কামরুল-মিরাজের দারুণ বোলিং, তামিমের ম্যাচ জেতানো ইনিংস

চার ছক্কায় ম্যাচ হারানোর হতাশা পেছনে ফেলে দারুণ বোলিং উপহার দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। শেষ দিকে জ্বলে উঠলেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। নিয়ন্ত্রিত বোলিং-ফিল্ডিংয়ের পর তামিম ইকবালের দুর্দান্ত অপরাজিত ইনিংসে জিতল ফরচুন বরিশাল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Nov 2020, 02:39 PM
Updated : 28 Nov 2020, 04:28 PM

মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীকে প্রথম হারের স্বাদ দিয়ে প্রথম জয়ের দেখা পেল ফরচুন বরিশাল। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শনিবার বরিশালের জয় ৫ উইকেটে।

রাজশাহীকে ১৩৩ রানে আটকে রেখে বরিশাল ছিল বড় জয়ের পথেই। শেষ দিকে তারা দ্রুত কিছু উইকেট হারালেও তামিম ফেরেন দলকে জিতিয়ে। বরিশাল অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৬১ বলে অপরাজিত ৭৭।

ম্যাচের প্রথম ভাগে বল হাতে শেষ ওভারে ৩ উইকেটসহ কামরুল রাব্বির শিকার ২১ রানে ৪ উইকেট। ৪ ওভারের স্পেলে ১৮ রানে মিরাজ নেন ২টি।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা রাজশাহী পাওয়ার প্লেতে উইকেট হারায়নি একটিও। তবে রানও হয়নি খুব বেশি। ৬ ওভারে আসে কেবল ৩৯ রান। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আগ্রাসী কিছু শট খেললেও ঠিকমতো টাইমিং পাচ্ছিলেন না আরেক ওপেনার আনিসুল ইসলাম ইমন।

আগ্রাসনের পথে হেঁটেই উইকেট হারান শান্ত। আবু জায়েদের বলে ক্যাচ তুলে দেন মিড অফে তামিম ইকবালের হাতে (১৯ বলে ২৪)।

রাজশাহীর পথ হারানোর সেই শুরু। মিরাজের বলে ব্যাট-প্যাডের মধ্যে বিশাল ফাঁক রেখে বোল্ড হন রনি তালুকদার। চোখধাঁধানো এক ফ্লিকে বাউন্ডারিতে শুরুর পর মোহাম্মদ আশরাফুল বিদায় নেন নিজের দোষে রান আউটে।

দীর্ঘক্ষণ উইকেটে থেকেও ছন্দ না পেয়ে ওপেনার ইমন শেষ পর্যন্ত বিদায় নেন মিরাজকে উইকেট উপহার দিয়ে (২৭ বলে ২৪)। বিপদ আরও বাড়িয়ে উইকেট ছুঁড়ে আসেন অভিজ্ঞ নুরুল হাসান সোহান। একাদশ ওভারে রাজশাহীর রান তখন ৫ উইকেটে ৬৩।

সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নেয় মেহেদি হাসান ও ফজলে মাহমুদ রাব্বি। ষষ্ঠ উইকেটে দুজন গড়েন ৫০ বলে ৬৫ রানের জুটি।

প্রথম ম্যাচের মতোই বিপর্যয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে পাল্টা আক্রমণে দলের রান কিছু বাড়ান মেহেদি। সেদিনের মতো ফিফটি অবশ্য করতে পারেননি। এবার করেন ৩ ছক্কায় ২৩ বলে ৩৪।

এক প্রান্ত আগলে রেখে ফজলে রাব্বি শেষের আগের ওভারে আউট হন ৩২ বলে ৩১ রান করে।

রান তাড়ায় বরিশাল মেহেদী হাসান মিরাজকে আবারও হারায় দ্রুত। দ্বিতীয় উইকেটে তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমনের জুটি দলকে এগিয়ে দেয় অনেকটা পথ। পারভেজ অবশ্য ২ রানে বেঁচে যান সহজ ক্যাচ দিয়েও।

শুরুটা একটু মন্থর হলেও পাওয়ার প্লের শেষ দুই ওভারে ঝড় তোলেন দুজন। পঞ্চম ওভারে মেহেদিকে দুটি বাউন্ডারি মারেন তামিম, ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে একটি ছক্কা ও দুটি চার মারেন পারভেজ। এই ওভার থেকে রান আসে ২৩।

পরের ওভারে তরুণ পেসার রেজাউর রহমানকে টানা তিনটি বাউন্ডারি মারেন তামিম। চাপ তাতে সরে যায় অনেকটা।

৬১ রানের এই জুটি ভাঙেন মেহেদি। ১৭ বলে ২৩ করে বোল্ড হন পারভেজ।

তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে এরপর দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নন তামিম। তাদের জয় যখন মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার, তখনই খানিকটা হোঁচট। মুকিদুল ইসলামের বল আকাশে তুলে আউট হন হৃদয় (২৪ বলে ১৭)। আফিফ হোসেন ফিরে যান প্রথম বলেই। রান আউট হয়ে যান ইরফান শুক্কুর।

তবে তামিম চেপে বসতে দেননি চাপ। শেষ দিকে শান্ত ও মুকিদুলের বলে দুটি ছক্কায় নিশ্চিত করে দেন ম্যাচের ভাগ্য। ১০ চার ও ২ ছক্কার ইনিংস খেলে জয়ের তৃপ্তিতে মাঠ ছাড়েন বরিশাল অধিনায়ক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মিনিস্টার রাজশাহী: ২০ ওভারে ১৩২/৯ (শান্ত ২৪, ইমন ২৪, রনি ৬, আশরাফুল ৬, ফজলে রাব্বি ৩১, সোহান ০, মেহেদি , ফরহাদ ১, রেজাউর ২, মুকিদুল ১* ; তাসকিন ৪-০-১৯-১, সুমন ৩-০-৩৩-০, আবু জায়েদ ৪-০-২৯-১, মিরাজ ৪-০-১৮-২, কামরুল রাব্বি ৪-০-২১-৪, আফিফ ১-০-১১-০)।

ফরচুন বরিশাল: ১৯ ওভারে ১৩৬/৫ (তামিম ৭৭*, মিরাজ ১, পারভেজ ২৩, হৃদয় ১৭, আফিফ ০, ইরফান ৩, মাহিদুল ৪*; রেজাউর ২-০-১৭-০, ইবাদত ৩-০-১৯-১, মেহেদি ৪-০-৩২-১, ফরহাদ ৩-০-১৭-০, মুকিদুল ৪-০-২৭-২, শান্ত ৩-০-২০-০)।

ফল: ফরচুন বরিশাল ৫ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: তামিম ইকবাল