আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে রোববার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানিস্তান জিতেছে ৭ উইকেটে। স্টার্লিংয়ের চমৎকার ইনিংসে আইরিশরা ৯ উইকেটে করে ২৫৯ রান। রহমতের অপরাজিত সেঞ্চুরি ও শাহিদির ফিফটিতে আফগানরা লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ২৮ বল বাকি থাকতে।
তৃতীয় উইকেটে আফগানিস্তানের রেকর্ড ১৮৪ রানের জুটি উপহার দেন রহমত ও শাহিদি। যে কোনো উইকেটেই দলটির এর চেয়ে বড় জুটি আছে দুটি। তৃতীয় উইকেটে আগের রেকর্ডও ছিল রহমত-শাহিদি জুটির, ২০১৬ সালে মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৪৪।
প্রথম ম্যাচ ১৬ রানে জিতে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে পয়েন্টের খাতা খোলা আফগানিস্তান পেল আরও ১০ পয়েন্ট। আগামী মঙ্গলবার একই মাঠে আয়ারল্যান্ডের সামনে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর চ্যালেঞ্জ।
লক্ষ্য তাড়ায় ৪৪ রানের উদ্বোধনী জুটিতে আফগানিস্তানকে ভালো সূচনা এনে দেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও জাভেদ আহমাদি। তবে পাঁচ বলের মধ্যে ফেরেন দুজনই।
আহমাদিকে এলবিডব্লিউ করে জুটি ভাঙেন ব্যারি ম্যাককার্থি। কার্টিস ক্যাম্পারের বলে এলবিডব্লিউ হন গুরবাজ। আগের ম্যাচে অভিষেকে রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি করা এই কিপার-ব্যাটসম্যান এবার ২৬ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৩১।
এরপরই রহমত-শাহিদির ওই জুটি। প্রথম ম্যাচে দুই অঙ্কে যেতে ব্যর্থ রহমত এবার ফিফটি পূর্ণ করেন ৪৯ বলে। সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া হাশমতউল্লাহ পঞ্চাশে পা রাখেন ৬৮ বলে। জয় থেকে ২৮ রান দূরে থাকতে শেষ হয় তার ৮২ রানের ইনিংস। ১০০ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায় ইনিংসটি সাজান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
পরের ওভারেই ম্যাককার্থিকে চার হাঁকিয়ে রহমত তার পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নেন ১০৩ বলে। শেষ পর্যন্ত ১০৯ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ১০৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। অধিনায়ক আসগর আফগান ১৩ বলে ২ ছক্কা ও একটি চারে করেন ২১।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আয়ারল্যান্ডের শুরুটা ভালো হয়নি। ইনিংসের দ্বিতীয় আর মুজিবের প্রথম ওভারে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কেভিন ও’ব্রায়েন। আফগান অফ স্পিনার নিজের পরের ওভারে এলবিডব্লিউ করেন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নিকে। দুই অঙ্কে যেতে পারেননি কেউই।
২০ রানে ২ উইকেট হারানোর ধাক্কা সামাল দেয় তারা স্টার্লিং ও হ্যারি টেক্টরের পঞ্চাশোর্ধ জুটিতে। টেক্টরকে ফিরিয়ে ৮৪ রানের জুটি ভাঙেন নাভিন। এরপরই ম্যাচে নিজেদের সেরা জুটিটা পায় আয়ারল্যান্ড।
পল স্টার্লিংয়ের সেঞ্চুরি উদযাপন। ছবি: ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড
৫২ বলে ৪টি চারে ৪৭ রান করা ক্যাম্পারকে ফিরিয়ে ইনিংসে নিজের একমাত্র উইকেটটি নেন রশিদ খান। স্টার্লিংকে থামান নাভিন। ১৩২ বলে আইরিশ ওপেনারের ১২৮ রানের ইনিংস সাজানো ১২ চার ও ৪ ছক্কায়। শেষ দিকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় বড় হয়নি আইরিশদের সংগ্রহ।
নিজের কোটার শেষ দুই বলে দুটিসহ ৪২ রানে ৪ উইকেট নেন নাভিন। ৪৬ রানে ৩ উইকেট অফ স্পিনার মুজিবের। তবে অপরাজিত সেঞ্চুরি করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন রহমত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আয়ারল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৫৯/৯ (স্টার্লিং ১২৮, ও’ব্রায়েন ১, বালবির্নি ৫, টেক্টর ২৪, ক্যাম্পার ৪৭, টাকার ১৭, ডেলানি ১২*, সিমি ১৩, ম্যাকব্রাইন ০, ম্যাককার্থি ০, ইয়াং ০*; নাভিন ১০-০-৪২-৪, মুজিব ১০-০-৪৬-৩, নাইব ৯-০-৬৪-১, নবি ১০-০-৪৩-০, আহমাদি ১-০-৯-০, রশিদ ১০-১-৪৯-১)
আফগানিস্তান: ৪৫.২ ওভারে ২৬০/৩ (গুরবাজ ৩১, আহমাদি ১৬, রহমত ১০৩*, হাশমতউল্লাহ ৮২, আসগর ২১* ইয়াং ৮-১-৪৫-০, সিমি ৮.২-০-৪৪-১, ম্যাককার্থি ৭-০-৫৯-১, ক্যাম্পার ৪-০-২৮-১, ম্যাকব্রাইন ১০-০-৪৮-০, ও’ব্রায়েন ৩-০-১৩-০, ডেনালি ৫-০-২২-০)।
ফল: আফগানিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে আফগানিস্তান ২-০ তে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: রহমত শাহ।