পরিসংখ্যানে সিডনি টেস্টে ভারতের বীরত্ব

চেতেশ্বর পুজারা ও রিশাব পান্তের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর হনুমা বিহারি ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় একরাশ হতাশা যোগ হয়েছে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে। আর জয়ের সমতুল্য ড্র করে উচ্ছ্বাসে ভাসছে ভারত দল। সোমবার শেষ হওয়া চার ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৪০৭ রানের লক্ষ্যে একসময় জয়ের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিল ভারত। তবে ২২ রানের ব্যবধানে পান্ত ও পুজারাকে ফিরিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় স্বাগতিকরা। সেখান থেকেই শুরু বিহারি-অশ্বিনের দৃঢ়তা; দুজনে কাটিয়ে দেয় ৪২.৪ ওভার। চতুর্থ ইনিংসে মোট ১৩১ ওভার পার করে দেয় ভারত।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2021, 12:55 PM
Updated : 11 Jan 2021, 12:55 PM

সিডনি টেস্টের রোমাঞ্চকর এই লড়াইয়ে পরিসংখ্যানের পাতায় যোগ হয়েছে বেশ কিছু নতুন সংখ্যা, যেখানে ফুটে উঠছে ভারতের বীরত্ব।

৩- টেস্ট ম্যাচ বাঁচাতে চতুর্থ ইনিংসে ভারত ১৩১ ওভারের চেয়ে বেশি খেলেছে তিনবার-যার শেষটি ১৯৭৯ সালে। গত চার দশকে ড্র হওয়া ম্যাচে এটাই চতুর্থ ইনিংসে দলটির সবচেয়ে বেশি ওভার খেলার রেকর্ড। ১৯৭৯ সালে দা ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫০.৫ ওভার খেলেছিল তারা, যা ড্র ম্যাচে চতুর্থ ইনিংসে তাদের খেলা সর্বোচ্চ ওভার সংখ্যা।   

ড্র ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ভারতের বেশি ওভার খেলার ৫টি ইনিংস

ওভার

স্কোর

প্রতিপক্ষ

ভেন্যু

মৌসুম

১৫০.৫

৪২৯/৮

ইংল্যান্ড

দা ওভাল

১৯৭৯

১৩৬

৩২৫/৩

ওয়েস্ট ইন্ডিজ

কলকাতা

১৯৪৮/৪৯

১৩২

২৮৯/৫

ওয়েস্ট ইন্ডিজ

মুম্বাই

১৯৫৮/৫৯

১৩১

৩৬৪/৬

পাকিস্তান

দিল্লি

১৯৭৯/৮০

১৩১

৩৩৪/৫

অস্ট্রেলিয়া

সিডনি

২০২০/২১

 ৬- অস্ট্রেলিয়ায় ম্যাচ বাঁচাতে টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে কোনো দলের এ নিয়ে ১৩০-এর বেশি ওভার ব্যাটিংয়ের ঘটনা আছে ছয়টি। ১৯৭১ সালের পর যা দ্বিতীয়। সবশেষ ২০১২ সালে, দক্ষিণ আফ্রিকা ১৪৮ ওভার খেলেছিল।

টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে চতুর্থ উইকেটে রেকর্ড গড়া জুটির পথে চেতেশ্বর পুজারা ও রিশাব পান্ত। ছবি: বিসিসিআই।

২৫৬-
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে হনুমা বিহারি ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের খেলা বলের সংখ্যা। জয় বা ড্রয়ে শেষ হওয়া টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ষষ্ঠ উইকেটে এর চেয়ে বেশি বল খেলার ঘটনা আছে তিনবার। ১৯৯৯ সালে হোবার্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও জাস্টিন ল্যাঙ্গারের ৩৫৩ বলের জুটি সর্বোচ্চ।

২- ভারতের হয়ে চতুর্থ ইনিংসে ষষ্ঠ উইকেটে ২৫৬ বলের চেয়ে বেশি খেলার ঘটনা আছেন দুটি। বিহারি-অশ্বিন ম্যাচ ড্র করতে পারলেও, ওই দুইবার হেরেছিল ভারত। লোকেশ রাহুল ও রিশাব পান্ত ২০১৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিল ২৬৭ বল আর ১৯৯৯ সালে শচিন টেন্ডুলকার ও নয়ন মঙ্গিয়া পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিল ২৬৬ বল।

১৪৮- চেতেশ্বর পুজারা ও পান্তের চতুর্থ উইকেট জুটির রান, যা চতুর্থ ইনিংসে চতুর্থ উইকেটে ভারতের সর্বোচ্চ। ছাড়িয়ে গেছে ৭২ বছরের পুরনো বিজয় হাজারে ও রুশি মোদির রেকর্ড; মুম্বাই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৩৯ রানের জুটি গড়েছিলেন দুজনে।

৯৭- অস্ট্রেলিয়ায় কোনো সফরকারী দলের কিপার-ব্যাটসম্যানের চতুর্থ ইনিংসে করা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। পান্তের চেয়ে বেশি রান করেছিলেন ইংল্যান্ডের সাবেক কিপার-ব্যাটসম্যান অ্যালান নট। ১৯৭৫ সালে অ্যাডিলেইড টেস্টে তিনি অপরাজিত ছিলেন ১০৬ রানে।

১৩৪- টেস্টে ৬ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁতে পুজারার লাগল এই সংখ্যক ইনিংস। ১১তম ভারতীয় হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন তিনি। এর মধ্যে স্বদেশি ৫ জনের চেয়ে কম ইনিংসে পা দিলেন ৬ হাজারে।

৩- শেষ দিনে ভারতের হারানো উইকেট সংখ্যা। ২০০১ সালের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্টের শেষ দিনে তিন বা এর চেয়ে কম উইকেট পড়েছে কেবল আর একবার। ২০০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা চতুর্থ ইনিংসে ১২৬ ওভার খেলে ম্যাচ ড্র করেছিল, তারাও শেষ দিনে হারিয়েছিল তিন উইকেট।

১২৮- চতুর্থ ইনিংসে অশ্বিনের খেলা বলের সংখ্যা। টেস্টের শেষ ইনিংসে ভারতের সাত নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে সবচেয়ে বেশি বল খেলার তালিকায় যা পঞ্চম।

১৪.২৮- বিহারির ১৬১ বলে ২৩ রানে অপরাজিত ইনিংসের স্ট্রাইক রেট। পরিসংখ্যানে বলের বিস্তারিত তথ্য রাখার পর থেকে ইনিংসে ১৫০ বা তার বেশি বল খেলে বিহারির চেয়ে কম স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা একমাত্র ভারতীয় ইয়াশপাল শর্মা। ১৯৮০-৮১ মৌসুমে অ্যাডিলেইড টেস্টে ৮.২৪ স্ট্রাইক রেটে (১৫৭ বলে ১৩ রান) ব্যাটিং করেছিলেন তিনি।