দু প্লেসি ১৯৯, দক্ষিণ আফ্রিকা ৬২১

আগের দিন অল্পের জন্য সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপে পোড়া ডিন এলগারের সঙ্গে একটি জায়গায় মিলে গেলেন ফাফ দু প্লেসি। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান আউট হলেন ১৯৯ রানে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Dec 2020, 04:00 PM
Updated : 28 Dec 2020, 04:29 PM

দু প্লেসির আক্ষেপের দিনে সেঞ্চুরিয়ন টেস্টে রেকর্ড গড়া সংগ্রহ পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবার ছয়শ ছাড়িয়ে স্বাগতিকরা থেমেছে ৬২১ রানে। ২০১২ সালে কেপ টাউনে ৪ উইকেটে ৫৮০ রান ছিল লঙ্কানদের বিপক্ষে তাদের আগের সর্বোচ্চ।

তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কার রান ২ উইকেটে ৬৫। কুসল পেরেরা ৩৩ ও দিনেশ চান্দিমাল ২১ রানে ব্যাট করছেন। এখনও ১৬০ রানে পিছিয়ে আছে সফরকারীরা।

প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২২৫ রানের লিড এনে দিতে দু প্লেসির পাশাপাশি ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন কেশব মহারাজ। তার ব্যাট থেকে আসে ৭৩ রান। টেম্বা বাভুমা করেন ৭১। আর আগের দিন ৯৫ রান করেছিলেন এলগার।

শেষ ঘণ্টায় ব্যাটিংয়ে নেমে পাঁচ ওভারের মধ্যে অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে ও কুসল মেন্ডিসকে হারায় শ্রীলঙ্কা। দুজনই লুঙ্গি এনগিডির শিকার। করুনারত্নে হন বোল্ড, স্লিপে ক্যাচ দেন মেন্ডিস। বাকি সময়ে আর কোনো বিপদ হতে দেননি পেরেরা ও চান্দিমাল।

সুপারস্পোর্ট পার্কে সোমবার ৪ উইকেটে ৩১৭ রান নিয়ে দিন শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের দিন জমে যাওয়া দু প্লেসি ও বাভুমা জুটি এদিন প্রথম ঘণ্টায়ও ভাঙতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। ৪১ রানে দিন শুরু করা বাভুমা ফিফটি পূরণ করেন ৯৩ বলে।

সপ্তম উইকেটে ১৩৩ রানের জুটি গড়েন দু প্লেসি ও কেশব মহারাজ। ছবি: ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা

বাভুমার বিদায়ে ভাঙে ১৭৯ রানের জুটি। ৭ চারে গড়া তার ৭১ রানের ইনিংসটি শেষ হয় বেশ অদ্ভুতভাবে। দাসুন শানাকার বলে কট বিহাইন্ডের আবেদন হতেই ড্রেসিং রুমের পথে হাঁটা দেন তিনি। স্নিকোতে দেখা যায়, ব্যাটে বল স্পর্শই করেনি।

পরের ওভারেই ভানিদু হাসারাঙ্গাকে পয়েন্ট দিয়ে চার হাঁকিয়ে দু প্লেসি সেঞ্চুরি পূরণ করেন ১৫১ বলে। এটি তার দশম টেস্ট সেঞ্চুরি, ২০১৯ সালের জানুয়ারির পর প্রথম। মাঝে ১৯ ইনিংসে পাননি তিন অঙ্কের দেখা।

পেস অলরাউন্ডার ভিয়ান মুল্ডারের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ৭৭ রানের আরেকটি জুটি উপহার দেন দু প্লেসি। হাসারাঙ্গার লেগ স্পিনে কিপারের হাতে ধরা পড়া মুল্ডার ৪ চার ও এক ছক্কায় করেন ৩৬।

দু প্লেসি এরপর মহারাজকে সঙ্গী করে এগোতে থাকেন। ২০১৩ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা তার আগের সর্বোচ্চ ১৩৭ ছাড়িয়ে ডাবলের পথে ছুটছিলেন তিনি। দুজনের জুটির রান তিন অঙ্ক স্পর্শ করে ১৩৫ বলে।

মহারাজ তার তৃতীয় টেস্ট ফিফটি পূরণ করেন ৭৮ বলে। দক্ষিণ আফ্রিকার রান ছাড়ায় ছয়শ।

এরপরই আউট হয়ে যান দু প্লেসি। হাসারাঙ্গার বলে বড় শটের চেষ্টায় মিড অনে সহজ ক্যাচ দেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ড্রেসিং রুমের ব্যালকনিতে দক্ষিণ আফ্রিকার অন্য সবার চোখে-মুখেও তখন রাজ্যের হতাশা। ২৭৬ বলে ২৪ চারে ১৯৯ রান করে ফেরেন সাবেক অধিনায়ক।

দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ও সব মিলিয়ে ১১তম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ১৯৯ রানে আউট হলেন তিনি। দু প্লেসির আগে সবশেষ এই অভিজ্ঞতা হয়েছিল তারই সতীর্থ এলগারের; ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে, পচেফস্ট্রুমে বাংলাদেশের বিপক্ষে।

এরপর আর বেশি দূর এগোয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৭৩ রান করেন মহারাজ। গত বছর পুনেতে ভারতের বিপক্ষে ৭২ রান ছিল তার আগের সর্বোচ্চ।

৪ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার সেরা বোলার হাসারাঙ্গা। বিশ্ব ফার্নান্দো নেন ৩টি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৩৯৬

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩১৭/৪) ১৪২.১ ওভারে ৬২১ (দু প্লেসি ১৯৯, বাভুমা ৭১, মুল্ডার ৩৬, মহারাজ ৭৩, নরকিয়া ০, সিপামলা ০, এনগিডি ২*; ফার্নান্দো ৩১.১-৩-১২৯-৩, রাজিথা ২.১-০-১৬-০, শানাকা ২৮.৫-২-৯৮-২, হাসারাঙ্গা ৪৫-৫-১৭১-৪, কুমারা ২১.১-০-১০৩-১, করুনারত্নে ৬.৫-০-৩৬-০, কুসল মেন্ডিস ৭-০-৪১-০)

শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ১২ ওভারে ৬৫/২ (করুনারত্নে ৬, পেরেরা ৩৩*, মেন্ডিস ০, চান্দিমাল ২১; এনগিডি ৬-০-২৮-২, নরকিয়া ৩-০-২৩-০, মুল্ডার ৩-০-১০-০)।