‘ওপেনার’ রবির বোলিং চমক

এক যুগ ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটের শীর্ষ পর্যায়ে খেলছেন রবিউল ইসলাম রবি। দলের আসা-যাওয়া করতে কেটেছে অনেকটা সময়। কয়েক মৌসুমে পারফর্মও করেছেন বেশ। বরাবরই তার পরিচয় টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান, পাশাপাশি যিনি অফ স্পিন করেন। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে বেক্সিমকো ঢাকার হয়ে সেই রবিই চমক উপহার দিয়ে চলেছেন বল হাতে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2020, 03:07 AM
Updated : 11 Dec 2020, 03:07 AM

জেমকন খুলনার বিপক্ষে বৃহস্পতিবার ২৭ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন রবি। চলতি আসরের যা প্রথম ৫ উইকেট। এর আগে বরিশালের বিপক্ষে ম্যাচেও তিনি বল হাতে নায়ক হয়েছিলেন ২০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে।

অথচ এই টুর্নামেন্টের আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে কখনোই ৪-৫ উইকেট স্বাদ তিনি পাননি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে, খুলনার হয়ে জাতীয় লিগে টপ অর্ডারে ব্যাট করেন। এবারের আগে দেশের ক্রিকেটে প্রথম আলোচনায় এসেছিলেন ব্যাটিং দিয়েই। ২০১৭ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে রান করেছিলেন ৪৯১। পরের মৌসুমে তার ব্যাট থেকে এসেছিল ৪২১ রান।

ওই মৌসুমে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও ছিলেন বেশ সফল। ৪২.২ গড়ে ৪২২ রান করেছিলেন ২ সেঞ্চুরি। বল হাতে ৩৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে উইকেট কেবল ৯টি, ৫৯ লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে উইকেট ৩৪টি।

ব্যাটিংয়ে তিনি ধীরস্থির, সময় নিয়ে লম্বা ইনিংস খেলতে পছন্দ করেন। বোলিংয়ে নেই খুব একটা বৈচিত্র ও ধার। তাই টি-টোয়েন্টির খুব একটা উপযোগী তাকে মনে করা হয়নি এতদিন। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টির আগে ২০ ওভারের ম্যাচ খেলেছেন মোটে ৬টি।

এই আসরে দল পেলেও শুরুতে ছিলেন একাদশের বাইরে। পরে সুযোগ পেয়ে প্রথম ম্যাচে খুব বেশি কিছু করতে পারেননি। দ্বিতীয় ম্যাচ থেকেই বল হাতে গড়ে দিচ্ছেন পার্থক্য। ক্যারিয়ারের প্রথম ৭ টি-টোয়েন্টিতে তার ঝুলিতে ছিল মোটে ১ উইকেট। গত ৪ ম্যাচেই শিকার ১২টি!

মূলত প্রতিপক্ষে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের জন্যই তাকে ব্যবহার করছে ঢাকা। যথারীতি তার বোলিংয়ে বাড়তি কিছু চোখে পড়ছে না। নীরিহ দর্শন ওই ডেলিভারিগুলো ব্যাটসম্যানদের হাতছানি দিচ্ছে বড় শট খেলতে। একের পর এক ব্যাটসম্যান ধরা পড়ছেন সেই ফাঁদে। পাওয়ার প্লেতে, মাঝে জুটি ভাঙতে, এমনকি শেষ ভাগেও তিনি হয়ে উঠছেন দারুণ কার্যকর। সীমিত সামর্থ্য নিয়েও বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে পাচ্ছেন অভাবনীয় সাফল্য।

ঢাকার ব্যাটিং লাইন-আপে ওপরের দিকে ব্যাটিংয়ের সুযোগ সেভাবে মিলছে না তার। এই টুর্নামেন্টে তার ব্যাটসম্যান সত্ত্বাই হারানোর পথে। তবে তিনি নিজে তো আত্মপরিচয় ভুলতে পারেন না! ৫ উইকেট শিকারের পর ৩০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার বললেন, নতুন ভূমিকায় উচ্ছ্বসিত হলেও অবদান রাখতে চান আসল পরিচয়ে।

“ মূলত তো আমি ওপেনিং ব্যাটসম্যান, তার পরও যেখানে সুযোগ আসছে, আমি দলকে সাপোর্ট করার চেষ্টা করছি। দলের জন্য যেটা ভালো হচ্ছে, যেভাবে দলে অবদান রাখতে পারছি, নিজের কাছে অনেক ভালো লাগছে। সুযোগ পেলে ব্যাটিংয়েও চেষ্টা করব অবদান রাখার।”

প্রথম তিন ম্যাচ হারলেও পরে টানা চার জয়ে রবির দল ঢাকা নিশ্চিত করেছে শীর্ষ চারে থাকা। সেরা দুইয়ে থাকার লড়াইয়ে শনিবার তাদের প্রতিপক্ষ ফরচুন বরিশাল।