বোলারদের দাপটে জিতল বাংলাদেশ

ফেরার ম্যাচ রাঙিয়ে রাখলেন সাকিব আল হাসান। দারুণ বোলিংয়ে নিলেন ৪ উইকেট। অভিষেকে ৩ উইকেট পেলেন হাসান মাহমুদ। বোলারদের দাপটে ছোট লক্ষ্য পেল বাংলাদেশ। ছোট পুঁজি নিয়েও দারুণ লড়াই করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে প্রত্যাশিত জয় দিয়েই সিরিজি শুরু করল তামিম ইকবালের দল।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2021, 04:55 AM
Updated : 20 Jan 2021, 11:55 AM

ফেরার ম্যাচে ৬ উইকেটের জয়

প্রতিপক্ষকে মাত্র ১২২ রানে থামিয়ে মূল কাজটা সেরে রেখেছিলেন বোলাররা। এরপরও জয় এলো না সহজে। হারাতে হলো প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে, খেলতে হলো ৩৩.৫ ওভার।

মহামারীকালে ১০ মাস খেলার বাইরে ছিল বাংলাদেশ। ফেরার ম্যাচে জিতল ৬ উইকেটে। আইসিসি ওয়ানডে লিগে করল শুভসূচনা।  

স্বাগতিকদের বোলিং যতটা ভালো হয়েছে, ব্যাটিং ততটাই বিবর্ণ। ছোট লক্ষ্য ছিল, তাই সমস্যা হয়নি। খর্ব শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাদের এমন ব্যাটিংয়ে ভাবনার যথেষ্ট খোরাক আছে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩২.২ ওভারে ১২২ (আমব্রিস ৭, যশুয়া ৯, ম্যাককার্থি ১২, মোহাম্মেদ ১৭, মেয়ার্স ৪০, বনার ০, পাওয়েল ২৮, রিফার ০, জোসেফ ৪, আকিল ১, হোল্ডার ০*; রুবেল ৬-০-৩৪-০, মুস্তাফিজ ৬-০-২০-২, হাসান ৬-১-২৮-৩, সাকিব ৭.২-২-৮-৪, মিরাজ ৭-১-২৯-১)

বাংলাদেশ: ৩৩.৫ ওভারে ১২৫/৪ (লিটন ১৪, তামিম ৪৪, শান্ত ১, সাকিব ১৯, মুশফিক ১৯*, মাহমুদউল্লাহ ৯*; জোসেফ ৮-৩-১৭-০, হোল্ডার ৩-০-২৬-০, আকিল ১০-১-২৬-৩, মোহাম্মেদ ৮-০-১৯-১, ম্যাককার্থি ২-০-১০-০, বনার ২.৫-০-১৫-০)

ফল: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: সাকিব আল হাসান

ফিরে গেলেন সাকিবও

নিজের শেষ বলেও উইকেট পেলেন আকিল হোসেইন। বোল্ড করে ফেরালেন সাকিব আল হাসানকে।

শরীরের খুব কাছের বল কাট করতে চেয়েছিলেন সাকিব। ঠিক মতো পারেননি, ব্যাটের কানায় লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে। আকিল পান নিজের তৃতীয় উইকেট।

৪৩ বলে ১ চারে ১৯ রান করেন সাকিব। ২৮ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১০৫/৪। ক্রিজে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ।

তামিমের প্রতিরোধ ভাঙলেন মোহাম্মেদ

বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবালকে ফিরিয়ে দিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন মোহাম্মেদ।

অফ স্পিনারকে পা বাড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন তামিম। ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরও কিছুটা এগিয়ে যান, আর ফিরতে পারেননি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেলস ফেলে দেন ক্যারিবিয়ান কিপার।

৬৯ রানে ৭ চারে ৪৪ রান করেন তামিম। ২৩ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৮৪/৩। ক্রিজে সাকিব আল হাসানের সঙ্গী মুশফিকুর রহিম।

তিনে টিকলেন না শান্ত

নামার পর থেকে ভুগছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আকিল হোসেইনকে কীভাবে সামলাবেন তা যেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত বাঁহাতি স্পিনারের বলেই ফিরলেন সহজ ক্যাচ দিয়ে।

