মাঠে নেমেই খুলনার নায়ক শুভাগত

দলের প্রথম তিন ম্যাচে শুভাগত হোম ছিলেন দর্শক। অপেক্ষায় ছিলেন মাঠে নামার। সুযোগ পেয়ে ঠিকই ব্যবধান গড়ে দিলেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। ব্যাটিংয়ে মহামূল্য ছোট্ট এক ঝড়ের পর বল হাতে তার শিকার তিন উইকেট। ঢাকাকে টানা তৃতীয় হারের স্বাদ দিয়ে খুলনার প্রাপ্তি দ্বিতীয় জয়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2020, 02:41 PM
Updated : 1 Dec 2020, 03:30 AM

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে বেক্সিমকো ঢাকা ও জেমকন খুলনার লড়াই জমল না খুব একটা। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সোমবার ১৪৬ রানের পুঁজি নিয়েও খুলনার জয় ৩৭ রানে।

আট নম্বরে নেমে ৫ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে দেড়শর কাছে নিয়ে যান শুভাগত। ম্যাচের দ্বিতীয় ভাগে সফল তিনি অফ স্পিনেও। প্রথম ওভারে দলকে এনে দেন ব্রেক থ্রু। মাঝে ফেরান মূল বাধা হয়ে থাকা মুশফিকুর রহিমকে। ম্যাচের শেষ উইকেটও আসে তার হাত ধরে।

জয়টা বেশ অনায়াস হলেও খুলনার শুরুটা ছিল না সহজ। ব্যাটিংয়ে নামে তারা টস হেরে। সাকিব আবার ইনিংস উদ্বোধন করেন, সঙ্গে এনামুল হক। তবে বদলায়নি দুজনের কারও ভাগ্য।

নাসুম আহমেদের স্টাম্প সোজা বল কাট করতে গিয়ে বোল্ড হন এনামুল (৮ বলে ৫)। রুবেল হোসেনের ভেতের ঢেকা গতিময় বলে বোল্ড সাকিব (৯ বলে ১১)।

চার ম্যাচে এই দুজনেরই মোট রান ৪১।

তিনে নামা জহুরুল ইসলামকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন অভিষিক্ত বাঁহাতি পেসার শফিকুল ইসলাম।

৬ ওভার শেষে খুলনার রান ছিল ৩ উইকেটে ৩৫। এই নিয়ে আসরের চার ম্যাচের একটিতেও পাওয়ার প্লেতে ৪০ ছুঁতে পারল না খুলনা।

তাদের বিপদ আরও ঘনীভূত হতে পারত, যদি সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারত ঢাকার ফিল্ডাররা। ৮ রানে রান আউট হওয়া থেকে বেঁচে যান ইমরুল কায়েস। ৮ রানেই নাঈম হাসানের বলে নাঈম শেখ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ।

রক্ষা পেয়ে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন জুটি। রানের গতি যদিও খুব ভালো ছিল না। ৫৬ রানের জুটি আসে ৫১ বলে। ২৭ বলে ২৯ রান করে ইমরুল এলবিডব্লিউ হন নাঈমকে স্লগ সুইপ খেলার চেষ্টায়।

মাহমুদউল্লাহ স্বস্তিতে খেলতে পারছিলেন না এরপরও। প্রথম বাউন্ডারির দেখা পান ৩০তম বলে, সেটিও সীমানার ফিল্ডার বল ছেড়ে দেওয়ায়। ৩০ রানে আবার রক্ষা পান আকবর আলিকে ক্যাচ দিয়ে। ৩৭ রানে তার ফিরতি ক্যাচ অল্পের জন্য নিতে পারেননি মুক্তার আলি।

শেষ দিকেও রানের গতি খুব একটা বাড়াতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। বিদায় নেন ৪৭ বলে ৪৫ করে। তবে ফর্মে থাকা আরিফুল ১১ বলে করেন ১৯ রান। এরপর শুভাগতর ওই ক্যামিও। শেষটা ভালো হওয়ায় দলও হয়ে ওঠে আত্মবিশ্বাসী।

ঢাকা রান তাড়ায় হোঁচট খায় প্রথম ওভারেই। শুভাগতকে বেরিয়ে এসে চার মারার পরের বলেই আবার একই চেষ্টায় বোল্ড হয়ে যান তানজিদ হাসান তামিম।

আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন সাকিব। পরের ওভারে যখন রবিউল ইসলাম রবিকে এলবিডব্লিউ করেন শহিদুল ইসলাম, ১৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন কাঁপছে ঢাকা।

নিজের প্রথম দুই ওভারই মেডেন নিয়ে ঢাকাকে চেপে ধরেন সাকিব।

ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলি চৌধুরি। চতুর্থ উইকেটে ৫৭ রানের জুটি গড়েন দুজন। তবে জুটিতে বল লেগে যায় ৫৩, প্রয়োজনীয় রান রেট তাই বাড়তেই থাকে।

রান বাড়ানোর দাবি মেটাতে গিয়েই কাটা পড়েন দুজন। হাসান মাহমুদের বলে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ইয়াসির (২৯ বলে ২১), স্টাম্প উড়ে যায় কিপারের কাছে। শুভাগতকে স্লগ সুইপ করে মিড উইকেটে ধরা পড়েন মুশফিক (৩৫ বলে ৩৭)।

ঢাকার আশার সেখানেই সমাপ্তি। এই নিয়ে টুর্নামেন্টে তিন ম্যাচের তিনটিই হেরে পয়েন্ট টেবিলে তারা এখন তলানিতে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জেমকন খুলনা: ২০ ওভারে ১৪৬/৮ (এনামুল ৫, সাকিব ১১, জহুরুল ৪, ইমরুল ২৯, মাহমুদউল্লাহ ৪৫, আরিফুল ১৯, শামীম ১, শুভাগত ১৫*, শহিদুল ১; রুবেল ৪-০-২৮-৩, শফিকুল ৪-০-৩৪-২, নাসুম ৪-০-১০-১, নাঈম ৩-০-১৬-১, মুক্তার ৪-০-৩৯-০, রবি ১-০-৭-০)।

বেক্সিমকো ঢাকা:  ১৯.২ ওভারে ১০৯ (তানজিদ ৪, নাঈম ১, রবি ৪, মুশফিক ৩৭, ইয়াসির ২১, আকবর ৪, মুক্তার ৪, নাঈম ৩, নাসুম ৭, রুবেল ৪*, শফিকুল ৫; শুভাগত ৩.২-০-১৩-৩, আল আমিন ৪-০-২৫-০, সাকিব ৪-২-৮-১, শহিদুল ৪-০-৩০-৩, হাসান ৪-০-২২-২)।

ফল: জেমকন খুলনা ৩৭ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: শুভাগত হোম