-৩০-০, আলমগীর কবির ২-০-২৫-০, খালেদ মাহমুদ ২.১-০-৩২-০)।

ফল: ভারত লেজেন্ডস ১০ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: বিরেন্দর শেবাগ।