দুই দিকেই স্পিন করাতে পারা আকিল ভোগাচ্ছেন বেশ। অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে ভেতরে ঢোকা বল লেগে খেলতে চেয়েছিলেন শান্ত। ঠিক মতো পারেননি, মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ মুঠোয় জমান জেসন মোহাম্মেদ।

৯ বলে ১ রান করেন শান্ত। ১৬ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৫৭/২। তামিম ইকবাল খেলছেন ২৭ রানে।

দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড লিটন

চমৎকার বোলিংয়ের পুরস্কার পেলেন আকিল হোসেইন। দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দিলেন লিটন দাসকে।

মিডল স্টাম্পে পড়া গুড লেংথের লাইন পড়তে পারেননি লিটন। বাঁহাতি স্পিনারের বল তার প্রত্যাশার বেশি টার্ন করে আঘাত হানে অফ স্টাম্পের মাথায়। ভাঙে ৪৭ রানের জুটি।

১৪ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৪৮/১। ক্রিজে তামিম ইকবালের সঙ্গী নাজমুল হোসেন শান্ত।

পাওয়ার প্লেতে অবিচ্ছিন্ন ওপেনিং জুটি

দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। তাদের দৃঢ়তায় পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ।

১০ ওভারে স্বাগতিকদের স্কোর ৩৯/০। তামিম ৩৬ বলে ২১ রানে ব্যাট করছেন। লিটন ২৬ বলে খেলছেন ১১ রানে।

স্কোরবোর্ডে নেই রানের চাপ। তেড়েফুড়ে খেলার চেষ্টা নেই দুই ব্যাটসম্যানের কারোর মাঝে। এক-দুই নিয়ে সচল রাখছেন রানের চাকা। বাজে বলে তুলে নিচ্ছেন বাউন্ডারি। তামিমের ব্যাট থেকে এসেছে চারটি, লিটনের ব্যাট থেকে দুটি।

বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী শুরু

ছোট রান তাড়ায় আত্মবিশ্বাসী শুরু করেছে বাংলাদেশ। ৫ ওভারে কোনো উইকেট নাহারিয়ে তুলেছে ২৩ রান।

তিন চারে ১৫ রান নিয়ে খেলছেন তামিম ইকবাল। ১১ বলে এক চারে লিটনের রান ৬। নিখুঁত লাইন-লেংথে বোলিং করা আলজারি জোসেফের ব্যাপারে সাবধানী দুই ব্যাটসম্যান। কাজে লাগাচ্ছ্নে শামার হোল্ডারের এলোমেলো বোলিং।

সাকিবের চারে শেষ উইন্ডিজ

বোলিংয়ে ফিরে আঘাত হানলেন সাকিব আল হাসান। বাঁহাতি স্পিনারকে ডিফেন্ড করার চেষ্টা করেও পারেননি আলজারি জোসেফ। স্টাম্প এলোমেলো করে দেয় বল। ১২২ রানেই শেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের বিপক্ষে সফরকারীদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন।   

৭ বলে ৪ রান করেন জোসেফ। ৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফলতম বোলার সাকিব। অভিষিক্ত পেসার হাসান ২৮ রানে নেন ৩ উইকেট। শুরুতে সুর বেঁধে দেওয়া মুস্তাফিজুর রহমান ২ উইকেট নেন ২০ রানে।

ক্যারিবিয়ানদের কেবল একটি জুটি ছাড়াতে পেরেছে ৫০। রভম্যান পাওয়েল ও কাইল মেয়ার্সের সেই জুটি ভাঙার পর বেশি দূর যেতে পারেনি দলটি। শেষ ৫ উইকেট হারায় কেবল ৭ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩২.২ ওভারে ১২২ (আমব্রিস ৭, যশুয়া ৯, ম্যাককার্থি ১২, মোহাম্মেদ ১৭, মেয়ার্স ৪০, বনার ০, পাওয়েল ২৮, রিফার ০, জোসেফ ৪, আকিল ১, হোল্ডার ০*; রুবেল ৬-০-৩৪-০, মুস্তাফিজ ৬-০-২০-২, হাসান ৬-১-২৮-৩, সাকিব ৭.২-২-৮-৪, মিরাজ ৭-১-২৯-১) 

