মিলার ঝড় ছাপিয়ে নায়ক হাসান

বিস্ফোরক এক ইনিংসে দলকে পথ দেখালেন ডেভিড মিলার। কিন্তু তবুও পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা। বোলিংয়ে ভালো করার পর ব্যাটিংয়েও অবদান রাখলেন হাসান আলি। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে জিতে সিরিজ ঘরে তুলল পাকিস্তান।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2021, 05:02 PM
Updated : 14 Feb 2021, 07:08 PM

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে রোববার ৪ উইকেটে জিতেছে পাকিস্তান। ১৬৫ রানের লক্ষ্য ৮ বল বাকি থাকতেই ছুঁয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। সঙ্গে ২-১ ব্যবধানে জেতে ৩ ম্যাচের সিরিজ।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে একাই লড়াই করেন মিলার। ৪৫ বলে ৭ ছক্কা ও ৫ চারে অপরাজিত থাকেন ৮৫ রানে। টি-টোয়েন্টিতে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের এটি তৃতীয় ফিফটি।

রান তাড়ায় শেষ দিকে চাপে পড়ে যাওয়া পাকিস্তানকে টানেন হাসান। ৭ বলে দুই ছক্কা ও এক চারে ২০ রানের ইনিংসে দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। বল হাতে এই পেসারের প্রাপ্তি ২৯ রানে ২ উইকেট।

আগের দুই ম্যাচের মতো এবারও টস জেতা দল নেয় ফিল্ডিং। শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে রিজা হেনড্রিকসকে বোল্ড করা মোহাম্মদ নওয়াজ পরের ওভারে ফেরান জন-জন স্মাটসকে। হাসানকে পরপর তিনটি বাউন্ডারি মেরে পরের বলে এই পেসারের দারুণ এক স্লোয়ারে বোল্ড হয়ে যান পিট ফন বিলিয়োন।

অভিষিক্ত জাহিদ মাহমুদ পরপর দুই বলে ফেরান হাইনরিখ ক্লাসেনকে ও ইয়ানেমান মালানকে। ওই ওভারেই রিভিউ নিয়ে এলবিডব্লিউ থেকে বাঁচেন আন্দিলে ফেলুকওয়ায়ো।

কিন্তু তাতে লাভ হয়নি খুব একটা। পরের ওভারেই উসমান কাদিরের বলে বিদায় নেন তিনি। জাহিদ ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসকে ফেরানোর পর বিয়ন ফোরটানকে বোল্ড করেন হাসান।

সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝেও আগ্রাসী ছিলেন মিলার। ফিফটি করেন তিনি ৩১ বলে। ইনিংসের শেষ ওভারে ফাহিম আশরাফকে মারেন চারটি ছক্কা।

রিজওয়ানের ব্যাটে দারুণ সূচনা পায় পাকিস্তান। সঙ্গ দেন হায়দার আলি। তাদের দুইজনের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৫১ রান।

নিজের প্রথম বলেই হায়দারকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে স্বস্তিতে এনে দেন তাবরাইজ শামসি। পরে তিনি ফেরান দারুণ ছন্দে থাকা রিজওয়ানকেও।

পরপর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ফিফটি করা কিপার-ব্যাটসম্যান এদিনও খেলছিলেন আস্থার সঙ্গে। তাকে এলবিডব্লিউ করে থামান শামসি। রিজওয়ানের ৩০ বলে ৪২ রানের ইনিংসে ছক্কা দুটি ও চার পাঁচটি।

হুসাইন তালাত ও আসিফ আলিকে দ্রুত ফেরান শামসি। ২৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সফরকারীদের সেরা বোলার তিনি।

প্রিটোরিয়াসের বলে বোল্ড হয়ে থামেন বাবর। পাকিস্তান অধিনায়কের ৩০ বলে খেলা ৪৪ রানের ইনিংসে ৫ চার ও এক ছক্কা। ফাহিম ফেরার সময় ৩ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ২৮ রান। ১০ বলেই সেই রান তুলে ফেলেন হাসান ও নওয়াজ।

তিন ম্যাচে ১৯৭ রান করা রিজওয়ান জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৬৪/৮ (মালান ২৭, হেনড্রিকস ২, স্মাটস ১, ফন বিলিয়োন ১৬, ক্লাসেন ০, মিলার ৮৫*, ফেলুকওয়ায়ো ০, প্রিটোরিয়াস ৯, ফোরটান ১০, সিপামলা ৮*; আফ্রিদি ৪-০-২৮-০, নওয়াজ ২-০-১৩-২, ফাহিম ৩-০-৩৮-০, হাসান ৪-০-২৯-২, জাহিদ ৪-০-৪০-৩, উসমান ৩-০-১২-১)।

পাকিস্তান: ১৮.৪ ওভারে ১৬৯/৬ (রিজওয়ান ৪২, হায়দার ১৫, বাবর ৪৪, তালাত ৫, আসিফ ৭, ফাহিম ১০, নওয়াজ ১৮*, হাসান ২০*; ফোরটান ৪-০-৩০-১, প্রিটোরিয়াস ৩-০-৩৩-১, স্মাটস ৩-০-২০-০, ফেলুকওয়ায়ো ২.৪-০-৩৭-০, সিপামলা ২-০-২৩-০, শামসি ৪-০-২৫-৪)।

ফল: পাকিস্তান ৪ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জয়ী পাকিস্তান

ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ নওয়াজ

ম্যান অব দা সিরিজ: মোহাম্মদ রিজওয়ান।