নিউ জিল্যান্ডে কারাবন্দির মতো আচরণ পেয়েছি : হাফিজ

ঘরবন্দি কোয়ারেন্টিন হওয়ার কথা ছিল তিন দিন। সেটি শেষ পর্যন্ত ঠেকেছিল দুই সপ্তাহে। এক পর্যায়ে দেশে ফেরত পাঠানোর হুমকি দেওয়া হয়েছিল পাকিস্তান দলকে। সব মিলিয়ে নিউ জিল্যান্ডে যে অভিজ্ঞতা এবার হয়েছে, তাতে ভীষণ ক্ষুব্ধ মোহাম্মদ হাফিজ। দেশে ফিরে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার উগরে দিলেন ক্ষোভ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Dec 2020, 03:37 AM
Updated : 28 Dec 2020, 03:37 AM

নিউ জিল্যান্ড সফরে তিন দিন ঘরে থাকার পর কোভিড নেগেটিভ হওয়া সাপেক্ষে চতুর্থ দিন থেকে কোয়ারেন্টিনেই নিজেদের মধ্যে অনুশীলন করার কথা ছিল পাকিস্তান দলের। কিন্তু ক্রিকেটাররা বিপত্তি বাধান শুরুর দিনই। নিজেদের ঘর থেকে বেরিয়ে, খাবার ভাগাভাগি করে, আড্ডা দিয়ে, কোয়ারেন্টিনের বিধি ভেঙে নিউ জিল্যান্ডের স্বাস্থ্য কর্তাদের নজরে পড়েন তারা। সেবারের মতো সাবধান করে দিয়ে জানানো হয়, এরপর বিধি ভাঙলে ক্রিকেটারদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

এরপর অবস্থা আরও সঙ্গীন হয় একের পর এক পাকিস্তানি ক্রিকেটার কোভিড পজিটিভ হওয়ায়। তিন দফা পরীক্ষায় দলের ১০ জনের মতো পজিটিভ হন। এতে তাদের অনুশীলন সুবিধা বাতিল করে ঘরেই থাকতে বাধ্য করা হয়। শেষ পর্যন্ত পঞ্চম দফা পরীক্ষায় সবাই নেগেটিভ হওয়ার পর অনুশীলনের অনুমতি মেলে।

পাকিস্তানের কোচ মিসবাহ-উল-হক পরে জানান, ধৈর্য হারিয়ে এক পর্যায়ে তারা সফল বাতিল করে দেশে ফেরার কথাও বিবেচনা করেছিলেন।

শেষ পর্যন্ত সফর ঠিকঠাক চলছে। সীমিত ওভারের সিরিজ শেষে দেশে ফিরেছেন দলের কয়েকজন। তাদেরই একজন হাফিজ। পাকিস্তানের এক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি করলেন গুরুতর অভিযোগ।

“ আমরা ক্রিকেটার, দেশের দূত হিসেবে বিবেচনা করার কথা আমাদের। কিন্তু আমার মনে হয় না নিউ জিল্যান্ডে আমরা সেটি পেয়েছি। আমাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করা হয়নি, কারাবন্দির মতো দেখা হয়েছে আমাদেরকে।”

বন্দিদশার কারণেই নিউ জিল্যান্ডে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ফল ভালো হয়নি তাদের, দাবি হাফিজের।

“ জেলের মতো অবস্থায় থাকার পর টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রস্তুতি নেওয়া আমাদের জন্য সহজ ছিল না। প্রথম ম্যাচের আগে মাত্র অল্প কয়েকদিন সময় পেয়েছি আমরা।”

দেশে থেকে সবাই কোভিড নেগেটিভ হওয়ার পর নিউ জিল্যান্ডে গিয়ে পাকিস্তানের এত জন ক্রিকেটার পজিটিভ হওয়া নিয়ে আলোচনা, বিতর্ক হয়েছে তুমুল। হাফিজের ধারণা, চার্টার্ড ফ্লাইটে না গিয়ে বাণিজ্যিক ফ্লাইটে যাওয়াতেই এই বিপত্তি।

“ আমার মনে হয় বাণিজ্যিক ফ্লাইটেই ছেলেরা আক্রান্ত হয়েছে, কারণ দলের কয়েকজনকে ইকোনোমি ক্লাসে ভ্রমণ করতে হয়েছিল। সেখানে সামাজিক দূরত্বের ব্যাপারটি ছিল শিথিল, আমাদের ছেলেরা সেখানেই অসংরক্ষিত হয়ে গেছে।”

দলকে বাণিজ্যিক ফ্লাইটে পাঠানোয় পিসিবির সমালোচনা হয়েছে তখনই। কোভিড পরিস্থিতিতে বড় আকারের স্কোয়াড, সঙ্গে পাকিস্তান ‘এ’ দল মিলিয়ে ৫৩ জনের বিশাল বহরকে এত লম্বা দূরত্বে চার্টার্ড ফ্লাইটে পাঠানোর মতো খরচ করতে চায়নি বোর্ড। পিসিবির প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান পরে জানান, ফার্স্ট ক্লাস ও বিজনেস ক্লাসে পর্যাপ্ত আসন না পেয়ে কয়েকজনকে ইকোনোমি ক্লাসে পাঠাতে বাধ্য হন তারা।

এই সফরের আগে ইংল্যান্ড সফরে চার্টার্ড ফ্লাইটেই গিয়েছিল পাকিস্তান দল। সেবার খরচ বহন করেছিল ইংল্যান্ডের বোর্ড।