বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ফরচুন বরিশালকে ৭ উইকেটে হারিয়ে হতাশার প্রহর কাটাল বেক্সিমকো ঢাকা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বুধবার বরিশাল ২০ ওভারে করতে পারে মোটে ১০৮ রান।
তাদের প্রথম চার ব্যাটসম্যানই রবির শিকার। ঘরোয়া ক্রিকেটে তার মূল পরিচয় ব্যাটসম্যান, পাশাপাশি করেন অফ স্পিন। এই ম্যাচের আগে ৭ টি-টোয়েন্টিতে ছিল ১ উইকেট। সেই রবি এবার ৪ উইকেট নিলেন ২০ রানে।
পাশাপাশি দুর্দান্ত বোলিং করেন আরেক অফ স্পিনার নাঈম হাসান ও তরুণ বাঁহাতি পেসার শফিকুল ইসলামও। চার ওভারে নাঈম মাত্র ৮ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। শফিকুল মেডেন নেন ইনিংসের ১৬তম ওভার, ডাবল উইকেট মেডেন নেন ১৯তম ওভারে।
মন্থর উইকেটে এই রান তাড়ায় এক পর্যায়ে লক্ষ্য কঠিন হয়ে ওঠে ঢাকার। ইয়াসিরের ৩০ বলে অপরাজিত ৪৪ রানের ইনিংসে শঙ্কা কাটিয়ে তারা পায় কাঙ্ক্ষিত জয়।
ম্যাচের প্রথম ভাগে বরিশাল ব্যাটিংয়ে নামে টস হেরে। তামিমের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন আসরে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া সাইফ হাসান। দ্রুত রান না হলেও চার ওভার অটুট থাকে এই জুটি।
রবির পরের ওভারে আবার বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে আসেন আফিফ হোসেন। এই নিয়ে টুর্নামেন্টে দ্বিতীয়বার শূন্য রানে আউট হলেন তরুণ এই ক্রিকেটার। বাকি দুই ইনিংসে করতে পেরেছেন ২ ও ২৪।
তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে এরপর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন তামিম। নাসুম আহমেদকে ছক্কা মেরে বরিশাল অধিনায়ক পূরণ করেন টি-টোয়েন্টিতে ৬ হাজার রান। কিন্তু উইকেট ছুঁড়ে আসায় সামিল তিনিও। প্রান্ত বদলে বোলিংয়ে আসা রবির শর্ট বলে তুলে দেন ক্যাচ (৩১ বলে ৩১)।
ইরফান শুক্কুর, মেহেদী হাসান মিরাজরা ব্যর্থ আবার। এরপর বরিশালের ভরসা কেবল তৌহিদ হৃদয়। তরুণ এই ব্যাটসম্যানও পারেননি শেষ পর্যন্ত থাকতে। বিদায় নেন ৩৩ বলে ৩৩ করে।
রুবেল হোসেনের বলে ছক্কা মেরে ইনিংস শেষ করেন তাসকিন আহমেদ। এরপরও তাদের স্কোরবোর্ডের অবস্থা রুগ্ন।
দারুণ বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়ে ওপেন করে অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রবি। নন-স্ট্রাইক প্রান্তে রান আউট হয়ে যান তিনি নাঈম শেখের শট বোলারের হাত ছুঁয়ে স্টাম্পে লাগায়।
তিনে নেমে মুশফিকুর রহিম একমাত্র আগলে রাখেন। কিন্তু ভুগছিলেন তিনি রান বাড়াতে। এমনিতে ওপেনার হলেও এ দিন চারে নেমে তানজিদ হাসান তামিম রানের গতিতে কিছুটা দম দেন ২০ বলে ২২ রান করে।
১২ ওভার শেষে ঢাকার রান তখন ৩ উইকেটে ৫৪। মুশফিক ও ইয়াসিরের জুটি সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নেয় একটু একটু করে। বাড়তে থাকে উত্তেজনাও। শেষ ৪ ওভারে তাদের প্রয়োজন পড়ে ৩৪ রান।
এই সময়টায় আর চাপ ধরে রাখতে পারেনি বরিশালের বোলাররা। দুই ওভারে যখন প্রয়োজন ১৬ রান, তাসকিন আহমেদের ৫ বলের মধ্যে দুই ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করে দেন ইয়াসির। ৩ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত থেকে যান তিনি ৪৪ রানে। মুশফিক ২৩ রানে অপরাজিত ৩৪ বল খেলে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১০৮/৮ (তামিম ৩১, সাইফ ৯, পারভেজ ০, আফিফ ০, হৃদয় ৩৩, ইরফান ২৩, মিরাজ ১২, তাসকিন ৬*, তানভির ২, কামরুল ১*; শফিকুল ৩-২-১০-২, রুবেল ৪-০-৩০-১, নাসুম ৪-০-২৪-০, নাঈম ৪-১-৮-১, রবি ৪-০-২০-৪, মুক্তার ১-০-৯-০)।
বেক্সিমকো ঢাকা: ১৮.৫ ওভারে ১০৯/৩ (নাঈম ১৩, রবি ২, মুশফিক ২৩*, তানজিদ ২২, ইয়াসির ৪৪*; তাসকিন ৩.৩-০-২৮-০, মিরাজ ৪-০-১৩-১, তানভির ৪-০-২৫-০, আবু জায়েদ ৩-০-১৯-০, আফিফ ১-০-৪-০, কামরুল ৩-০-২০-০)।
ফল: বেক্সিমকো ঢাকা ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: রবিউল ইসলাম রবি