ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের প্রথম ইনিংসে নিউ জিল্যান্ড ইনিংস ঘোষণা করে ৬ উইকেটে ৬৫৯ রানে। টেস্ট ইতিহাসে কিউইদের এটি পঞ্চম সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর।
শেষ বেলায় খেলতে নেমে পাকিস্তান মঙ্গলবার তৃতীয় দিন শেষ করে ১ উইকেটে ৮ রানে। ইনিংস হার এড়াতেই এখনও প্রয়োজন তাদের ৩৫৪ রান!
নিউ জিল্যান্ডের বড় স্কোরের মূল কারিগর উইলিয়ামসন। তিন ম্যাচের মধ্যে দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি এসেছে অধিনায়কের ব্যাট থেকে। ২৩৮ রানের ইনিংটির পথে তার নাম লেখা হয়ে গেছে কয়েকটি রেকর্ডে।
ক্যারিয়ারের চতুর্থ ডাবল সেঞ্চুরি এটি তার। নিউ জিল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি দ্বিশতকের রেকর্ডে স্পর্শ করেছেন ব্রেন্ডন ম্যাককালামের রেকর্ড। কিউই অধিনায়ক হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি হলো ৩টি। এই রেকর্ডে তিনি নিজেকে তুলে নিয়েছেন ম্যাককালাম ও স্টিভেন ফ্লেমিংয়ের পাশে।
নিকোলস থামেন ১৫৭ রানে। চতুর্থ টেস্ট খেলতে নামা অলরাউন্ডার মিচেল প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিতে ওয়ানডে ঘরানায় করেন ১১২ বলে অপরাজিত ১০২।
দিনের শুরুটা ছিল উইলিয়ামসনের আরেকটি মাইলফলক দিয়ে। ৭ হাজার টেস্ট রান স্পর্শ করেন তিনি। ১৪৪ ইনিংসে মাইলফলকে পা রেখে তিনিই নিউ জিল্যান্ডের দ্রুততম। এমনকি ব্রায়ান লারা, রিকি পন্টিং, অ্যালেস্টার কুক, জ্যাক ক্যালিসের মতো কিংবদন্তিদের চেয়ে কম ইনিংসে তিনি পৌঁছে গেছেন ৭ হাজারে।
নিকোলসের সঙ্গে তার আগের দিনের জুটি এ দিনও ভোগায় পাকিস্তানকে। লাঞ্চের আগে কোনো উইকেট পড়েনি। ওভারপ্রতি চারের বেশি রান তুলে দলের রান দুজন নিয়ে যান চারশতে।
ম্যারাথন এই জুটি অবশেষে থামান মোহাম্মদ আব্বাস। শর্ট বলে হুক খেলে ফাইন লেগে ক্যাচ দেন নিকোলস। সাড়ে ৬ ঘণ্টায় ২৯১ বলে ১৫৭ রান করে বিদায় নেন এই বাঁহাতি।
বৃষ্টিতে এরপর খেলা বন্ধ থাকে ঘণ্টাখানেক। বৃষ্টির পর প্রথম বলেই জীবন পান উইলিয়ামসন। শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে ক্যাচ ছাড়েন আজহার আলি। আগের দিন ১০৭ রানে বেঁচে যাওয়ার পর এবার রক্ষা পান তিনি ১৭৭ রানে।
ওই ওভারেই বিজে ওয়াটলিংকে ফেরান আফ্রিদি। তবে ড্যারিল মিচেলকে নিয়ে পাকিস্তানি বোলিং গুঁড়িয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন উইলিয়ামসন। ৩২৭ বলে ধরা দেয় ডাবল সেঞ্চুরি। যথারীতি তার উদযাপন ছিল পরিমিত।
ইনিংস ঘোষণার জন্য রান বাড়ানোর তাড়ায় শেষ হয় উইলিয়ামসনের সাড়ে ৯ ঘণ্টার এই পথচলা। ফাহিম আশরাফের বলে আপার কাট করে ছক্কা মারার চেষ্টায় ধরা পড়েন তিনি থার্ড ম্যানে। ৩৬৪ বলে ২৩৮ রানের ইনিংসে ছক্কা নেই, চার ২৮ টি।
মিচেলেল সঙ্গে তার জুটিতে আসে ১৩৩ রান।
বিশাল ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের চ্যালেঞ্জ ছিল দিনের শেষ সময়টুকু কাটিয়ে দেওয়া। সেটাও হয়নি। ২৫ বল খেলে রান না করে বিদায় নেন শান মাসুদ। বাঁহাতি ওপেনারের এটি টানা তৃতীয় শূন্য!
আবিদ আলি ও নাইটওয়াচম্যান মোহাম্মদ আব্বাস এরপর কোনোরকমে বাকি সময়টা পার করেন। তবে ম্যাচে হার থেকে পাকিস্তানের পার পাওয়ার উপায় সম্ভবত নেই!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ২৯৭
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১৫৮.৫ ওভারে ৬৫৯/৬ (ডি.) (আগের দিন ২৮৬/৩) (উইলিয়ামসন ২৩৮, নিকোলস ১৫৭, ওয়াটলিং ৭, মিচেল ১০২*, জেমিসন ৩০*; আফ্রিদি ৩৫.৫-৮-১০১-২, আব্বাস ৩৪-১১-৯৮-২, নাসিম ২৬-২-১৪১-০, ফাহিম ২৮-৪-১০৬-২, মাসুদ ২-০-১৭-০, গোহার ৩২-০-১৫৯-০, হারিস ১-০-২-০)।
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ১১ ওভারে ৮/১ (মাসুদ ০, আবিদ ৭*, আব্বাস ১*; সাউদি ৬-৫-৫-০, বোল্ট ৩-২-২-০, জেমিসন ২-১-১-১)।