পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টির পর জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট জানায়, এই সিরিজই শেষ সাবেক অধিনায়ক চিগুম্বুরার। চোটের সঙ্গে লড়াইয়ের ক্লান্তি আর নতুনদের সুযোগ দিতেই তার এই সিদ্ধান্ত।
৩৪ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার দেশের হয়ে খেলেছেন ২১০ ওয়ানডে। জিম্বাবুয়ের হয়ে এই সংস্করণে তার চেয়ে বেশি খেলেছেন কেবল ফ্লাওয়ারদের দুই ভাই অ্যান্ডি ও গ্র্যান্ট। পাকিস্তান সিরিজের আগে খেলেছেন ৫৪ টি-টোয়েন্টি। এই সংস্করণে ১৪২.৭১ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৮৫২ রান।
ওয়ানডেতেই দেখা গেছে চিগুম্বুরার সেরাটা। ছিলেন কার্যকর একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার। শেষ দিকে তুলতে পারতেন ঝড়। বড় শট খেলে ঘুরিয়ে দিতে পারতেন মোড়। আফ্রিকান একাদশের তিনটি ওয়ানডে খেলা চিগুম্বুরা এই সংস্করণে করেছেন চার হাজার ২৮৯ রান। গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার ছাড়া কেবল তারই জিম্বাবুয়ের হয়ে আছে চার হাজার রান ও ১০০ উইকেটের ডাবল।
স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের জন্য হারান বলের গতি। মূল বোলার থেকে অনেকটা ষষ্ঠ বোলারে পরিণত হন চিগুম্বুরা। শেষ দিকে আর বোলিং করেননি তিনি। খেলেছেন পুরোপুরি ব্যাটসম্যান হিসেবে।
জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের টালমাটাল এক সময়ে ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অভিষেক হয় চিগুম্বুরার। দ্রুতই দলে পাকা করে নেন নিজের জায়গা। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেন ৯০ বলে ৭৭ রানের চমৎকার ইনিংস।
পরপর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি আছে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। বাংলাদেশের বিপক্ষেই খেলেছেন সবচেয়ে বেশি।
এক সময়ে খেলেছেন বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে আছে তার ভালো কিছু পারফরম্যান্স।
২০১৩ সালে ঢাকা পিমিয়ার লিগে গড়েন দারুণ এক কীর্তি। আবাহনীর পেসার আলাউদ্দিন বাবুর এক ওভারে ৩৯ রান নেন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবে খেলা চিগুম্বুরা। সেই সময়ে সেটা ছিল লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও আছে স্মরণীয় কিছু ইনিংস। ভারতের বিপক্ষে ২৬ বলে করেছিলেন ৫৪ রান, এর মধ্যে ৪২ রানই এসেছিল ছক্কা থেকে। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২১ বলে ৫৩ রানের ইনিংস ছিল একইরকম ধ্বংসাত্মক।
দুই দফায় নেতৃত্ব দিয়েছেন জিম্বাবুয়েকে। প্রথমবার ২০১০ সালে, পরেরবার ২০১৪ সালে। দ্বিতীয়বার নেতৃত্ব পাওয়ার কিছু দিন পর ব্যাটে দেখা দেয় রান খরা। ততদিনে আর অলরাউন্ডারও ছিলেন না। তাই ছিল সীমাহীন চাপ।
বল হাতেও শুরুটা ভালো ছিল। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টেই বাংলাদেশের বিপক্ষে পেয়েছিলেন ৫ উইকেট। কিন্তু পরে আর খুব একটা সাফল্য পাননি।
বিপিএলের বাইরে খেলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিপিএল, পাকিস্তানের পিএসএলে। ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে খেলেছেন নর্থ্যাম্পটনশায়ারের হয়ে।