হাসানের তিনে শেষের কাছে উইন্ডিজ

আগের ওভারে জোড়া উইকেট নেওয়া হাসান মাহমুদ আঘাত হানলেন আবারও। তরুণ এই পেসার ফিরিয়ে দিলেন আকিল হোসেইনকে।

অফ স্টাম্পের বাইরের বল ঠিকমতো খেলতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে স্লিপে জমা পড়ে লিটনের হাতে।

৪ বলে ১ রান করেন আকিল। ক্রিজে আলজারি জোসেফের সঙ্গী শামার হোল্ডার। ৩২ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১২২/৯।

মেয়ার্সের প্রতিরোধ ভাঙলেন মিরাজ

অভিষেকে দলকে টানছিলেন কাইল মেয়ার্স। বাজে বল পেলেই খেলছিলেন শট। রভম্যান পাওয়েলের বিদায়ের পর তার দিকেই তাকিয়ে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাঁ হাতি ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে উইকেটের দেখা পেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

অফ স্পিনারকে পা বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন মেয়ার্স। সহজেই বল মুঠোয় জমান লিটন দাস।

৫৬ বলে এক ছক্কা ও চারটি চারে ৪০ রান করেন মেয়ার্স।

৩১ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১২২/৮। ক্রিজে আলজারি জোসেফের সঙ্গী আকিল হোসেইন।

হাসানের জোড়া আঘাত

রভম্যান পাওয়েলকে ফিরিয়ে দ্রুত এগোনো জুটি ভাঙার পর রেমন রিফারকে ফিরিয়ে দিলেন হাসান মাহমুদ। টানা দুই বলে উইকেট পাওয়া তরুণ এই পেসারের হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেন আলজারি জোসেফ।

ক্রিজে গিয়েই শট খেলতে শুরু করেছিলেন পাওয়েল। তার সঙ্গে দ্রুত জমে যায় কাইল মেয়ার্সের জুটি। তাদের বিচ্ছিন্ন করতে একের পর এক বোলার বদলে যাচ্ছিলেন তামিম ইকবাল।

শেষ পর্যন্ত সাফল্য এনে দেন হাসান। তার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে ধরা পড়েন পাওয়েল। ভাঙে ৬৩ বল স্থায়ী ৫৯ রানের জুটি।

৩১ বলে দুটি করে ছক্কা ও চারে ২৮ রান করেন পাওয়েল।

পরের বলেই রেমন রিফারকে এলবিডব্লিউ করে দেন হাসান। পারে দেখা গেছে বল স্টাম্পের উপর দিয়ে যেত কিন্তু ক্যারিবিয়ানদের ছিল না কোনো রিভিউ। হতাশায় মাঠ ছাড়েন রিফার। 

৩০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১১৯/৭। ক্রিজে কাইল মেয়ার্সের সঙ্গী জোসেফ।

মেয়ার্স-পাওয়েল জুটিতে পঞ্চাশ

মেহেদী হাসান মিরাজকে রভম্যান পাওয়েল চার-ছক্কা হাঁকানোর পর থেকে দ্রুত গতিতে রান তুলছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মন্থর শুরুর পর শট খেলতে শুরু করেছেন কাইল মেয়ার্সও। দুই জনের ব্যাটে সফরকারীরা পেয়েছে প্রথম পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি।

হাসান মাহমুদকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৫১ বলে জুটির রান পঞ্চাশে নিয়ে যান মেয়ার্স। পরের বলে মারেন আরেকটি চার।

২৮ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১১৪/৫। ৪৮ বলে ৩৮ রানে ব্যাট করছেন মেয়ার্স। পাওয়েল খেলছেন ২৮ বলে ২৭ রান নিয়ে।

উইন্ডিজের একশ

দ্রুত ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রতিরোধ গড়েছে কাইল মেয়ার্স ও রভম্যান পাওয়েলের ব্যাটে। থমকে থাকা রানের গতিতেও দম দিয়েছেন এই দুই ব্যাটসম্যান।

চতুর্দশ ওভারে পঞ্চাশ ছোঁয়া ক্যারিবিয়ানদের রান তিন অঙ্কে গেছে ২৭তম ওভারে।

২৭ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১০৪/৫। মেয়ার্স ২৯ ও পাওয়েল ২৬ রানে ব্যাট করছেন।

