সবশেষ ১০ ওয়ানডেতে এই অফ স্পিনার নিতে পেরেছেন কেবল ৬ উইকেট, পাঁচটিতেই ছিলেন উইকেটশূন্য। মাঠের এই বিবর্ণ চেহারা ছাপ ফেলেছে তার মনেও, খুব একটা খুশি নন নিজের পারফরম্যান্সে।
কোভিড বিরতির পর বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ ও প্রেসিডেন্টস কাপে তার পারফরম্যান্সে দেখা গেছে উত্থান-পতন। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর অভিযানে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত প্রতিপক্ষই পেয়েছেন মিরাজ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষেই তার রেকর্ড সবচেয়ে ভালো।
২২ টেস্টে ৯০ উইকেটের ক্যারিয়ারে মিরাজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪ টেস্টে ২৫ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ১৮ গড়ে। দেশে রেকর্ড আরও ভালো, ২ টেস্টে ১৪.০৬ গড়ে ১৫ উইকেট। তার ইনিংস সেরা (৭/৫৮) ও ম্যাচ সেরা (১২/১১৭) বোলিং, দুটোই ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষেই।
৫০ ওভারের ক্রিকেটেও তার সবচেয়ে বেশি শিকার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই, ১০ ওয়ানডেতে ১২ উইকেট। এই সংস্করণেও সেরা বোলিং তাদের সঙ্গেই, ৪/২৯। দেশের মাটিতে ৩ ম্যাচে ১৬.৩৩ গড়ে উইকেট ৬ টি।
তবে রেকর্ড মিরাজের পক্ষে থাকলেও বিপক্ষে আছে সাম্প্রতিক অতীত। ঘাড়ে নতুনদের নিঃশ্বাস ঠিকই টের পাচ্ছেন তিনি। দলে জায়গা পোক্ত করার জন্য ভালো পারফরম্যান্সের বিকল্প নেই, অনুভব করতে পারছেন তা। ভরসা পাচ্ছেন প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বলেই।
বুধবার দলের অনুশীলনের পর তরুণ ক্রিকেটার বললেন, সাফল্যময় অতীতের কারণেই এবার নিজের সমীকরণ মেলানোর জোর সাহস তিনি পাচ্ছেন।
“শেষ তিন-চারটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ অতটা ভালো করতে পারিনি, সেটা দেশের মাটিতে বা দেশের বাইরে। যেহেতু ওয়েস্ট ইন্ডিজ আসছে, আমার জন্য একটা বাড়তি সুবিধা থাকবে। দেশের মাটিতে খেলা টেস্ট, ওয়ানডে দুই সংস্করণেই ওদের বিপক্ষে ভালো করেছি।”
“আমার অবশ্যই ভালো অনুভূতি থাকবে যে, এখানে যদি ভালো করতে পারি, তাহলে নিজেকে ফেরানোর ভালো একটা সুযোগ পাব। এটাই চেষ্টা করব, নিজের পারফরম্যান্স ভালো করার জন্য এবং দিনশেষে দল যেন ভালো ফল করে।”
দুই দলের সবশেষ টেস্টে ১২ উইকেট নিয়ে বলতে গেলে একাই সফরকারীদের গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন মিরাজ। সেবারই প্রথম স্পিন কোয়ার্টেট নিয়ে খেলেছিল বাংলাদেশ। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সাকিব ফেরায় আবারও সেটির পুনরাবৃত্তির সুযোগ তাদের সামনে।
মহামারীকালে ১০ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবকে নিয়ে ফিরতে পারাটা বাড়তি খুশির উপলক্ষ্য এনে দিয়েছে মিরাজদের মনে।
“অনেকদিন পর একসাথে হয়েছি এবং আমাদের সবাই খুব উৎফুল্ল খেলার জন্য। বিশেষ করে, আমাদের সাকিব ভাইও দলে ফিরেছেন। এক বছর তিনি বাইরে ছিলেন। তার অনুপস্থিতিতে যে দীর্ঘদিন খেলা হয়নি এটা আমাদের জন্য প্লাস পয়েন্ট।”
“আমি মনে করি যে, আমাদের দল খুব ভালো অবস্থানে আছে। আমাদের সামনে যে সিরিজ আছে, আশা করি, আমরা সেখানে ভালো কিছু করতে পারব।”
আগামী ২০ জানুয়ারি মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ দিয়েই আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে অভিষেক হবে দুই দেশের।