ইংল্যান্ডের রেকর্ড গড়া জয়ে হোয়াইটওয়াশড দ. আফ্রিকা

রাসি ফন ডার ডাসেন ও ফাফ দু প্লেসির শতরানের জুটিতে আশা জাগিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ইংল্যান্ডকে দিয়েছিল রেকর্ড রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ। দাভিদ মালান ও জস বাটলারের ব্যাটে সফরকারীরা অনায়াসে সেই চ্যালেঞ্জ জিতে হোয়াইটওয়াশ করেছে কুইন্টন ডি ককের দলকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2020, 07:34 PM
Updated : 1 Dec 2020, 08:50 PM

তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে মঙ্গলবার ৯ উইকেটে জিতেছে ইংল্যান্ড। ফন ডার ডাসেন ও দু প্লেসির অপরাজিত ফিফটিতে ৩ উইকেটে ১৯১ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। মালান ও বাটলারের ফিফটিতে হেসেখেলে ১৪ বল বাকি থাকতে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ওয়েন মর্গ্যানের দল।  

কেপ টাউনের নিউল্যান্ডসে এটাই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়। আগের রেকর্ড ইংল্যান্ডেরই ছিল। সিরিজের প্রথম ম্যাচে গত ২৭ নভেম্বর জিতেছিল ১৭৯ রান তাড়া করে। দ্বিতীয় ইনিংসে এই মাঠে আগের সর্বোচ্চ ছিল পাকিস্তানের ১৮৬, সেবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই রান করেও হেরেছিল তারা।

জয়-পরাজয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর দেখার ছিল মালান সেঞ্চুরি পান কি-না। এক সময় ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১ রান, সেঞ্চুরির জন্য মালানের ২। দলকে জেতালেও তিন অঙ্ক ছুঁতে পারেননি আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ব্যাটসম্যান। ৪৭ বলে ১১ চার ও ৫ ছক্কায় ৯৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

জেসন রয়ের আরেকটি ব্যর্থতার পর চতুর্থ ওভারে ক্রিজে আসেন মালান। শুরু থেকেই বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ছিলেন আক্রমণাত্মক। শুরুতে শট খেলে তিনিই বাড়ান রানের গতি। পরে শট খেলতে শুরু করেন বাটলারও।

তাদের জুটি জমে যাওয়ার পর রান এসেছে দ্রুত। তাতে বাধ দিতে পারেননি স্বাগতিকদের কেউ। কাগিসো রাবাদাকে হারিয়ে আরও শক্তি হারানো দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা সেভাবে ভাবাতে পারেনি দুই ব্যাটসম্যানকে।

অবিচ্ছিন্ন দ্বিতীয় উইকেটে ১৬৭ রানের জুটিতেই হয়ে যায় কাজ। দ্বিতীয় উইকেটে এটি বিশ্বরেকর্ড। আগের রেকর্ড ছিল শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারার ১৬৬, ২০১০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

মালানকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া বাটলার অপরাজিত থাকেন ৬৭ রানে। এই কিপার-ব্যাটসম্যানের ৪৬ বলের ইনিংসে ৫টি ছক্কার পাশে চার তিনটি। 

চমৎকার ইনিংসের জন্য ম্যাচ ও সিরিজ সেরা হন মালান। আগের ম্যাচেও ফিফটিতে ব্যবধান গড়ে দিয়ে জিতেছিলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দ্রুতই ফেরেন কুইন্টন ডি কক। ক্রিস জর্ডানকে পুল করে ওড়ানোর চেষ্টায় ক্যাচ দেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক।

ভালো শুরুটা বড় করতে পারেননি আরেক ওপেনার টেম্বা বাভুমা। দুই ছক্কা ও এক চারে ২৬ রান করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানকে থামানোর পর রিজ হেনড্রিকসকে দ্রুত ফেরান বেন স্টোকস।

দশম ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর তখন ৩ উইকেটে ৬৪। সেখান থেকে দলকে দুইশ রানের কাছে নিয়ে যান ফন ডার ডাসেন ও দু প্লেসি। অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেটে দুই জনে গড়েন ১২৭ রানের জুটি।

জুটিতে অগ্রণী ছিলেন ফন ডার ডাসেন। ২৩ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন তিনি, জুটির ফিফটি আসে ৩৬ বলে। পরে শট খেলতে শুরু করেন দু প্লেসিও। জুটির রান তিন অঙ্কে যায় ৫৭ বলে।

৩২ বলে পাঁচটি করে ছক্কা ও চারে ৭৪ রান করেন ফন ডার ডাসেন। সিরিজে দ্বিতীয় ফিফটি পাওয়া দু প্লেসি ৩৭ বলে তিন ছক্কা ও পাঁচ চারে করেন ৫২ রান। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৯১/৩ (ডি কক ১৭, বাভুমা ৩২, হেনড্রিকস ১৩, দু প্লেসি ৫২*, ফন ডার ডাসেন ৭৪*; স্যাম কারান ৩-০-৩৫-০, আর্চার ৪-০-৪৪-০, জর্ডান ৪-০-৪২-১, টম কারান ২-০-২৪-০, রশিদ ৪-০-২০-০, স্টোকস ৩-০-২৬-২)

ইংল্যান্ড: ১৭.৪ ওভারে ১৯২/১ (রয় ১৬, বাটলার ৬৭*, মালান ৯৯*; লিন্ডে ৪-০-২৬-০, নরকিয়া ৪-০-৩৭-১, সিপামলা ২.৪-০-৪৫-০, এনগিডি ৩-০-২৩-০, শামসি ৪-০-৫৭-০)

ফল: ইংল্যান্ড ৯ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ৩-০তে জয়ী ইংল্যান্ড

ম্যান অব দা ম্যাচ: দাভিদ মালান

ম্যান অব দা সিরিজ: দাভিদ মালান।