সাকিবের তিন, শূন্যতে শেষ বনার

বল হাতে ফেরার ম্যাচ রাঙিয়ে রাখছেন সাকিব আল হাসান। শূন্য রানে এনক্রুমা বনারকে ফিরিয়ে নিয়েছেন তৃতীয় উইকেট।

অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা ফুল লেংথ বল ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন অভিষিক্ত বনার। ব্যাটের আগে প্যাড স্পর্শ করে বল। এলবিডব্লিউর জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে রিভিউ নেন বনার। তিনিও ফিরে যান রিভিউ নষ্ট করে। 

১৯ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৫৬/৫। ক্রিজে কাইল মেয়ার্সের সঙ্গী রভম্যান পাওয়েল।

অধিনায়ককে ফেরালেন সাকিব

এক ওভার পর আবার সাকিবের আঘাত। বাঁহাতি এই স্পিনার ফিরিয়ে দিলেন জেসন মোহাম্মেদকে। চমৎকার স্টাম্পিংয়ে বড় ভূমিকা আছে কিপার মুশফিকুর রহিমেরও।

সাকিবকে পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন মোহাম্মেদ। স্পিন করে বেরিয়ে যাওয়া বলের নাগাল পাননি, পেছনের পা বেরিয়ে আসে বাইরে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেলস ফেলে দেন মুশফিক। ফিরে যান ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক।

আড়াই বছর পর ওয়ানডেতে ফেরার ম্যাচে ৩৬ বলে ১৭ রান করেন মোহাম্মেদ। ১৭ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৫৬/৪। ক্রিজে কাইল মেয়ার্সের সঙ্গী এনক্রুমা বনার।

দেশের মাটিতে সাকিবের দেড়শ

এক সঙ্গে দুই উপলক্ষ; নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা, সঙ্গে দেশের মাটিতে শততম ওয়ানডে। নিজের প্রথম ওভারে একটুর জন্য মেলেনি উইকেট, পরেরটিতেই সাকিব আল হাসান পেলেন সাফল্য। বোল্ড করে দিলেন আন্দ্রে ম্যাককার্থিকে।

বাঁহাতি স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল সুইপ করতে চেয়েছিলেন ম্যাককার্থি। লাইনে যেতে পারেননি, স্টাম্পে আঘাত হানে বল।

৩৪ বলে ১ চারে ১২ রান করেন ম্যাককার্থি। ১৩ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৪৫/৩। ক্রিজে জেসন মোহাম্মেদের সঙ্গে সঙ্গী কাইল মেয়ার্স।

পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট

টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া বাংলাদেশ পাওয়ার প্লেতে বেঁধে রেখেছে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের। ফিরিয়ে দিয়েছে দুই ওপেনারকে।

১০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৩৮/২। আন্দ্রে ম্যাককার্থি ও জেসন মোহাম্মেদ দুই জনই ব্যাট করছেন ১০ রানে।

দুই ওপেনারকেই ফিরিয়ে দিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি এই পেসারের বলে এলবিডব্লিউ হন সুনিল আমব্রিস। গালিতে ধরা পড়েন জশুয়া ডি সিলভা।

প্রথম ওভারে ছক্কা হজম করা রুবেল হোসেন খুব একটা ভোগাতে পারেননি ব্যাটসম্যানদের। দশম ওভারে প্রথম বল হাতে পান অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ। ওয়ানডেতে নিজের প্রথম ওভারে তরুণ এই পেসার দেন ৪ রান।

লিটনের দুর্দান্ত ক্যাচ

পাশ দিয়ে বল বেরিয়ে যাচ্ছিল। গালিতে ডান দিক ঝাঁপিয়ে ক্যাচ মুঠোয় নিলেন লিটন দাস। মুস্তাফিজুর পেলেন রহমান জশুয়া ডি সিলভার উইকেট।

বাঁহাতি পেসারকে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন ডি সিলভা। ব্যাটের কানায় লেগে বল যাচ্ছিল থার্ড ম্যানে। এমন কিছুর জন্যই গালিতে ছিলেন লিটন। দারুণ দক্ষতায় কাজে লাগান কঠিন সুযোগ।

