বাবার মৃত্যুশোক সামলে শেষের নায়ক শহিদুল

বাবাকে শেষবার দেখতে যখন টিম হোটেল ছেড়ে গিয়েছিলেন শহিদুল ইসলাম, তার ভাবনায় তখন টুর্নামেন্ট বা ক্রিকেট, কিছুই থাকার কোনো কারণই নেই। বাবাকে চিরবিদায়ের শোক বুকে চাপা দিয়ে সেই শহিদুলই নিজেকে উজার করে দিলেন মাঠে। ফাইনালে শেষ ওভারে দারুণ বোলিংয়ের পাশাপাশি বড় অবদান রাখলেন জেমকন খুলনার জয়ে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Dec 2020, 05:47 PM
Updated : 18 Dec 2020, 05:47 PM

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের ফাইনালে শহিদুলের খেলার কথাই ছিল না। গত রোববার মারা যান তার বাবা। খবর পেয়ে জৈব-সুরক্ষা বলয় ছেড়ে নারায়ণগঞ্জে বাড়িতে চলে যান এই পেসার। তাকে আর পাওয়ার আশা করেনি খুলনা। কিন্তু ফাইনালের আগে শহিদুল নিজে থেকেই দলকে জানান, তিনি ফিরতে চান। দল তাকে স্বাগত জানায়। কোভিড পরীক্ষায় নেগেটিভ হয়ে আবার তিনি প্রবেশ করেন সুরক্ষা-বলয়ে।

ফাইনালে শেষ ওভারে যখন গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের প্রয়োজন ১৬ রান, সেই শহিদুলের হাতেই বল তুলে দেন খুলনা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ওভারের প্রথম দুই বলে শহিদুল দেন মাত্র ৩ রান, পরের দুই বলেই বিদায় করে দেন থিতু হয়ে যাওয়া দুই ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেন ও সৈকত আলিকে। প্রথম ৫ বলে দারুণ বোলিং করায় শেষ বলে ছক্কা হজম করলেও দলের জিততে সমস্যা হয়নি।

শেষ ওভারের আগেও উল্লেখযোগ্য একটি অবদান ছিল শহিদুলের। ফাইনালের বড় টার্নিং পয়েন্ট যেটি। চট্টগ্রামের রান তাড়ায় সেটি নবম ওভার। বল করে শহিদুল ফলো থ্রুতে নিজেকে সামলে দারুণ ক্ষীপ্রতায় ছুটে গিয়ে ফুল লেংথ ডাইভ দিয়ে সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট করে দেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিটন দাসকে।

শহিদুলের এই নিবেদন ছুঁয়ে গেছে তার সতীর্থদের। ম্যাচ শেষে খুলনার অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা বললেন, তাদের এই জয় শহিদুলের জন্য।

“ আমরা সবাই আজ শহিদুলের বাবার জন্য খেলেছি। ৫ দিন আগে উনি মারা গেছেন। আমাদের অধিনায়ক ম্যাচের আগে বলেছে যে আজ আমরা শহিদুলের জন্য খেলব। বাবা মারা যাওয়ার পর সে আবার ফিরে এসে হোটেলে কোয়ারেন্টিনে ছিল। পরীক্ষায় নেগেটিভ হয়ে ম্যাচ খেলেছে আজ। আমাদের আজকের জয় ওর জন্য।”