সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ৬ উইকেটে হারাল পাকিস্তান। তিন ম্যাচ সিরিজে এগিয়ে তারা এখন ২-০ ব্যবধানে।
রাওয়ালপিন্ডিতে রোববার ব্যাটিং উইকেটে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে জিম্বাবুয়ে গুটিয়ে যায় ২০৬ রানে।
ইফতিখার ৫ উইকেট নেন ৪০ রানে। প্রায় ৯ বছরের লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে আগে কখনোই ম্যাচে ৩ উইকেটের বেশি পাননি তিনি।
রান তাড়ায় পাকিস্তান লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ৮৮ বল বাকি রেখে। ৭৭ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফেরেন অধিনায়ক বাবর আজম।
৫ উইকেটের পর অপরাজিত ১৬ রান করে ম্যাচের সেরা ৩০ বছর বয়সী ইফতিখার।
ইফতিখারের স্পিন ঝলকের আগে নতুন বলে পাকিস্তানকে ব্রেক থ্রু এনে দেন হারিস রউফ। আগের ম্যাচে অভিষিক্ত পেসার প্রথম ওয়ানডে উইকেটের স্বাদ পান এই ম্যাচে। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক চামু চিবাবা।
দ্বিতীয় উইকেটও খুব দ্রুতই পেয়ে যায় পাকিস্তান। অভিষিক্ত পেসার মুসা খান ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় বলেই দেখা পান উইকেটের। বাইরের বল স্টাম্পে টেনে আনেন ক্রেইগ আরভিন।
অনেকটা সময় নিয়ে থিতু হয়েও ফাহিম আশরাফের শর্ট বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওপেনার ব্রায়ান চারি (৪৬ বলে ২৫)।
শুরুর সেই ধাক্কা জিম্বাবুয়ে অনেকটাই সামাল দেয় ব্রেন্ডন টেইলর ও শন উইলিয়ামসের ব্যাটে। পাল্টা আক্রমণে দুজন এলোমেলো করে দেন পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ। ফাহিম আশরাফকে সোজা ব্যাটে ছক্কায় ওড়ান টেইলর। বাঁহাতি স্পিনার ইমাদ ওয়াসিমের প্রথম ওভারেই চার-ছক্কা মারেন টেইলর, একই ওভারে আরেকটি ছক্কা মারেন উইলিয়ামস।
এই দুজনের ব্যাটে রান আসতে থাকে দ্রুত। মূল বোলারদের ব্যর্থতায় অধিনায়ক বাবর বল তুলে দেন ইফতিখারের হাতে। এতে কাজ হয় জাদুর মতো।
স্রোতের বিপরীতে দুর্দান্ত ব্যাট করেন উইলিয়ামস। তাকে ফিরিয়েই ইফতিখার পূর্ণ করেন ৫ উইকেট। উইলিয়ামসের ৭০ বলে ৭৫ রানের ইনিংসে চার ১০টি, ছক্কা ১টি।
অভিষিক্ত ২০ বছর বয়সী পেসার মুসা নেন ২ উইকেট। নিজের আগের চার ম্যাচ মিলিয়ে ১৮ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি পেসার শাহিন আফ্রিদি এবার উইকেটের দেখা পাননি।
রান তাড়ায় পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের ছিল না কোনো চাপ। জিম্বাবুয়ের তিন পেসারও রাখতে পারেননি কোনো প্রভাব। ইমাম-উল-হক ও আবিদ আলি ১০ ওভারে তুলে ফেলেন ৬৮ রান।
বাঁহাতি স্পিনার টেন্ডাই চিসোরো আক্রমণে আসার পর একটু পাল্টায় চিত্র। পাকিস্তানের দুই ওপেনারকেই ফেরান তিনি। ২২ রান করে আবিদ ক্যাচ দেন শর্ট কাভারে। ৬১ বলে ৪৯ করে ইমাম কট বিহাইন্ড হন লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে।
এই সময়ের আলোচিত তরুণ প্রতিভা হায়দার আলি অভিষেকে ব্যাট করতে নামে চারে। প্রথম বলেই বেঁচে যান তিনি স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। পরের ওভারে আবার জীবন পান কিপার টেইলরকে ক্যাচ দিয়েও। তবে শুরুর অস্বস্তি দ্রুতই ঝেরে ফেলে আবির্ভুত হন আপন চেহারায়। উইলিয়ামসকে মাথার ওপর দিয়ে ওড়ানোর পর চিসোরোকে ছক্কা মারেন স্লগ সুইপে।
তবে অতি আক্রমণের চেষ্টায়ই তার ইনিংস থামে ২৪ বলে ২৯ রানে। এরপর টিকতে পারেননি মোহাম্মদ রিজওয়ানও। বোলিং অ্যাকশন বদলে অনেকটা সুনিল নারাইনের মতো করে বল করা সিকান্দার রাজার প্রথম বলেই রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন রিজওয়ান।
পাকিস্তান তবু বিপাকে পড়েনি বাবর ছিলেন বলেই। শুরু থেকেই সাবলীল খেলেছেন স্টাইলিশ এই ব্যাটসম্যান। শেষ দিকে আগ্রাসী কিছু শটে রান তোলেন দ্রুতগতিতে। ৭৪ বলে ৭৭ রানের ইনিংসে ম্যাচ শেষ করেন ছক্কা মেরে।
সিরিজের শেষ ম্যাচ মঙ্গলবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ৪৫.১ ওভারে ২০৬ (চারি ২৫, চিবাবা ৬, আরভিন ৩, টেইলর ৩৬, উইলিয়ামস ৭৫, মাধেভেরে ১০, রাজা ২, চিসোরো ৭, মুম্বা ১১, মুজরাবানি ১৭ এনগারাভা ১*; আফ্রিদি ১০-১-৩৬-০, রউফ ৭-০-৩১-১, মুসা ৬.১-১-২১-২, ফাহিম ৭-১-৩০-১, ইমাদ ৫-০-৪৩-১, ইফতিখার ১০-২-৪০-৫)।
পাকিস্তান: ৩৫.২ ওভারে ২০৮/৪ (ইমাম ৪৯, আবিদ ২২, বাবর ৭৭*, হায়দার ২৯, রিজওয়ান ১, ইফতিখার ১৬*; এনগারাভা ৪-০-২৫-০, মুজারাবানি ৮-০-৪৮-০, মুম্বা ১-০-১২-০, চিসোরো ১০-০-৪৯-২, মাধেভেরে ২.২-০-১৪-০, উইলিয়ামস ৫-০-৩১-১, রাজা ৫-১-২৩-১)।
ফল: পাকিস্তান ৬ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে পাকিস্তান ২-০তে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: ইফতিখার আহমেদ।