‘উদযাপন ও বিয়ের কারণে চোট’, জবাব দিলেন হাসান

কত ধরনের সমালোচনার মুখোমুখিই তো হতে হয় ক্রিকেটারদের। তবে হাসান আলির মতো অভিজ্ঞতা সম্ভবত কম জনেরই হয়। পাকিস্তানি এই পেসারের একের পর এক চোট আর ফর্মহীনতার পেছনে অনেকে দায় দিচ্ছিলেন তার উদযাপন ও বিয়ে করাকে! অদ্ভূত উদযাপনের কারণেই নাকি তিনি চোট বাধান, আর বিয়ে করে মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছেন ক্রিকেট থেকে। ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফর্ম করে জাতীয় দলে ফেরা পেসার উড়িয়ে দিলেন সেসব অভিযোগ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2021, 04:45 AM
Updated : 18 Jan 2021, 04:45 AM

দলের বাইরে থাকার হতাশার প্রহর কাটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের পাকিস্তান দলে সুযোগ পেয়েছেন হাসান। সবশেষ টেস্ট খেলেছেন তিনি দুই বছর আগে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সবশেষ খেলেছেন ২০১৯ বিশ্বকাপে।

অথচ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার পরপরই দারুণ সাড়া জাগিয়েছিলেন এই পেসার। সুইং বোলিং আর উইকেট শিকারের প্রবণতা দিয়ে হয়ে উঠেছিলেন দলের সেরা পেসার। আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরেও তুলে নিয়েছিলেন নিজেকে। পরে হারিয়ে ফেলেন ছন্দ। চোটও হানা দেয় টানা। এতে শুধু দল থেকেই বাদ পড়েননি, হারান বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিও।

অনেকেই তখন কাঠগড়ায় দাঁড় করান হাসানকে। উইকেট শিকারের পর তার যে উদযাপন, সেটিতে শরীরের ওপর ধকল যায় বেশ। চোটের উৎস নাকি লুকিয়ে সেখানেই। বিয়ের পর ক্রিকেটে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন, এমন কথাও ছড়াতে থাকে।

সম্প্রতি কায়েদ-ই-আজম ট্রফিতে ৪৩ উইকেট নিয়ে ও ফাইনালে সেঞ্চুরিসহ টুর্নামেন্টে ২৭৩ রান করে আবার জাতীয় দলে ফেরেন হাসান। পাকিস্তানের একটি ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ২৬ বছর বয়সী পেসার একহাত নিলেন তার বিরুদ্ধে সেই সব অভিযোগ তোলা লোকদের।

“ দুই ধরনের লোক আছে। কেউ দুঃসময়ে পাশে থাকে, কেউ সমালোচনার জন্যই স্রেফ সমালোচনা করে। ক্রিকেট পারফরম্যান্সের জন্য সমালোচনাকে আমি সবসময় স্বাগত জানাই, কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু বুঝি না, ব্যক্তিগত জীবনকে কেন সমালোচনার লক্ষ্য বানানো হয়। লোকে বলছিল, আমি নাকি বিয়ের কারণে চোটে পড়ছি, ক্রিকেটে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি। ওই লোকগুলোর কোনো ধারণাও নেই, ক্রিকেটারদের কতটা কঠিন সময়ের মধ্যে যেতে হয় এবং ক্যারিয়ারে কতটা ওঠা-নামা থাকে।”

ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকার হয়ে প্রবলভাবে আহত হয়েছিলেন বলেও জানান হাসান।

“ দেশের হয়ে রক্ত, ঘাম ও চোখের জল দেওয়ার পরও যখন লোকে পেশাদারীত্ব নিয়ে উদ্ভট ও অন্যায্য প্রশ্ন তোলে ও বিদ্রুপ করে, তখন সত্যিই খারাপ লাগে। আমি এমন অনেককে দেখেছি, তারা বলছেন যে উদযাপনের কারণে আমি চোট বাধাচ্ছি। হাস্যকর সব কথা। পিসিবির মেডিকেল টিম তো আমার উদযাপনে সমস্যা দেখে না! লোকে পছন্দ করুক আর না করুক, আমি এই উদযাপন চালিয়ে যাব।”

সেই সময়কার পিছু না ছাড়া চোটের কারণও ব্যাখ্যা করলেন হাসান।

“ ওয়ার্কলোড অনেক বেশি হওয়াতেই এটা হচ্ছিল। পাকিস্তানের হয়ে তিন সংস্করণে খেলছিলাম টানা, বিশ্বের কয়েকটি লিগেও খেলছিলাম। আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর থেকেই টানা খেলার মধ্যে ছিলাম, বিশ্রাম খুব একটা পাইনি। ম্যাচ বা ক্যাম্পের মাঝে তাই রিকভারির সময় ততটা পাইনি।”

“ তখন ভালো বোলিং করছিলাম, দলের তাই প্রয়োজন ছিল আমাকে। কিন্তু ওয়ার্কলোড বেড়েই যাচ্ছিল এবং বিশ্রাম বলতে কিছু ছিল না। একটা পর্যায়ে তাই এরকম হতোই। লোকে অনেক সময়ই ভুলে যায়, ফাস্ট বোলাররাও মানুষ। তারা মেশিন নয়। আমরা কেবল বোলিং করেই যাব এবং দিনের পর দিন ফিট থাকব, এতটা আশা করা উচিত নয়।”