পিএসএল ফাইনাল শেষে বুধরাত রাতে দেশে ফিরেছেন তামিম। করাচি থেকে কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে আসায় আপাতত নিজ বাসায় কোয়ারেন্টিনে আছেন তিনি।
শুক্রবার সকালে তার করোনাভাইরাস পরীক্ষা করানো হবে। রাতেই পেয়ে যাওয়ার কথা ফল। নেগেটিভ হলে পরদিন তিনি টিম হোটেলে উঠবেন বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের জন্য, ঢুকে যাবেন জৈব-সুরক্ষা বলয়ে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এই অনুমতি আগেই নিয়ে রেখেছে বিসিবি।
পিএসএলে তামিম খেলেছেন লাহোর কালান্দার্সের হয়ে। সফর শেষ হতে পারত এক ম্যাচেই। কিন্তু পরপর দুটি বৈতরণী পার হয়ে লাহোর খেলে ফাইনাল। তামিম তাই খেলতে পেরেছেন সম্ভাব্য সবচেয়ে বেশি ম্যাচ, তিনটি।
কোভিড বিরতির পর গত মাসে প্রেসিডেন্ট’স কাপ ওয়ানডে খেলেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্ট ছিল সেটিও। তবে নিজেদের মধ্যে খেলা আসরে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাত্রা নিয়ে সংশয় থাকেই। পিএসএলের ম্যাচগুলি খেলতে পারা তাই অনেক বড় সুযোগ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেন তামিম।
“এবার নিয়ে চার মৌসুম খেললাম পিএসএলে। প্রতিবারই দেখেছি আগের চেয়ে আরও ভালো হয়েছে, ক্রিকেটীয় মানের দিকে বলুন কিংবা আয়োজনের দিক থেকে। আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া ছিল এবার এখানে খেলতে পারা। আট মাস ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলি না, এই ধরনের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটকে বলা যায় আন্তর্জাতিক মানের সবচেয়ে কাছাকাছি।”
খুব ভালো অবস্থায় থাকলেও পিএসএলে তামিমের পারফরম্যান্স খুব ভালো নয়। খুব খারাপও যদিও নয়। তিনটি ম্যাচেই দারুণ কিছু শট খেলেছেন, ইঙ্গিত দিয়েছেন বড় কিছুর। তবে শেষ পর্যন্ত বড় স্কোর গড়তে পারেননি। তামিমের আক্ষেপের জায়গাও সেখানেই।
“অনেক ভালো করার সুযোগ ছিল, ভালো করা উচিত ছিল। যেভাবে শুরু করেছিলাম, বড় ইনিংস খেলার সুযোগ ছিল। এটা নিয়েই আফসোস আছে। শুরুটা যেভাবে করতে চেয়েছিলাম, পেরেছি। কোনো ম্যাচেই শেষটা ঠিকমতো করতে পারিনি। দুটি ম্যাচে বা অন্তত একটি বড় স্কোর গড়তে পারলেও ভালো লাগত। ”
তিন ম্যাচে তামিমের ব্যাটিং ছিল দুইরকম। প্রথম দুই ম্যাচে শুরু থেকেই ছিলেন বেশ আগ্রাসী। আউট হয়েছেন ১০ বলে ১৮ ও ২০ বলে ৩০ করে। ফাইনালে শুরুতে টাইমিং পেতে ধুঁকেছেন বেশ, পরে চেষ্টা করেছেন পুষিয়ে নিতে। ৩৫ রান করতে খেলেন ৩৮ বল।
তারপরও তামিমের ওই ৩৫ রানই ছিল ফাইনালে লাহোরের সর্বোচ্চ। ২০ ওভারে কেবল ১৩৪ রান তুলতে পারে লাহোর। বাবর আজমের ৬৩ রানের অপরাজিত ইনিংসে করাচি কিংস ৮ বল বাকি থাকতে জিতে যায় ৫ উইকেটে।
“আগের দুই ম্যাচে খুব ভালো ব্যাটিং উইকেট ছিল। কিন্তু ফাইনালের উইকেট ছিল ধীরগতির, স্টিকি। বাউন্স উঠানামা করছিল। ২ ওভার ব্যাটিংয়ের পরই আমি ড্রেসিং রুমে ম্যাসেজ পাঠিয়েছিলাম যে উইকেট এরকম। এজন্য আমি আর ফখর জামান খুব বেশি ঝুঁকি নেইনি। ১৫০-১৬০ রান হলেই হয়তো আমরা জিততাম।”
“১০ ওভারে আমাদের রান ছিল ৭০ (৬৮), ১০ উইকেটই ছিল তখন, পরের ১০ ওভারে ৮০-৮৫ সহজেই করার কথা। সেটা আমরা পারিনি। আমি সীমানায় আউট হলাম, পরে সবাই বড় শট খেলতে গিয়ে আউট। সবার মাথায় হয়তো ১৭০-১৮০ রান ঢুকে গিয়েছিল। তারপর ১৩৫ রানেও হয়তো আরও লড়াই হতো, যদি বাবর আজমকে দ্রুত আউট করা যেত। ওই উইকেটে ওদের আর কোনো ব্যাটসম্যান ভালো খেলতে পারেনি, কেবল বাবর দারুণ খেলে জিতিয়ে দিয়েছে।”
ফাইনাল শেষে লাহোরের কোচ আকিব জাভেদও ইএসপিএনক্রিকইনফোকে বলেন, উইকেট পড়তে তারা ভুল করেছিলেন আর ব্যাট হাতে বাবর আজম গড়ে দিয়েছেন মূল পার্থক্য।
আক্ষেপগুলো এখন অতীত, প্রাপ্তিগুলো তামিমের সামনে এগোনোর সহায়। সামনের চ্যালেঞ্জ বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ। প্লেয়ার্স ড্রাফটে খুব ভালো দল গড়তে পারেনি ফরচুন বরিশাল, ভরসার জায়গা বলতে তামিমই। মঙ্গলবার টুর্নামেন্টের প্রথম দিনে তামিমদের প্রতিপক্ষ ড্রাফটে সবচেয়ে ভালো দল গড়া জেমকন খুলনা।