ব্রিজবেন জয়কে বর্ণনার ভাষা পাচ্ছেন না রাহানে

চোটের কারণে দলে ছিলেন না নিয়মিত ক্রিকেটারদের অনেকে। বোলিং আক্রমণ ছিল পুরোপুরি অনভিজ্ঞ। ভারতের সেই দলই চমক জাগানিয়া পারফরম্যান্সে ব্রিজবেন টেস্টে হারিয়ে দিয়েছে ঘরের মাঠে প্রবল প্রতাপশালী অস্ট্রেলিয়াকে। খুশিতে আত্মহারা ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে অবিশ্বাস্য এই জয়কে বর্ণনার ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2021, 03:28 PM
Updated : 19 Jan 2021, 03:28 PM

রোমাঞ্চ-উত্তেজনায় ভরা চতুর্থ টেস্টে মঙ্গলবার ভারত জিতেছে ৩ উইকেটে। ৩২৮ রানের লক্ষ্য তারা ছুঁয়ে ফেলে শেষ দিনের তিন ওভার বাকি থাকতে। গড়েছে ব্রিজবেনে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। আর জয়টি এসেছে এমন এক ভেন্যুতে, যেখানে গত ৩২ বছরে ৩১ টেস্টে হারেনি অস্ট্রেলিয়া। এমন অভাবনীয় কীর্তি গড়ার পর স্বাভাবিকভাবেই তাই উচ্ছ্বাসে ভাসছেন রাহানে।

“আমাদের কাছে এই জয়ের অর্থ অনেক। জানি না, কীভাবে এই জয়কে ব্যাখ্যা করব। দলের সব খেলোয়াড়, প্রতিটি ব্যক্তির জন্য আমি গর্বিত। আমরা ফলাফলের বিষয়ে চিন্তা না করে স্রেফ আমাদের সেরাটা উজাড় করে দিতে চেয়েছিলাম।”

জয়ের জন্য শেষ দিন ভারতের দরকার ছিল ৩২৪ রান। দিনের শুরুতে রোহিত শর্মার বিদায়ের পর দলকে পথ দেখায় শুভমান গিল ও চেতেশ্বর পুজারার ১১৪ রানের জুটি। চারে নেমে ২২ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলেন রাহানে। আপন ঢংয়ে পুজারা ২১১ বলে করেন ৫৬ রান। আর ১৩৮ বলে অপরাজিত ৮৯ রানের ইনিংসে জয় নিয়ে ফেরেন রিশাব পান্ত।

হাতে-গায়ে আঘাত সয়ে যেভাবে চাপ সামলে খেলেছেন পুজারা, তাতে মুগ্ধতার যেন শেষ নেই রাহানের। জানালেন, ব্যাটিংয়ে নেমে পুজারার সঙ্গে তার পরিকল্পনার কথাও। 

“ব্যাটিংয়ে নেমে পুজারার সঙ্গে কথা বলে ঠিক করেছিলাম পুজি ওর স্বাভাবিক ব্যাটিংটা করবে আর আমি শট খেলব। কারণ, আমরা জানতাম এরপর রিশাব আর মায়াঙ্ক (আগারওয়াল) আছে। পুজারাকে কৃতিত্ব দিতে হবে, যেভাবে সে চাপ সামলেছে, অসাধারণ। আর রিশাব দারুণভাবে শেষ করেছে।”

এই টেস্টে ভারত নেমেছিল পাঁচ বোলার নিয়ে। যেখানে অভিষেক হয় দুজনের। বাকি তিন জনের আগে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা ছিল সম্মিলিতভাবে চারটি। অনভিজ্ঞ সেই বোলাররাই তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়ার ২০ উইকেট। পাঁচ বোলার খেলানোর কারণ ব্যাখ্যা করলেন রাহানে।

“২০ উইকেট নেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল…সেজন্যই আমরা পাঁচ বোলার খেলিয়েছি। ওয়াশিংটন সুন্দর আসায় দলে ভারসাম্য তৈরি হয়। (মোহাম্মদ) সিরাজের দুই টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা ছিল, (নবদিপ) সাইনির একটি, (শার্দুল) ঠাকুর একটি ও (থাঙ্গারাসু) নটরাজনেরও অভিষেক ম্যাচ ছিল। সব কৃতিত্ব ওদের।”

ভারতের জন্য সিরিজটা শুরু হয়েছিল দুঃস্বপ্নের মতো। অ্যাডিলেইডে প্রথম টেস্টে তারা গুঁটিয়ে গিয়েছিল নিজেদের সর্বনিম্ন ৩৬ রানে। সেই টেস্টের পর ছুটিতে দেশে ফেরেন নিয়মিত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। টেস্ট যত গড়িয়েছে, লম্বা হয়েছে চোট পাওয়া খেলোয়াড়ের তালিকাও। রাহানে বললেন, অন্য কিছু না ভেবে তারা শুধু নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে চেয়েছেন।

“অ্যাডিলেইডে কী হয়েছিল, সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা করিনি। আমরা স্রেফ আমাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে চেয়েছিলাম। মাঠে মানসিক দৃঢ়তা, মনোভাব তুলে ধরতে চেয়েছিলাম।”