নির্বাচকদের বার্তা দিয়ে রাখলেন হাসান মাহমুদ

প্রস্তুতি ম্যাচ এবার শুধু নিজেদের ঝালাই করাই নয়, অনেকটা দল নির্বাচনী ম্যাচও। দলে ফেরার লড়াইয়ে থাকা আর নবীনদের জন্য নিজেদের জানান দেওয়ার ম্যাচ। সেই পরীক্ষায় প্রথম সুযোগেই নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরলেন হাসান মাহমুদ। প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে তরুণ পেসারের শিকার ৪ উইকেট।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2021, 11:52 AM
Updated : 14 Jan 2021, 11:52 AM

বিকেএসপিতে বৃহস্পতিবার ৪০ ওভারের ম্যাচে তামিম ইকবাল একাদশকে ৫ উইকেট হারায় মাহমুদউল্লাহ একাদশ।

মাহমুদউল্লাহ একাদশের হয়ে হাসানের শিকার ৬ ওভারে ২১ রানে ৪ উইকেট। এর মধ্যে আছে তামিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট।

আরেক তরুণ পেসার শরিফুল ইসলামও ছাপ রাখতে পেরেছেন যথেষ্ট। ২৭ রান দিয়ে তার শিকার থিতু হওয়া সৌম্য সরকার ও আফিফ হোসেনের উইকেট।

ব্যাটসম্যানদের মলিন চেহারার ম্যাচে প্রস্তুতি মোটামুটি ভালো হলো কেবল মাহমুদউল্লাহর। দলকে জেতানো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি ৫১ রানে।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা তামিম একাদশের ইনিংস গতি পায়নি শুরু থেকে। তামিম ও লিটন দাস চার ওভারে করেন ১০ রান। ১০ বলে ২ করে লিটন পঞ্চম ওভারে আউট হয়ে যান আল আমিন হোসেনের বলে।

দল নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি দেখছেন দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ও হাবিবুল বাশার।

তামিম ও শান্ত দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ৪০ রান। চতুর্থ বোলার হিসেবে বল হাতে নিয়ে হাসান ফেরান দুজনকেই। ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ৪৩ বলে ২৮ করে ধরা পড়েন ইয়াসির আলি চৌধুরির হাতে। ৩৫ বলে শান্তর রান ২৭।

মিডল অর্ডারে মোহাম্মদ মিঠুন ১৬ রান করে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজের শিকার হয়ে।

৮৩ রানে ৪ উইকেট হারানো দলকে কিছুটা টানেন সৌম্য ও আফিফ। ইনিংসের একমাত্র ফিফটি জুটি উপহার দেন এই দুই বাঁহাতি। তাদের থামান আরেক বাঁহাতি শরিফুল। পাঁচে নেমে সৌম্য করেন ২ ছক্কায় ৪৬ বলে ২৪ রান। ছয়ে আফিফ স্বভাবসুলভ আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৩ ছক্কায় করেন ৩২ বলে ৩৫। দুজনের ক্যাচই নেন মোসাদ্দেক হোসেন।

এরপর কেবল একের পর এক ব্যাটসম্যানের আসা-যাওয়া। শেষ ৫ ব্যাটসম্যানের কেউ ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক। নির্বাচকদের নজর থাকার কথা যার ওপর, সেই অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান করতে পারেন কেবল ১ রান। ২১ রানের মধ্যে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে তামিম একাদশ গুটিয়ে যায় ৪০ ওভারের আগেই।

হাসান-শরিফুলের পাশাপাশি ভালো বোলিং করেন আল আমিনও। তবে সাকিব ছিলেন উইকেটশূন্য, রান দেন ওভারপ্রতি পাঁচের বেশি।

মাহমুদউল্লাহ একাদশের রান তাড়া শুরু হয় মোহাম্মদ নাঈম শেখের বাউন্ডারির মহড়ায়। আরেক ওপেনার ইয়াসির আলি যদিও মুস্তাফিজের শিকার হয়ে ফেরেন ৩ রানে।

ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলার পথে মাহমুদউল্লাহ।

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে ব্যাট হাতে ব্যর্থতার পর এই ম্যাচেও রানে ফেরা হয়নি সাকিব আল হাসানের। ২৩ বলে ৯ রান করে রান আউট হয়ে যান তিনি।

তবে নাঈম চাপে পড়তে দেননি দলকে। সম্ভাবনাময় ইনিংসটি অবশ্য বড় করতে পারেননি এই বাঁহাতি। ৭ চারে ৪৩ রান করে বিদায় নেন তিনি সাইফ উদ্দিনের বলে।

থিতু হয়ে আউট হয়ে যান মুশফিকুর রহিমও (৪৮ বলে ২৮)। তবে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে তার ৫১ রানের জুটি দলকে এগিয়ে নেয় জয়ের পথে। মুশফিকের বিদায়ের পর মোসাদ্দেক ফেরেন দ্রুত। মিরাজকে নিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ।

৬৪ বলে ৪ চারে মাহমুদউল্লাহর রান ৫১। মিরাজ অপরাজিত থাকেন ১৪ বলে ১৩ রান করে।

শনিবার নিজেদের মধ্যে আরেকটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজেদের মধ্যে ম্যাচ খেলবে সোমবার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

তামিম একাদশ: ৩৭.২ ওভারে ১৬১ (তামিম ২৮, লিটন ২, শান্ত ২৭, মিঠুন ১৬, সৌম্য ২৪, আফিফ ৩৫, মেহেদি ১, সাইফ উদ্দিন ৭*, নাসুম ২, রুবেল ০, মুস্তাফিজ ৯; আল আমিন ৮-০-৩২-২, শরিফুল ৭.১-১-২৭-২, সাকিব ৬-১-৩১-০, হাসান ৬-১-২১-৪, তাইজুল ৫-০-২৭-০, মিরাজ ৫-১-১৫-১)।

মাহমুদউল্লাহ একাদশ: ৩৬.৫ ওভারে ১৬২/৫ (নাঈম শেখ ৪৩, ইয়াসির ৩, সাকিব ৯, মুশফিক ২৮, মাহমুদউল্লাহ ৫১*, মোসাদ্দেক ৩, মিরাজ ১৩*; সাইফ উদ্দিন ৬-০-২৯-১, রুবেল ৮-০-৩৫-০, মুস্তাফিজ ৮-১-৩৮-১, মেহেদি ৬-০-১৬-১, নাসুম ৮-০-২৯-১, সৌম্য ০.৫-০-৮-০)।