এই তুলনাটা মানিয়ে যায় খুব সহজেই। ম্যাক্সওয়েলের মতোই কিমিন্সের হাতে প্রচণ্ড জোর। বল আছড়ে ফেলেন সীমানার অনেক বাইরে। টাইমিং দুর্দান্ত। সবচেয়ে বড় মিল রিফ্লেক্স, সাহসিকতা আর ব্যাটিংয়ের দর্শনে। ক্রিকেটীয় সব শটের পাশাপাশি যখন-তখন অপ্রথাগত শট খেলতেও জুড়ি নেই কিমিন্সের।
মেয়েদের বিগ ব্যাশের আগের দুটি আসরেই ব্রিজবেন হিটের শিরোপা জয়ের রান এসেছে কিমিন্সের ব্যাট থেকে। তবে এবার যেন তিনি সেরা বিধ্বংসী চেহারায় আছেন। মেলবোর্ন স্টার্সের বিপক্ষে শনিবার কিমিন্স যখন উইকেটে গেলেন, জয়ের জন্য দলের প্রয়োজন ছিল ২০ বলে ২৩। সেখান থেকে হুট করেই ব্রিজবেন দ্রুত হারিয়ে বসে ৩ উইকেট। কিন্তু কিমিন্স ৫ বলে অপরাজিত ১৯ রান করে সহজেই জিতিয়ে দেন দলকে। তার বিশাল এক ছক্কা আছড়ে পড়ে গ্যালারিতে।
আগের ম্যাচে ৩ ছক্কায় ১৭ বলে অপরাজিত ৪০ রান করে তিনি জয় এনে দেন দলকে। এর আগের দুই ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ১০ বলে ২৩ ও ১৭ বলে ৪০ রান। এই চার ইনিংসে তার স্ট্রাইক রেট ২৫১!
কিমিন্সের এমন ফর্ম ও ব্যাটিং স্কিলের মেলে ধরা পসরায় মুগ্ধ ব্রিজবেনের কোচ নফকে।
“ সে অবশ্যই আমাদের এক্স-ফ্যাক্টর। অনেক ক্রিকেটারকেই আমরা দেখি, যারা এক ঘরানায় খেলে। কিন্তু লরা পুরো ভিন্ন ধরনে খেলে।”
“ আমার চোখে সে মেয়েদের ক্রিকেটের ম্যাক্সওয়েল। সে মাঠের বাইরে বল ফেলতে পারে, রিভার্স সুইপ খেলে, রিভার্স ল্যাপ করে… সে ছুটতে থাকলে তাকে আটকানো খুব, খুব কঠিন।”
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনও খেলার স্বাদ পাননি ৩০ বছর বয়সী কিমিন্স। ক্রিকেট নিয়ে খুব বেশি মনোযোগী ছিলেন না। তবে নফকে জানালেন, এখন ক্রিকেট নিয়ে কিমিন্সের ভাবনা বেশ বদলেছে।
“ তার ক্রিকেট ভ্রমণ বেশ কৌতুহল জাগানিয়া। এখন সে নিজের স্কিলের ওপর আস্থা রাখতে শুরু করেছে। এখন সে অনেক পরিণত।”
“ পেশায় সে জরুরি সেবার নার্স, ক্রিকেট সবসময় মজার জন্যই খেলেছে। কিন্তু গত বছর দেড়েক ধরে সে ক্রিকেট মাঠে নিজের সেরাটা তুলে ধরতে বেশ মনোযোগী।”
লরা কিমিন্স আগে পরিচিত ছিলেন লরা হ্যারিস নামে। অস্ট্রেলিয়ার মেয়েদের জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য ও ব্রিজবেন হিট সতীর্থ ডেলিসা কিমিন্সের সঙ্গে প্রায় ৫ বছরের সম্পর্কের পর গত অগাস্টে আবদ্ধ হন বিবাহবন্ধনে তিনি। এরপর নামও বদলে নেন।
লরার ছোট বোন গ্রেস হ্যারিসও ক্রিকেটার, তিনিও খেলেন ব্রিজবেন হিটে। খেলেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও।
এবারের বিগ ব্যাশের আগে করোনাভাইরাসের প্রকোপের সময় লরা কিমিন্স বেশ ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন কুইন্সল্যান্ডের লগান হাসপাতালে। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ছুটি সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে তখন রোগীদের সেবায় নিয়োজিত হয়েছিলেন তিনি।