রাজশাহীকে মাড়িয়ে চট্টগ্রামের আটে সাত
ক্রীড়া প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 12 Dec 2020 02:43 PM BdST Updated: 12 Dec 2020 10:41 PM BdST
শীর্ষ চারে থাকার লড়াইয়ে টিকে থাকতে জয়টা ভীষণ জরুরি ছিল রাজশাহীর। কিন্তু প্রশ্নবিদ্ধ কৌশল আর ব্যাটে-বলে ধারহীন পারফরম্যান্সে সেই ম্যাচই তারা হেরে বসল বাজেভাবে। আগেই শীর্ষস্থান নিশ্চিত করে ফেলা চট্টগ্রাম দারুণ জয়ে আত্মবিশ্বাস আরও পোক্ত করে নিল ফাইনালের লড়াইয়ের জন্য।
Related Stories
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্রাথমিক পর্বের শেষ দিনে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর বিপক্ষে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের জয় ৩৬ রানে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শনিবার সৌম্য সরকার ও লিটন দাসের জোড়া ফিফটিতে ২০ ওভারে চট্টগ্রাম তোলে ৪ উইকেটে ১৭৫ রান। রাজশাহী করতে পারে কেবল ১৩৮।
এভাবে হেরে রাজশাহীর রান রেটও নেমে গেছে ফরচুন বরিশালের নিচে। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে জিতলেই বরিশাল নিশ্চিত করবে শীর্ষ চারে থাকা। রাজশাহীর সামান্য আশা টিকে আছে, যদি বরিশাল হারে বড় ব্যবধানে।
সৌম্য ও লিটনের উদ্বোধনী জুটিই এ দিন ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে দেয় রাজশাহীকে। অথচ এই জুটি ভাঙা যেত শুরুতেই। সেটি হয়নি রাজশাহীর বিস্ময়কর কৌশল আর বোলার-ফিল্ডারদের ব্যর্থতায়।
কুয়াশার আবরণ ও শীতের আবহে কন্ডিশন ছিল বেশ পেস সহায়ক। কিন্তু টস জিতে বোলিং নেওয়ার ফায়দা নিতে পারেনি রাজশাহী। পেসার সাইফ উদ্দিনকে দিয়ে বোলিং শুরু করলেও পরের তিন ওভারেই তারা আক্রমণে আনে স্পিন।
এমন কন্ডিশনে রাজশাহী বোলিং আক্রমণ সাজায় স্পিন নির্ভর। স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি ও বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানির সঙ্গে আসরে প্রথমবার সুযোগ দেওয়া হয় বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলামকে। সানি ও সানজামুল মিলে বোলিং করতে পারেন তিন ওভার। এমনিতে নির্ভরযোগ্য মেহেদিও এ কন্ডিশনে ছিলেন খরুচে।

রাজশাহী উইকেট পেতে পারত প্রথম ওভারেই। সাইফের বল সৌম্যর ব্যাটে আলতো ছোঁয়া লাগিয়ে কিপারের হাতে গেলেও আবেদন করেননি কেউ। পরে স্পিন পেয়ে চার ওভারে ৩৫ রান তুলে ফেলেন সৌম্য ও লিটন। আরাফাত সানি ও মেহেদি হাসানকে ছক্কায় ওড়ান সৌম্য।
পাওয়ার প্লের পরের দুই ওভারে রানের গতি কিছুটা সামাল দেন দুই পেসার রেজাউর রহমান ও সাইফ। পরে স্পিনার মেহেদিকে পেয়ে আবার ছক্কা মারেন সৌম্য। খুব আগ্রাসী না হলেও সুযোগমতো বাউন্ডারি আদায় করে নেন লিটনও।
সৌম্যর মতো লিটনও বেঁচে যান পরে। তার ২২ রানে রেজাউরের বলে পয়েন্টে ডাইভ দিয়েও ক্যাচ নিতে পারেননি ফজলে রাব্বি। ৪০ রানে তাকে রান আউট করার সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে রাজশাহী। ১২ ওভারে দলের রান স্পর্শ করে ১০০।
সৌম্য ৪০ বলে স্পর্শ করেন টানা দ্বিতীয় ফিফটি। লিটনের ৫০ আসে ৩৮ বলে।
আসরে দুজনের এটি প্রথম শতরানের জুটি। এর আগে তাদের পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি ছিল তিনটি।
শতরানের জুটির পর দ্রুত রান বাড়ানোর চেষ্টায় আউট হন দুজন। আনিসুল ইসলাম ইমনকে ছক্কা মারার পরের বলে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে বিদায় নেন সৌম্য। স্টাম্প ছেড়ে প্যাডল করতে গিয়ে বোল্ড লিটন।
এই দুজনের বিদায়ের পর আরও দুটি দ্রুত উইকেটের পতনে অনেকটা কমে যায় রানের গতি। মোহাম্মদ মিঠুন ও মোসাদ্দেক হোসেন ব্যর্থ হন পরিস্থিতির দাবি মেটাতে। স্লো মিডিয়াম পেসে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন ইমন।
