তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে পাকিস্তান জিতেছে ২৬ রানে। আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে দুই দলের প্রথম ম্যাচ ছিল এটি।
রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার ৫০ ওভারে পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিল ২৮২। জিম্বাবুয়ে থমকে যায় ২৫৫ রানে।
পরাজিত দলে থেকেও ১১২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ম্যান অব দা ম্যাচ টেইলর। ওয়েসলি মাধেভেরের সঙ্গে টেইলরের জুটিই জিম্বাবুয়েকে এগিয়ে নেয় জয়ের পথে। কিন্তু আফ্রিদি ও ওয়াহাবের আগুনে বোলিংয়ের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত তারা পেরে ওঠেননি।
পাকিস্তানের এই দুই বাঁহাতি পেসার ভাগাভাগি করে নিয়েছেন ৯ উইকেট। ৪৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা আফ্রিদি। ৪১ রানে ওয়াহাবের শিকার ৪টি। এই দুজনের তোপে ২১ রানেই শেষ ৬ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
এই দুই ম্যাচের ঠিক আগের ম্যাচে আফ্রিদি ৪ উইকেট নিয়েছিলেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে। টানা তিন ম্যাচে ৪ বা ততোধিক উইকেট নিয়ে তিনি স্পর্শ করেছেন ওয়ানডের রেকর্ড।
আফ্রিদি-ওয়াহাবের বোলিং কীর্তির আগে টেইলরই ছিলেন নায়ক হওয়ার পথে। রান তাড়ায় জিম্বাবুয়ে দ্রুতই হারায় দুই ওপেনার ব্রায়ান চারি ও অধিনায়ক চামু চিবাবাকে। দারুণ দুটি ডেলিভারিতে দুজনকেই বোল্ড করেন আফ্রিদি। শুরু হয় টেইলরের লড়াই।
তৃতীয় উইকেটে ক্রেইগ আরভিনকে নিয়ে টেইলর যোগ করেন ৭১ রান। আরভিনের সম্ভাবনাময় ইনিংসটি ৪১ রানে থামে বাঁহাতি স্পিনার ইমাদ ওয়াসিমকে রিভার্স সুইপ খেলে।
অভিজ্ঞ শন উইলিয়ামস টেকেননি বেশিক্ষণ। ১১৫ রানে ৪ উইকেট হারানো দলকে টেনে নেন টেইলর ও মাধেভেরে। গত মার্চে বাংলাদেশ সফরে নজর কাড়ার পর তরুণ মাধেভেরে তার প্রতিভার ছাপ রাখেন আবারও।
টেইলর ফিফটি স্পর্শ করেন ৬৫ বলে। সেখান থেকে পরের ফিফটিতে যান ৪১ বলে। ২০ বছর বয়সী মাধেভেরে নিজের চতুর্থ ওয়ানডেতেই পেয়ে যান দ্বিতীয় ফিফটির দেখা। দুজনের জুটি পেরিয়ে যায় শতরান।
শেষ ৩০ বলে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ছিল ৪৮ রান। এই সময়ের ক্রিকেটে খুব কঠিন কিছু নয়। টেইলর-মাধেভেরে তখনও উইকেটে। কিন্তু বাধার দেয়াল হয়ে দাঁড়ান আফ্রিদি ও ওয়াহাব।
৫৫ রান করা মাধেভেরে বোল্ড হন ওয়াহাবের বলে। ভেঙে যায় দুজনের ১১৪ বলে ১১৯ রানের জুটি। পরের ওভারেই টেইলরের ১১ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংস থামে আফ্রিদির বলে।
এরপর স্রেফ একের পর এক ব্যাটসম্যানের আশা যাওয়া। আফ্রিদি ও ওয়াহাবের বোলিংয়ের জবাব ছিল না জিম্বাবুয়ের লোয়ার অর্ডারের।
আরেক ওপেনার ইমাম-উল-হক বরাবরের মতোই ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে ইনিংস গড়ছিলেন। তার ৭৫ বলে ৫৮ রানের ইনিংস থামে রান আউটে।
মিডল অর্ডারে রান পেয়েছেন কেবল হারিস সোহেল। এই বাঁহাতির ব্যাট থেকে এসেছে ৮২ বলে ৭১। মোহাম্মদ রিজওয়ান, ইফতিখার আহমেদরা পারেননি লম্বা সময় টিকতে।
শেষ দিকে ফাহিম আশরাফের ১৬ বলে ২৩ ও ইমাদের ২৬ বলে ৩৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে ২৮০ ছাড়াতে পারে পাকিস্তান।
খুব নিরাপদ পুঁজি ছিল না তা। টেইলর তা প্রমাণও করলেন। এই দফায় পাকিস্তানকে উদ্ধার করলেন আফ্রিদি ও ওয়াহাব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ২৮২/৮ (ইমাম ৫৮, আবিদ ২১, বাবর ১৯, হারিস সোহেল ৭১, রিজওয়ান ১৪, ইফতিখার ১২, ফাহিম ২৩, ইমাদ ৩৪*, ওয়াহাব ৮, আফ্রিদি ৮*; এনগারাভা ১০-০-৪৯-০, মুম্বা ৮-০-৬৯-১, মুজারাবানি ৯-০-৩৯-২, চিবাবা ২-০-১৬-০, মাধেভেরে ৭-০-৩১-০, রাজা ৯-০-৪৫-১, চিসোরো ৫-০-৩১-২)।
জিম্বাবুয়ে: ৪৯.৪ ওভারে ২৫৫ (চারি ২, চিবাবা ১৩, আরভিন ৪২, টেইলর ১১২, উইলিয়ামস ৪, মাধেভেরে ৫৫, রাজা ৮, চিসোরো ৫, মুম্বা ১, এনগারাভা ০*, মুজরাবানি ৫; আফ্রিদি ১০-০-৪৯-৫, হারিস রউফ ১০-১-৫৭-০, ফাহিম ১০-১-৫৭-০, ওয়াহাব ৯.৪-০-৪১-৪, ইমাদ ১০-০-৪৯-১)।
ফল: পাকিস্তান ২৬ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে পাকিস্তান ১-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ: ব্রেন্ডন টেইলর।