সৌম্যর ব্যাটিং ঝড়ে চট্টগ্রামের জয়

১০ ওভারে বিনা উইকেটে রান ৮৪। সেই দল কিনা শেষ পর্যন্ত দেড়শও করতে পারল না! মাঝারি স্কোর নিয়ে পরে বল হাতেও লড়াই করতে পারল না বরিশাল। দলের সেরা কয়েকজনকে বিশ্রাম দিয়েও চট্টগ্রাম অনায়াসে জিতে গেল সৌম্য সরকারের ঝড়ো ফিফটিতে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Dec 2020, 01:21 PM
Updated : 10 Dec 2020, 03:52 PM

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের শীর্ষ চারে থাকার গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে হেরে গেল ফরচুন বরিশাল। প্রাথমিক পর্বের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের জয় ৭ উইকেটে।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার বরিশালকে ১৪৯ রানে আটকে চট্টগ্রাম জিতে যায় ৮ বল বাকি রেখে।

দুই দফায় জীবন পেয়ে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৭ বলে ৬২ রানের ইনিংসে ম্যাচের সেরা সৌম্য।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বরিশালকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন সাইফ হাসান ও তামিম ইকবাল। সাইফ খেলেন ৩৩ বলে ৪৬ রানের ইনিংস। দুইবার জীবন পেয়ে তামিম করেন ৩৯ বলে ৪৩। কিন্তু শুরুর ধারা ধরে রাখতে পারেননি পরের ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ১০ ওভারে ৮৪ রান তোলা দল পরে ১০ ওভারে তোলে কেবল ৬৫।

বরিশালের দুই ওপেনারকে আউট করার পাশাপাশি মোসাদ্দেক হোসেন ৪ ওভারে দেন মাত্র ১৬ রান।

আগেই শীর্ষ দুইয়ে থাকা নিশ্চিত হওয়ায় এই ম্যাচে চট্টগ্রাম বিশ্রাম দেয় দারুণ ফর্মে থাকা লিটন দাস, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও রকিবুল হাসানকে।

আসরে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া মেহেদি হাসান শুরুতেই উইকেট এনে দিতে পারতেন চট্টগ্রামকে। কিন্তু এই পেসারের বলে তামিমের সহজ ক্যাচ শর্ট কাভারে ছেড়ে দেন সৈকত আলি।

মেহেদি বঞ্চিত একটু পর আবার। এবার ১৪ রানে তামিম ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে, চট্টগ্রাম অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন গ্লাভসে ঠিকমতো জমাতেই পারেননি।

তামিম যখন ধুঁকছেন, সাইফ তখন উড়ছেন। নাহিদুল ইসলামের অফ স্পিনে লং অন ও লংফ দিয়ে নান্দনিক দুটি ছয়ের পর ওই ওভারেই কাট করে মারেন বাউন্ডারি। পরে ওই মেহেদিকে দুটি বাউন্ডারি মেরে তামিম আভাস দেন ছন্দে ফেরার। বরিশাল পেয়ে যায় বড় স্কোরের ভিত।

সাইফের বিদায় দিয়ে বরিশালের খেই হারানোর শুরু। মোসাদ্দেকের বলে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন তিনি। দ্রুতই সঙ্গীকে অনুসরণ করে তামিম ফিরতি ক্যাচ দেন মোসাদ্দেককে।

আগের ম্যাচে রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি করা পারভেজ হোসেন ইমন এবার একটি করে চার-ছক্কায় ১৪ করেই থেমে যান। তৌহিদ হৃদয়, ইরফান শুক্কুররা পারেননি টিকতে। শেষ দিকে আফিফ হোসেনের ১৬ বলে ২৮ রানের ইনিংস বরিশালকে নিয়ে যায় দেড়শর কাছে।

লিটন না থাকায় সৌম্যর সঙ্গে চট্টগ্রামের ইনিংস শুরু করেন সৈকত আলি। ইনিংসের প্রথম বলে তার বাউন্ডারিতেই শুরু হয় রান তাড়া। দুজনই দুই পাশ থেকে খেলতে থাকেন শট। ১০ রানে সুমন খানের বলে সৌম্যর সহজ ক্যাচ ছাড়েন আফিফ। সৈকত জীবন পান ৩১ রানে।

৭৯ রানের উদ্বোধনী জুটি থামে সৈকতের বিদায়ে। ৩৩ বলে ৩৯ করে ফেরেন তিনি মেহেদী হাসান মিরাজের বলে। মিরাজকেই রিভার্স সুইপে ছক্কা মেরে সৌম্য ফিফটি স্পর্শ করে ৩২ বলে।

৬২ রান করে সৌম্য যখন ফিরলেন, চট্টগ্রামের জয় তখন নাগালে। মিঠুন ৩ রানে আউট হলেও জিততে কোনো সমস্যা হয়নি তাদের। মাহমুদুল হাসান জয় অপরাজিত থেকে যান ২৭ বলে ৩১ রান করে।

৭ ম্যাচে চট্টগ্রামের এটি ষষ্ঠ জয়। সমান ম্যাচে বরিশাল হারল পঞ্চমবার। রাজশাহী ও বরিশালের পয়েন্ট ৪। প্রাথমিক পর্বের শেষ দিনে শনিবার ফয়সালা হবে সেরা চারের শেষ দলের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৪৯/৬ ( সাইফ ৪৬, তামিম ৪৩, পারভেজ ১৪, হৃদয় ৪, আফিফ ২৮*, মিরাজ ১, ইরফান ২, সুমন ৬*; নাহিদুল ৩-০-২৮-০, মেহেদি ৪-০-৩২-০, সঞ্জিত ৪-০-২২-২, রুয়েল ২-০-২২-০, মোসাদ্দেক ৪-০-১৬-২, জিয়াউর ৩-০-২৫-২)।

গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম: ১৮.৪ ওভারে ১৫৩/৩ (সৈকত ৩৯, সৌম্য ৬২, মাহমুদুল ৩১, মিঠুন ৩, মোসাদ্দেক ১২*; মিরাজ ৪-০-৩২-১, তাসকিন ৪-০-৩১-০, সাকিল ২.৪-০-২৩-০, সুমন ৪-০-৩০-২, কামরুল ৩-০-২৭-০, সাইফ ১-০-৯-০)।

ফল: গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ৭ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: সৌম্য সরকার।