১৩ বলে ১ চারে ৯ রান করেন ডি সিলভা। ৬ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ২৫/২। দুটি উইকেটই নিয়েছেন মুস্তাফিজ। ক্রিজে আন্দ্রে ম্যাককার্থির সঙ্গী অধিনায়ক জেসন মোহাম্মেদ।

এক ঘণ্টা পর শুরু

বৃষ্টির বাধায় এক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়েছে খেলা। লম্বা এই বিরতিতে কমেনি ম্যাচের দৈর্ঘ্য।

আবার বৃষ্টি

বৃষ্টি থামার পর শুরু হয়েছিল মাঠ প্রস্তুতের কাজ। সরানো হয়েছিল কাভার। প্রস্তুতি চলছিল খেলা শুরুর। এমন সময়ে আবার নেমেছে বৃষ্টি।

বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ

সকাল থেকে আকাশ মেঘে ঢাকা। বৃষ্টির চোখ রাঙানির মধ্যেই শুরু হয়েছিল খেলা। চতুর্থ ওভারের মাঝপথে নেমেছে বৃষ্টি, বন্ধ হয়ে গেছে খেলা।

৩.৩ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১৫/১। জশুয়া ডি সিলভা ও আন্দ্রে ম্যাককার্থি দুই জনেই ৪ রানে ব্যাট করছেন।

শুরুতেই মুস্তাফিজের আঘাত

দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসেই আঘাত হেনেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। এলবিডব্লিউ করে বিদায় করেছেন সুনিল আমব্রিসকে।

আগের ওভারের শেষ বলে রুবেল হোসেনকে চমৎকার এক ছক্কা হাঁকান আমব্রিস। বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজের মিডল স্টাম্পে পড়া বল খেলতে চেয়েছিলেন লেগে। কিন্তু একটু ভেতরে ঢোকা বলের লাইন মিস করেন এই ওপেনার। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার, রিভিউয়েও পাল্টায়নি সিদ্ধান্ত।

২ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১০/১। ক্রিজে জশুয়া ডি সিলভার সঙ্গী আন্দ্রে ম্যাককার্থি।

বেলুন উড়িয়ে শুরু

১০ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সিরিজের উদ্বোধন ঘোষণা করলেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান। বেলুন উড়িয়ে হলো সূচনা।

আগেই বিসিবির প্রধান নির্বাহী জানিয়েছিলেন, ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাবেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। খেলা শুরুর আগে ক্যারিবিয়ানদের সঙ্গে সাকিব-তামিম-মুশফিকরাও হাঁটু গেড়ে একাত্মতা জানান।

বাংলাদেশ ১১১৫, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০৫

নিয়মিত খেলোয়াড়দের প্রায় কেউ নেই। কেউ এসেছেন লম্বা বিরতির পর, কারও এখনও অভিষেক হয়নি। ক্যারিবিয়ান দলটির মাত্র পাঁচ জনের আছে ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা। তারাও খুব বেশি ম্যাচ খেলেননি, সব মিলিয়ে কেবল ১০৫টি।

সাকিব আল হাসান একাই খেলেছেন তাদের প্রায় দ্বিগুণ ম্যাচ। প্রথম ওয়ানডের আগে বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের ম্যাচ ২০৬টি। বাংলাদেশ দলের সবাই মিলে খেলেছে ক্যারিবিয়ানদের ১০ গুণের বেশি ম্যাচ, সব মিলিয়ে ১১১৫টি।

হাসানের অভিষেক

অভিষেক হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে ভালো বোলিং করে যাওয়া তরুণ পেসার হাসান মাহমুদের। তিন পেসার নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ। অন্য দুই জন মুস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন। 

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা সাকিব আল হাসান ফিরছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে না খেলা সৌম্য সরকারও ফিরেছেন একাদশে। কোচের দেওয়া আভাস অনুযায়ী ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্তও। সাকিবের সঙ্গে দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

বাংলাদেশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে ৬ অভিষেক 

করোনাভাইরাস শঙ্কায় নিয়মিত খেলোয়াড়দের অনেকেই না আসায় ক্যারিবিয়ান দলে নতুন মুখের ছড়াছড়ি। প্রথম ওয়ানডেতে অভিষেক হচ্ছে ছয় জনের। 