তবে শেষ দুই ওভারে আলগা বোলিংয়ে চট্টগ্রামের রান বাড়ানোর সুযোগ করে দেন রেজাউর ও সাইফ। রেজাউরের ওভারে তিনটি ছক্কা মারেন শামসুর রহমান, যার দুটি ছিল ফুল টস। দুটি বিমার দিয়ে বোলিং থেকে সরে যেতে হয় তাকে। শেষ ওভারে সাইফের ফুল টসে ছক্কা মারেন জিয়াউর রহমান।
শেষ ২ ওভার থেকে চট্টগ্রাম তোলে ৩৭ রান। ১৮ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন শামসুর রহমান।

আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত স্লগ করে ধরা পড়েন সীমানায়। একটি করে ছক্কা ও চার মেরে রনি তালুকদার বিদায় নেন ছক্কার চেষ্টায়। পাওয়ার প্লে শেষে রাজশাহীর রান দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৩৫।
৩৪ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবার ম্যাচে ৩ উইকেট নেওয়ার স্বাদ পান নাহিদুল। ম্যাচের সেরাও তিনিই।
নুরুল হাসান সোহান ও ফজলে মাহমুদ রাব্বির জুটি এরপর কিছুটা টেনে নেয় দলকে। তবে রানের গতি ছিল না প্রত্যাশিত। দুটি ছক্কা মারলেও ফজলে মাহমুদের ১৯ রান আসে ২০ বলে।
সেখান থেকে রাজশাহীকে জেতাতে পারতেন কেবল মেহেদি হাসান। তিনটি বিশাল ছক্কায় কিছুটা আশার সঞ্চারও করেন এই অলরাউন্ডার। কিন্তু আরেকটি ছক্কার চেষ্টায় তিনি আউট হয়ে যান কাভার সীমানায় নাহিদুলের দারুণ ক্যাচে (১৭ বলে ২৬)।
এরপর আর জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি তারা। সাইফ উদ্দিন ফিরে যান একটি ছক্কা মেরেই। সোহান দীর্ঘক্ষণ উইকেটে থেকে করতে পারেন ২৮ বলে ২৮। লেজের ব্যাটসম্যানরাও ব্যবধান খুব একটা কমাতে পারেননি।
প্রাথমিক পর্বে ৮ ম্যাচের ৭টিই জিতে শেষের মঞ্চে পা রাখল চট্টগ্রাম। তাদের একমাত্র হার ছিল বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম: ২০ ওভারে ১৭৫/৪ (লিটন ৫৫, সৌম্য ৬৩, মিঠুন ২, শামসুর ৩০*, মোসাদ্দেক ৩, জিয়াউর ১০*; সাইফ ৪-০-৩২-১, মেহেদি ৩-০-২৭-০, সানি ১-০-১৩-০, রেজাউর ৩.৩-০-৩৮-১, সানজামুল ২-০-১৭-০, মুকিদুল ৩-০-২৪-০, ইমন ৩.৩-০-২১-২)।
মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী: ২০ ওভারে ১৩৯/৮ (শান্ত ১১, ইমন ৭, রনি ১৬, ফজলে মাহমুদ ১৯, সোহান ২৮, মেহেদি ২৬, সাইফ ৯, সানজামুল ১২, সানি ৭*, রেজাউর ৩*; শরিফুল ৪-০-২৮-০, নাহিদুল ৪-০-১৯-৩, রকিবুল ৪-০-৩১-১, মুস্তাফিজ ৪-০-২৩-১, মোসাদ্দেক ২-০-১৯-০, জিয়াউর ২-০-১৭-২)।
ফল: গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ৩৬ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: নাহিদুল ইসলাম।
-
বাটলারের বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে ফাইনালে রাজস্থান, কোহলিদের বিদায়
-
বিপর্যয়ের ব্যাখ্যা নেই কোচের কাছেও
-
কোচের আশা পূরণ করতে পারেননি মোসাদ্দেক
-
তিন সংস্করণেই এক নম্বর হবেন বাবর, কার্তিকের ভবিষ্যৎবাণী
-
শ্রদ্ধা আর স্মৃতিচারণে সাইমন্ডসকে শেষ বিদায়
-
মুমিনুলের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করবেন বিসিবি সভাপতি
-
মুমিনুলের ওপর ভরসা রাখছেন ডমিঙ্গো
-
আসিথার ক্যাচে লিটনের বিদায়ই ‘টার্নিং পয়েন্ট’
সর্বাধিক পঠিত
- ২৫ বছরের চেষ্টা বিফল, বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে কানাডা
- পরিসংখ্যানে রিয়াল-লিভারপুল ফাইনাল
- হতাশাজনক ব্যাটিংয়ে হেরে গেল বাংলাদেশ
- বিসিএসে বসা হলো না পিংকীর, সড়কে ঝরল প্রাণ
- রাশিয়া নিয়ে ‘খেলা থামান’, যুদ্ধ বন্ধ করুন: পশ্চিমাদের জেলেনস্কি
- ‘কোহলি-ধোনিদের মতো একই ধাতুতে গড়া নয় রাহুল’
- সিটিতে আসার আগে ম্যাচে ৬ গোল আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের!
- টিভি সূচি (শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২)
- উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবে চীন, রাশিয়ার ভিটো
- সাবেক ওসি সিদ্দিকের ‘৫১ কোটি টাকার সম্পত্তি’ বাজেয়াপ্তের আবেদন