মিরপুর টেস্টের চতুর্থ দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট ১১৭ রানে। প্রথম ইনিংসের ১১৩ রান মিলিয়ে তাদের মোট লিড ২৩০।
রোববার লাঞ্চের পর ১৩ রানের মধ্যে হারায় তারা শেষ ৪ উইকেট।
তৃতীয় দিন বিকেল থেকেই দারুণ স্পিন সহায়ক হয়ে ওঠা উইকেটে ২৩১ রান তাড়া সহজ হওয়ার কথা নয় বাংলাদেশের জন্য। জিতলে হলে গড়তে হবে নিজেদের রেকর্ড।
রান তাড়ায় বাংলাদেশের আগের রেকর্ড ২০০৯ সালে, খবর্শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২১৫ রান তাড়ায় জয়।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে একশর বেশি রান তাড়ায় একবারই জিতেছে বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে টার্নিং উইকেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০১ রান তাড়ায়ই হারাতে হয়েছিল ৭ উইকেট।
সিরিজ ড্র করার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে চতুর্থ দিনে বোলিংয়ে দারুণ কিছুর বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের সামনে। দলের চাওয়া ভালোই পূরণ করেন বোলাররা।
আগের দিন বোলিং না পাওয়া আবু জায়েদকে দিয়ে নতুন দিনের আক্রমণ শুরু করে বাংলাদেশ। মন্থর উইকেটেও দলকে দুটি উইকেট এনে দেন এই পেসার।
দিনের প্রথম ওভারে যদিও শুরু করেন ৭ রান দিয়ে। তবে দ্রুতই তিনি গুছিয়ে নেন নিজেকে। দলের প্রথম লক্ষ্য পূরণ করে দেন তিনি নাইটওয়াচম্যাচ জোমেল ওয়ারিক্যানকে ফিরিয়ে দিয়ে।
গত টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান কাইল মেয়ার্স শুরু করেন প্রথম বলেই বাউন্ডারিতে। তাকেও ওই ওভারে থামাতে পারত বাংলাদেশ। আবু জায়েদের বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে কিপারের গ্লাভসে। কিন্তু আউট দেননি আম্পায়ার, রিভিউ নেয়নি বাংলাদেশ।
এই ভুলের জন্য অবশ্য ভুগতে হয়নি বাংলাদেশকে। দারুণ এক ডেলিভারিতে মেয়ার্সকে ৬ রানে এলবিডব্লিউ করে দেন সেই আবু জায়েদই।
প্রথম ঘণ্টায় আবু জায়েদের জোড়া ছোবলের পর দ্বিতীয় ঘণ্টার শুরুটাও বাংলাদেশের হয় দারুণ। তাইজুল ফেরান বিপজ্জনক জার্মেইন ব্ল্যাকউডকে।
উইকেটে যাওয়ার পরপরই আবু জায়েদের বলে দারুণ এক লফটেড ড্রাইভে ছক্কা মারেন ব্ল্যাকউড। পরে তাইজুলের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে তার পা ক্রিজ থেকে বাইরে বেরোয় সামান্য। দুর্দান্ত ক্ষীপ্রতায় বেলস উড়িয়ে দেন কিপার লিটন।
এনক্রুমা বনার ও জশুয়া দা সিলভা লাঞ্চের আগে আর উইকেট হারাতে দেননি দলকে। চতুর্থ দিনের ক্ষয় হতে থাকা উইকেটে টার্ন মিলেছে যথেষ্টই। দারুণ টেকনিক, স্কিল ও টেম্পারমেন্টের ছাপ রেখে চ্যালেঞ্জ সামাল দেন গোটা সিরিজে দারুণ পারফর্ম করা বনার ও জশুয়া।
লাঞ্চের পর আর পারেননি তারা। জশুয়াকে ২০ রানে থামান তাইজুল। আলজারি জোসেফ গিয়ে বিশাল এক ছক্কা মারেন নাঈম হাসানকে। পরের ওভারে জোসেফকেও থামিয়ে দেন তাইজুল।
নাঈম এরপর এক ওভারেই নিয়ে নেন শেষ দুই উইকেট। পুরো সিরিজে অসাধারণ টেম্পারমেনটের প্রমাণ রাখা বনার আচমকাই হয়ে ওঠেন আত্মঘাতী। নাঈমকে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন দুই পায়ের ফাঁক গলে। ৩ ঘণ্টার বেশি খেলে ৩৮ রানে শেষ হয় তার প্রতিরোধ।
ওই ওভারেই মুশফিকুর রহিমের দারুণ এক রানিং ক্যাচে কর্নওয়ালের বিদায়ে শেষ হয় ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস।
প্রথম ইনিংসের ৪টির সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসেও তাইজুলের শিকার ৪ উইকেট। সিরিজ জুড়ে সুবিধা করতে না পারলেও এই ইনিংসে ৩ উইকেট নিয়ে শেষ করেন নাঈম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪০৯
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৯৬
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৪১/৩) ৫২.৫ ওভারে ১১৭ (বনার ৩৮, ওয়ারিক্যান ২, মেয়ার্স ৬, ব্ল্যাকউড ৯, জশুয়া ২০, জোসেফ ৯, কর্নওয়াল , গ্যাব্রিয়েল ; তাইজুল ২১-৪-৩৬-৪, নাঈম ১৫.৫-৫-৩৪-৩, মিরাজ ৬-১-১৫-১, আবু জায়েদ ১০-৪-৩২-২)