মিরাজের তিন ছোবলের পর ক্যারিবিয়ানদের লড়াই

উইকেটে উড়ছে ধুলো। বাউন্স অসমান। কিছু বল নিচু হচ্ছে বিপজ্জনকভাবে। টার্ন তো আছেই। এমন পিচে প্রায় চারশ রান তাড়া করা বা চার সেশনের বেশি টিকে থাকা যেন অসম্ভবের পায়ে মাথা কুটে মরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তবু হাল ছাড়ছে না। মেহেদী হাসান মিরাজের তিন শিকারে টপ অর্ডার ভেঙে পড়লেও ক্যারিবিয়ানরা লড়াই টেনে নিয়েছে শেষ দিনে।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনি চট্টগ্রাম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2021, 11:30 AM
Updated : 6 Feb 2021, 04:05 PM

বাংলাদেশ অবশ্য এখনও ফেভারিট পরিস্কারভাবেই। জয়ের জন্য শেষ দিনে প্রয়োজন ৭ উইকেট। ২২ গজের সম্ভাব্য আচরণ আর পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় তিন সেশন যথেষ্টই হওয়ার কথা উইকেটগুলো নিতে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের জিততে লাগবে ২৮৫ রান। তবে এই সমীকরণে ক্যারিবিয়ানদের তাকানোর বাস্তবতা নেই। ৯০ ওভার টিকে থাকার দুরূহ অভিযানে নামবে তারা। চতুর্থ দিন শেষে তাদের রান ৩ উইকেটে ১১০।

মুমিনুল হকের ১১৫ ও লিটন দাসের ৬৯ রানের ইনিংসে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেন ৮ উইকেটে ২২৩ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৯৫।

কঠিন চ্যালেঞ্জে নেমে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেলের শুরুটা খারাপ ছিল না। ১৬ ওভার তারা কাটিয়ে দেন নিরাপদেই।

তবে সময়ের সঙ্গে একটু অসহিষ্ণু হয়ে ওঠেন ক্যাম্পবেল। একের পর এক সুইপ খেলতে থাকেন। তাতে রান কিছু মেলে বটে, তবে বিপদও ঘটে যায়। মিরাজের বলে সুইপ করতে গিয়েই ২৩ রানে উইকেট হারান বাঁহাতি এই ওপেনার।

একটু পর দলকে আরও বড় এক উইকেট এনে দেন মিরাজ। ফিরিয়ে দেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েটকে (২০)। ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে আগের দিন বেশ কিছু সুযোগ হারালেও এবার দারুণ ক্যাচ নেন ইয়াসির আলি চৌধুরি। বাঁ দিকে ঝাপিয়ে একহাতে তালুবন্দি করেন বল।

তিনে নামা শেন মোজলি শুরু থেকেই ছিলেন নড়বড়ে। আউটও হন সেভাবেই। মিরাজের বলটি যদিও নিচু হয়েছিল অনেক। কিন্তু সামনে খেলার বল বাঁহাতি মোজলি খেলতে যান পেছনের পায়ে, শটও ছিল বাজে।

কাইল মেয়ার্স ও এনক্রুমা বনারের জুটিতে লড়ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

৫৯ রানে তখন নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩ উইকেট। দিনের খেলা বাকি ১৬ ওভারের মতো। আরও কিছু উইকেটের পতন অপ্রত্যাশিত ছিল না। তবে এনক্রুমা বনার ও কাইল মেয়ার্স নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন সময়টুকু। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ৫১।

অফ স্পিনার নাঈম হাসানের আলগা বোলিংয়ের সুযোগে কিছু বাউন্ডারি আদায় করে নেন মেয়ার্স। একটু সুযোগও দিয়েছিলেন তিনিই। মিরাজের বলে কঠিন সেই ক্যাচ নিতে পারেননি মুস্তাফিজুর রহমান।

দিন শেষে মেয়ার্স অপরাজিত ৭ চারে ৩৭ রান করে, বনার ১৫। দুজনের অপেক্ষায় আরও কঠিন পরীক্ষা শেষ দিনে।

ঊরুর চোটের কারণে এ দিনও ব্যাটিং-বোলিং কিছুই করতে পারেননি সাকিব আল হাসান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৩০

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ২৫৯

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৪৭/৩) ৬৭.৫ ওভারে ২২৩/৮ (ডি.)  (মুমিনুল ১১৫, মুশফিক ১৮, লিটন ৬৯, মিরাজ ৭, তাইজুল ৩, নাঈম ১*; রোচ ৭-১-১৭-০, কর্নওয়াল ২৭-২-৮১-৩, গ্যাব্রিয়েল ১২-০-৩৭-২, ওয়ারিক্যান ১৭.৫-০-৫৭-৩, বনার ২-০-১৩-০, ব্র্যাথওয়েট ১-০-৭-০, মেয়ার্স ১-০-১১-০)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৯৫) ৪০ ওভারে ১১০/৩ (ব্র্যাথওয়েট ২০, ক্যাম্পবেল ২০, মোজলি ১২, বনার ১৫*, মেয়ার্স ৩৭*; মুস্তাফিজ ৪-১-১৪-০, তাইজুল ১৩-৮-১২-০, মিরাজ ১৬-২-৫২-৩, নাঈম ৭-১-২৯-০)।