‘মার না খেলে কী ভালো বোলার হওয়া যায়!’
ক্রীড়া প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 25 Nov 2020 05:31 PM BdST Updated: 25 Nov 2020 05:31 PM BdST
‘মার না খেলে কী ভালো বোলার হওয়া যায়…!’, ফোন কল রিসিভ করেই এই কথা বলে বেশ এক চোট হেসে নিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ফরচুন বরিশালের অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার ফোন কল পেয়েই বুঝে গেছেন, তাকে কোন প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হবে। তার হাসি ও রসিকতায় ফুটে উঠল, আগের রাতের দুঃসহ অভিজ্ঞতার ধাক্কা সামলে নিতে পেরেছেন অনেকটা।
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে মঙ্গলবার জেমকন খুলনার বিপক্ষে ম্যাচে ওই ‘মার খাওয়ার’ আগ পর্যন্ত মিরাজ বল হাতে ছিলেন দুর্দান্ত। প্রথম তিন ওভারে ১২ রান দিয়ে নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহর উইকেট। দারুণ ফিল্ডিংও করেছেন। শেষ ওভারে পাল্টে যায় পুরো চিত্র।
জয়ের জন্য খুলনার প্রয়োজন ছিল ২২ রান। মিরাজের ৫ বলের মধ্যে ৪টি ছক্কা মেরে আরিফুল হক অভাবনীয় এক জয় এনে দেন খুলনাকে।
এরকম ছক্কার পর ছক্কা হজম এবং এভাবে দলের হারের কারণ হওয়া, দুটিই মিরাজের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। স্বাভাবিকভাবেই বিষন্ন হয়ে পড়েছিলেন ম্যাচ শেষে। তবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানালেন, অধিনায়ক ও সতীর্থদের পাশে পেয়ে আবার চাঙা হয়েছে মন।
“কোনো লেভেলের ক্রিকেটেই এরকম আগে করেছি বলে মনে পড়ে না। ছোটখাটো ভুল বা টুকটাক অবদান রাখতে পারিনি বলে হয়তো দল হেরেছে অনেকবারই। কিন্তু এভাবে আমার এক ওভারেই দল হেরে গেছে, এরকম আগে হয়নি।”

ওভারের শুরুতে আত্মবিশ্বাসীই ছিলেন মিরাজ। ২২ রান তো অনেক! তবে রাতের শিশির একটু কঠিন করে তুলেছিল তার কাজ। পরিস্থিতির চাপেও পরে হারিয়ে ফেলেছিলেন নিজেকে।
“শিশিরের কারণে বল গ্রিপ করা একটু কঠিন ছিল বটে। তবে চার ছক্কা তো শুধু সেটার কারণেই নয়। বোলিংও ভালো করতে পারিনি। ওভার দা উইকেট থেকে রাউন্ড দা উইকেটে এসে অ্যাঙ্গেল বদলানোর চেষ্টা করেছি, লেংথ বদলের চেষ্টা করেছি। কাজ হয়নি। আরিফুল ভাইকেও কৃতিত্ব দিতে হবে। দারুণ খেলেছেন, একটা ছক্কাও মিসহিটে হয়নি।”
“আসলে ওই সময় একটু তাড়াহুড়ো করে ফেলেছি। তামিম ভাই এসে কথা বলেছেন, একটু সময় নিছি তখন। তবে ডেলিভারিগুলোর মধ্যে আরও সময় নেওয়া উচিত ছিল ১-২ মিনিট করে। খেলাটাকে আরেকটু স্লো করা দরকার ছিল। কিন্তু আমি কিসের ভেতর যেন ঢুকে গিয়েছিলাম। একের পর এক দ্রুত বল করে গেছি।”
এই যে উপলব্ধি, এটাকেই ভবিষ্যতের জন্য বড় এক শিক্ষা মানছেন ২৩ বছর বয়সী অলরাউন্ডার।
“জীবনে সবই শিক্ষা। ভালো করলেও শেখার আছে, খারাপ করলে তো আরও বেশি। অনেকে এটা ভুলে যেতে বলবেন। তবে আমি শিক্ষাটা মনে রাখতে চাই। ভবিষ্যতে আবার এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়লে তখন কাজে লাগাতে চাই।”
পাওয়ার প্লেতে বা মাঝের ওভারে বোলিং করলেও স্লগ ওভারে বোলিং করা খুব একটা হয় না মিরাজে। এবারের অভিজ্ঞতার পর ডেথ ওভারের বোলারদের ওপর তার শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে প্রবলভাবে।
“ম্যাচের পর হোটেলে ফিরে রাতেই মুস্তাফিজের রুমে গিয়ে বলেছি, ওদের মতো যারা শেষ দিকে নিয়মিত বল করে, তাদের প্রতি সম্মান অনেক বেড়ে গেছে আমার। ডেথ ওভারে বোলিং করা খুব কঠিন। অনেক স্কিলের ব্যাপার, চাপ সামলানোর ব্যাপার।”
“আমি নিজেও অনেক সময় আগে হয়তো মনে মনে বলেছি, ‘কী বল করতেছে এসব, কেন মার খাচ্ছে…।’ এখন বুঝেছি এরকম চাপের কিছু আর নেই। দিনের পর দিন ভীষণ কঠিন কাজ করে চলেছে ওরা।”
রসিকতায় শুরু করেছিলেন মিরাজ, শেষও করলেন হাসতে হাসতেই একটি কথা বলে, “ভাই, দলকে যে হারাতে জানে, সে জেতাতেও জানে। দেখবেন সামনে…।”
শুধুই কি রসিকতা? নাকি প্রতিজ্ঞাও!
সর্বাধিক পঠিত
- মিনিকেট চাল: এক ফাঁকির নাম
- ‘ভেতরের কথা বাইরে কীভাবে আসে’, কৌতূহল সাকিবের
- প্রত্যাশিত জয়ে বাংলাদেশের ‘৩০’
- এবারের এসএসসির পুনর্বিন্যস্ত সিলেবাস প্রকাশ
- ‘মেসিকে বোঝানোর চেষ্টা করছে পিএসজি’
- আমার পছন্দমতো সবকিছু হতে হবে, সেটা নয়: সাকিব
- এবার অটোপাস দেওয়া সম্ভব না: শিক্ষামন্ত্রী
- বাংলাদেশের প্রথম নৌপ্রধানের মৃত্যু
- দারুণ ছন্দে এগিয়ে চলেছেন ডি ইয়ং
- দলের ক্ষুধায় মন ভরেছে তামিমের