অশ্বিনের সেঞ্চুরি, জয়ের পথে ভারত

শেষ ব্যাটসম্যান যখন ক্রিজে আসলেন তখনও সেঞ্চুরি থেকে ২৩ রানে দূরে রবিচন্দ্রন অশ্বিন। স্পিনারদের জন্য প্রবল সহায়তা আছে এমন উইকেটে সতীর্থকে দারুণ সঙ্গ দিলেন মোহাম্মদ সিরাজ। অন্য প্রান্তে বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে অশ্বিন পৌঁছে গেলেন তিন অঙ্কে। পরে দ্রুত ইংল্যান্ডের ৩ উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের পথে আরেকটু এগিয়ে গেল ভারত।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2021, 12:46 PM
Updated : 15 Feb 2021, 12:56 PM

চেন্নাই টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ৩ উইকেটে ৫৩ রান। ড্যান লরেন্স ১৯ ও জো রুট ২ রানে ব্যাট করছেন। জয়ের জন্য শেষ দুই দিনে আরও ৪২৯ রান চাই সফরকারীদের। সিরিজে সমতা আনতে ভারতের প্রয়োজন শেষ ৭ উইকেট।

বল হাতে প্রথম ইনিংসে ইংলিশদের গুঁড়িয়ে দেওয়া অশ্বিন ব্যাট হাতেও খেললেন দারুণ। বিরাট কোহলির সঙ্গে প্রায় একশ রানের জুটি গড়ার পর লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে দলকে নিয়ে গেলেন তিনশর কাছে। খেলেন ১০৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস।

ঘরের মাঠে চেন্নাইয়ের এই ক্রিকেটারের এটাই প্রথম সেঞ্চুরি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাইরে কোনো দেশের বিপক্ষে প্রথম। পঞ্চম সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া এই ক্রিকেটার ইয়ান বোথামের রেকর্ড ছোঁয়ার পথে এগিয়ে গেছেন আরেকধাপ। টেস্টে একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট সবচেয়ে বেশি পাঁচবার আছে ইংলিশ অলরাউন্ডারের। অশ্বিনের হলো তিনবার।   

এমএ চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে সোমবার ১ উইকেটে ৫৪ রান নিয়ে দিন শুরু করা ভারত শুরুতেই চাপে পড়ে যায়। ১ রান যোগ করতেই ফিরে যান আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা ও চেতেশ্বর পুজারা।

দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় রিশাভ পান্তকে প্রমোশন দিয়ে পাঁচে পাঠায় ভারত। এই কিপার-ব্যাটসম্যানকে দ্রুত বিদায় করেন জ্যাক লিচ। অজিঙ্কা রাহানে ও আকসার প্যাটেলকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি মইন আলি।

টেস্টে পঞ্চম শতক ছুঁয়ে উচ্ছ্বসিত রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ছবি: আইসিসি

এক প্রান্তে অবিচল ছিলেন কোহলি। তবুও ১০৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে খানিকটা চাপেই ছিল ভারত। সেখান থেকে অধিনায়কের সঙ্গে ১৭৭ বলে ৯৬ রানের জুটিতে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যান অশ্বিন।

জুটিতে অগ্রণী তিনিই। তার আলোয় যেন ম্লান ছিলেন কোহলি। জুটিতে ৮১ বলে অশ্বিনের অবদান ৫৬, ভারত অধিনায়কের ৯৬ বলে ৪০।

এবারও কোহলিকে থামান মইন। ৭ চারে ১৪৯ বলে ৬২ রান করা ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লিউ করে ভাঙেন ভারতের প্রতিরোধ। কুলদিপ যাদব ও ইশান্ত শর্মা খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি অশ্বিনকে।

দেশের মাটিতে নিজের প্রথম টেস্ট খেলা সিরাজ খেলেন আস্থায়। তিনি ক্রিজে আসার সময় ৭৭ রানে থাকা অশ্বিন তোলেন ঝড়। শেষ জুটিতে ৪৯ রান পায় ভারত। সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর বেশি দূর যেতে পারেননি অশ্বিন। অলি স্টোনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১৪৮ বলে ১৪ চার ও এক ছক্কায় করেন ১০৬ রান।

অফ স্পিনার মইন ৪ উইকেট নেন ৯৮ রানে। ১০০ রানে ৪ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার লিচ।

উইকেটের যে হাল তাতে ৪৮২ রানের লক্ষ্য ছোঁয়ার বাস্তবিক কোনো সুযোগ নেই। এই উইকেটে দুই দিন কাটিয়ে দেওয়াও প্রায় অসম্ভব। সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভনের মতে, দেড়শ করতে পারলেই নিজেদের কৃতিত্ব দিতে পারে ইংল্যান্ড। তৃতীয় দিন শেষ বেলায় ১৯ ওভার ব্যাটিং করতেই যে হারিয়ে ফেলেছে ৩ উইকেট।

ডম সিবলিকে এলবিডব্লিউ করে দ্রুত শুরুর জুটি ভাঙেন প্যাটেল। ৭ রানে একবার জীবন পেয়েও ২৫ রানে অশ্বিনের বলে ফিরেন আরেক ওপেনার ররি বার্নস।

তার বিদায়ের পর নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা জ্যাক লিচকে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ দেন প্যাটেল। দিনের বাকি সময় কাটিয়ে দেওয়া লরেন্স ও রুটের সামনে পরদিন অপেক্ষা করছে আরও কঠিন লড়াই।   

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত ১ম ইনিংস: ৩২৯

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১৩৪

ভারত ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৫৪/১) ৮৫.৫ ওভারে ২৮৬ (রোহিত ২৬, পুজারা ৭, কোহলি ৬২, পান্ত ৮, রাহানে ১০, প্যাটেল ৭, অশ্বিন ১০৬, কুলদিপ ৩, ইশান্ত ৭, সিরাজ ১৬*; স্টোন ৬.৫-১-২১-১, লিচ ৩৩-৬-১০০-৪, মইন ৩২-৭-৯৮-৪, রুট ৪-০-১৫-০, ব্রড ৯-৩-২৫-০, লরেন্স ১-০-৭-০)।

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪৮২) ১৯ ওভারে ৫৩/৩ (বার্নস ২৫, সিবলি ৩, লরেন্স ১৯*, লিচ ০, রুট ২*; ইশান্ত ২-১-৬-০, প্যাটেল ৯-৩-১৫-২, অশ্বিন ৮-১-২৮-১)