জেসন মোহাম্মদ, সুনিল আমব্রিস, রভম্যান পাওয়েল, আলজারি জোসেফ ও র‌্যামন রিফারের কেবল ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। এই ম্যাচে খেলছেন তাদের সবাই।

গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবশেষ ওয়ানডে খেলা দলে এসেছে ৯টি পরিবর্তন। সেই ম্যাচে খেলা জোসেফ ও আমব্রিসই কেবল আছেন এই দলটিতে। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: জেসন মোহাম্মেদ, সুনিল আমব্রিস, জশুয়া ডি সিলভা, আন্দ্রে ম্যাকার্থি, এনক্রুমা বোনের, জামার হ্যামিল্টন, রভম্যান পাওয়েল, কাইল মেয়ার্স, শেমার হোল্ডার, আলজারি জোসেফ, রেমন রিফার।

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

নিয়মিত অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ওয়ানডেতে টস জিতলেন তামিম ইকবাল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ফিল্ডিং নিয়েছেন তিনি। টস হেরেও যেন চাওয়া পূরণ হয়েছে ক্যারিবিয়ানদের। অধিনায়ক জেসন মোহাম্মেদ জানান, আগে ব্যাটিং পেয়ে খুশি তারা।

গত মার্চের পর এই প্রথম ওয়ানডে খেলছে দল দুটি।

নিজস্ব ঘরানায় চোখ বাংলাদেশের

মহামারীকালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরছে বাংলাদেশে। তামিম ইকবাল-মুশফিকুর রহিমদের সঙ্গে সেই আঙিনায় নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সঙ্গী হচ্ছেন সাকিব আল হাসানও। লম্বা বিরতির পর শুরটা যেন হচ্ছে শূন্য থেকে।

মিরপুর শে-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার খেলা শুরু হবে সকাল সাড়ে ১১টায়। এই ম্যাচ দিয়ে আইসিসি ওয়ানডে লিগে অভিষেক হচ্ছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের।

নতুন শুরুর এই মঞ্চ থেকে নির্বাচকরা ২০২৩ বিশ্বকাপের দল গড়ার কাজও শুরু করতে চান। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো পরীক্ষা করে নিতে চান বিভিন্ন বিকল্প।

নিয়মিত অধিনায়ক হিসেবে পথচলা শুরু করতে যাচ্ছেন তামিম। তিনি প্রতিষ্ঠিত করতে চান নিজস্ব ঘরানা। কণ্ঠে তার বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব এড়ানোর প্রত্যয়।

তিন সংস্করণের মধ্যে ওয়ানডেতেই বেশি সফল বাংলাদেশ। এই সংস্করণে অলিগলি তাদের বেশ চেনা। নিজস্ব একটি ঘরানা তৈরি করা বেশি কঠিন হওয়ার কথা নয়।

তারুণ্যের ভরসায় নতুন চেহারার উইন্ডিজ

কেমার রোচ দেখছেন ২০০৯ সালের সিরিজের সঙ্গে মিল। সেবার বোর্ডের সঙ্গে ঝামেলায় বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল দলের প্রায় কেউই। এবার করোনাভাইরাসের শঙ্কায় প্রায় একই পরিস্থিতি।

বাংলাদেশ সফরে আসা তাদের ওয়ানডে দলের কেবল পাঁচ জনের আছে ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা। বাকিদের কেউ ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেননি দুইয়ের বেশি ম্যাচ। অভিজ্ঞতার ঘাটতি মানছেন জেসন হোল্ডারের অনুপস্থিতিতে এই সিরিজে সফরকারীদের নেতৃত্ব দিতে যাওয়া জেসন মোহাম্মেদ। তবে আস্থা রাখছেন তারুণ্যের সামর্থ্যে, “অবশ্যই আমাদের অনেকে প্রথমবার খেলতে নামবে। তবে নিজের ভেতর ও দলের মধ্যে যদি বিশ্বাস থাকে যে জিততে পারি, তাহলে অবশ্যই আমরা অনেক কিছু অর্জন করতে পারি।”