সবুজ গালিচায় দৃঢ়তার ছবি আঁকলেন উইলিয়ামসন

ভেন্যুর বদল, প্রতিপক্ষ ভিন্ন। কিন্তু উইকেট একইরকম। কেন উইলিয়ামসনও ঠিক একই চেহারায়! ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগের সিরিজের মতোই ঘাসে ভরা উইকেট। সেই সবুজ ২২ গজেই চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা আর নান্দনিকতার প্রদর্শনী মেলে ধরে নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক পৌঁছে গেলেন আরেকটি সেঞ্চুরির কাছে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Dec 2020, 06:20 AM
Updated : 26 Dec 2020, 06:20 AM

দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষে মাউন্ট মঙ্গানুইতে উইলিয়ামসন অপরাজিত ২৪৩ বলে ৯৪ রান করে। পাকিস্তান শুরুটা দারুণ করলেও অধিনায়কের সৌজন্যে নিউ জিল্যান্ডের রান প্রথম দিনে ৮৭ ওভারে ৩ উইকেটে ২২২।

দুই দফায় জীবন পেয়েছেন উইলিয়ামসন, শাহিন শাহ আফ্রিদির তোপ ও পাকিস্তানী পেসারদের দারুণ সব ডেলিভারি সামলেছেন। হাল ছাড়েননি লড়াইয়ে। তার দলও তাই গড়ে ফেলেছে বড় স্কোরের ভিত।

নিজের আগের টেস্টেই ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে হ্যামিল্টনে সবুজ উইকেটে ২৫১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন উইলিয়ামসন।

দিনের শুরুটা ছিল পাকিস্তানের। টস জিতে বোলিংয়ে নামে তারা। আফ্রিদির করা ম্যাচের প্রথম বলে ব্যাটের কানায় লেগে বাউন্ডারি পান টম ল্যাথাম। এক বল পরই আবার ল্যাথামের ব্যাটের কানায় লেগে বল আশ্রয় নেয় তৃতীয় স্লিপে।

শুরুর সাফল্যের পর আরেক ওপেনার টম ব্লান্ডেলকেও ফেরান বাঁহাতি পেসার আফ্রিদি। একাদশ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান তখন ২ উইকেটে ১৩।

১২০ রানের জুটির পথে টেইলর করেছেন ৭০। ছবি : নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেটের টুইটার।

নড়বড়ে শুরুর পর দলকে উদ্ধার করেন উইলিয়ামসন ও টেইলর। শুরুতে ভুগতে হয়েছে দুজনকেই। ১৮ রানে নাসিম শাহর বলে স্লিপে শান মাসুদের হাতে জীবন পান উইলিয়ামসন। ক্রমে দুজনে একটু একটু করে খুঁজে পান ছন্দ। দুজনের জুটি জমে যায় দারুণভাবে। রানে আসেনি বলের পর বল। তারা মাথা নিচু করে পড়ে থাকেন উইকেটে।

টেইলর ফিফটি স্পর্শ করেন ১২৭ বলে, উইলিয়ামসন ১৫০ বলে। লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ আক্রমণে আসার পর দুজনই রানের গতি একটু বাড়ান। ফিফটির পর ইয়াসিরকে টানা দুই বলে চার-ছক্কা মারেন টেইলর, ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ছক্কা মারেন উইলিয়ামসন।

১২০ রানের এই জুটি শেষ পর্যন্ত ভাঙেন সেই আফ্রিদিই। দারুণ এক ডেলিভারিতে টেইলর ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে পাকিস্তানের এই টেস্টের অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। ১৫১ বলে টেইলর করেন ৭০ রান।

এরপর হেনরি নিকোলসকে সঙ্গী করে উইলিয়ামসন চালিয়ে যান লড়াই। এখানেও যথারীতি পাকিস্তানি ফিল্ডারদের পাশে পান তারা। নিকোলস ৬ রানেই নাসিমের বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন, নিতে পারেননি মোহাম্মদ আব্বাস। দিনের শেষ ভাগে উইলিয়ামসন আবার জীবন পান ৮৬ রানে। এবার আফ্রিদির বলে স্লিপে সহজ ক্যাচ ছাড়েন হারিস সোহেল।

দ্বিতীয় নতুন বল নিয়ে পাকিস্তান পারেনি এই জুটিতে ভাঙন ধরাতে। মাথা উঁচু করেই মাঠ ছাড়েন উইলিয়ামসন ও নিকোলস। দুজনের অবিচ্ছন্ন জুটির রান ৮৯।

আদর্শ কন্ডিশনে আফ্রিদির পাশাপাশি দারুণ বোলিং করেন মোহাম্মদ আব্বাসও। তবে এই সুইং বোলারকে সাবধানে খেলে পার করে দেন উইলিয়ামসনরা। তার ২১ ওভারে রান এসেছে মোটে ২৫, মেডেন ১১টি। কিন্ত উইকেট পাননি। কিউইরা সফল সেখানেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস : ৮৭ ওভারে ২২২/৩ (ল্যাথাম ৪, ব্লান্ডেল ৫, উইলিয়ামসন ৯৪*, টেইলর ৭০, নিকোলস ৪২*; আফ্রিদি ২০-৫-৫৫-৩, আব্বাস ২১-১১-২৫-০, ফাহিম ১৩-৫-৩০-০, নাসিম ১৫-১-৫১-০, ইয়াসির ১৬-২-৫৬-০, মাসুদ ২-১-২-০)।