ট্রফির লড়াইয়ে মাহমুদউল্লাহ-শান্ত

ক্রিকেটীয় রোমাঞ্চের আবহে ছেদ টেনেছিল বিরূপ প্রকৃতি। কার্তিকের বৃষ্টিতে অনাকাঙ্ক্ষিত সেই বিরতির পর অপেক্ষা এবার ফাইনালের উত্তেজনার। প্রেসিডেন্ট’স কাপের ফাইনালে রোববার মুখোমুখি হচ্ছে মাহমুদউল্লাহ একাদশ ও শান্ত একাদশ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2020, 01:19 PM
Updated : 24 Oct 2020, 01:19 PM

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে দুপুর দেড়টায় শুরু হবে ম্যাচ। বিসিবির অফিসিয়াল ইউটিউব ও ফেইসবুক পাতার পাশাপাশি বিটিভিও সরাসরি সম্প্রচার করবে ফাইনাল।

ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল গত শুক্রবার। কিন্তু আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়। সেটি যে বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত ছিল, তা প্রমাণ হয়ে গেছে গত তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে। রোববারও বৃষ্টি বাধা হয়ে দাঁড়ালে রিজার্ভ ডে আছে সোমবার।

দীর্ঘ বিরতির পর প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে ফিরতে পারাই ছিল বড় স্বস্তি। ফাইনালে উঠতে পারা সেখানে বাড়তি প্রাপ্তি। মাহমুদউল্লাহ ও নাজমুল হোসেন শান্তর কণ্ঠে ফুটে উঠল সেই সুর। নিজেদের সেরাটা দিয়ে উপভোগ্য ফাইনাল উপহার দেওয়ার প্রত্যয় শোনালেন দুই অধিনায়ক।

ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স আর জড়তা কাটানোই এই টুর্নামেন্টের মূল উদ্দেশ্য। তারপরও বেশ জমেছিল দলীয় লড়াই। ফাইনালের দুই দলকে পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। সেখানে ছিটকে গেছে জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন দল।

চার ম্যাচের তিনটিতে জিতে পয়েন্ট তালিকার সবার ওপরে থেকে ফাইনালে উঠেছে শান্ত একাদশ। প্রাথমিক পর্বে মাহমুদউল্লাহ একাদশের সঙ্গে দুই দেখায় দুবারই জিতেছে তারা। অধিনায়ক বললেন, এই পথ ধরে এগিয়েই তারা উঁচিয়ে ধরতে চান ট্রফি।

“পুরো টুর্নামেন্টটাই অনেক উপভোগ করেছি, ভালো লেগেছে। সবচেয়ে বড় দিক ছিল, অনেক দিন পর আমরা মাঠে এরকম একটা টুর্নামেন্ট খেলতে পারলাম। সবাই একত্রিত হয়ে মাঠে খেলাটা অনেক বড় ব্যাপার ছিলো আমাদের জন্য। অনেক পজিটিভ দিকই ছিলো।”

“খুব ভালো লাগছে এরকম একটা টুর্নামেন্টে ফাইনাল খেলতে পেরে। আমরা সবাই অনেক উপভোগ করেছি এই টুর্নামেন্ট। আশা করছি, ফাইনালেও ভালো কিছু হবে।”
তরুণ অধিনায়ক শান্তর দলও তারুণ্য নির্ভর। যদিও ফাইনালের আগ পর্যন্ত তাদের সেরা পারফর্মার অভিজ্ঞ একজনই। এক সেঞ্চুরি ও দুই ফিফটিতে ২০৭ রান করে টুর্নামেন্টের রান তালিকায় সবার ওপরে মুশফিকুর রহিম। ফাইনালে ওঠার ম্যাচে অবশ্য ক্যাচ নিতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন তিনি। পরে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন, খেলবেন ফাইনালে।

মাহমুদউল্লাহর দল অভিজ্ঞ ক্রিকেটারে ঠাসা। তবে সেই অভিজ্ঞদের বেশির ভাগই ফাইনালের আগ পর্যন্ত ছিলেন নিষ্প্রভ। এক পর্যায়ে ফাইনাল খেলার জন্য তাদের নির্ভর করতে হয়েছে অন্য দলের ওপর। সেসব পেছনে ফেলে ফাইনালে নিজেদের মেলে ধরতে চান বলে জানালেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

“সৌভাগ্যবশত আমরা ফাইনাল খেলছি। ভালো লাগছে, কারণ অনেক দিন পরে আমরা একটা টুর্নামেন্ট খেলছি এবং সেটার ফাইনাল খেলতে পারছি। আমরা সবাই মুখিয়ে আছি ফাইনালে যেন ভালো খেলতে পারি।”

“যদিও এটা প্রস্তুতিমূলক একটা টুর্নামেন্ট, কিন্তু আমার মনে হয় আমরা প্রতিটি খেলোয়াড়ই খুব সিরিয়াসলি খেলেছি এবং খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়েই আমরা খেলেছি। সবার ভেতরেই ওই প্রতিযোগিতা ছিলো যেন আমরা এক জন আরেক জনের চেয়ে ভালো পারফর্ম করতে পারি, দল হিসেবে ভালো পারফর্ম করতে পারি।”

প্রাথমিক পর্বে মাহমুদউল্লাহর দলের সেরা পারফরমার নিঃসন্দেহে ছিলেন রুবেল হোসেন। চার ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। প্রথম ম্যাচে ছন্দ না পেলেও পরের তিন ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। ফাইনালেও তিনি নিজের ও সতীর্থ পেসারদের বড় ভূমিকা দেখছেন।

“যে কোনো পর্যায়েই ফাইনাল ম্যাচ মানে ফাইনালই। তবে আমরা খুব বেশি ভাবছি না। ফাইনাল আমরা অনেক খেলেছি। যেভাবে খেলে আসছি, সবাই যদি নিজেদের ভূমিকা পালন করতে পারি, অবশ্যই ইতিবাচক ফল আসবে।”

“লক্ষ্য অবশ্যই থাকবে জয়। জেতার জন্য চেষ্টা করব। আমরা যারা পেসার আছি, তারা যদি ভালো করতে পারি, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে ব্যাটসম্যানদের জন্য ভালো হবে।”

মাহমুদউল্লাহর দলের জন্য রুবেল যে ভূমিকা পালন করেছেন, শান্তদের জন্য সেই ভূমিকায় ছিলেন তাসকিন আহমেদ। টুর্নামেন্ট জুড়ে দারুণ বোলিং করেছেন এই ফাস্ট বোলার। তিনিও জানালেন, দলের চোখ ট্রফিতে।

“ফাইনালে অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। চারটার মধ্যে তিনটি জিতে ফাইনালে এসেছি আমরা। সবাই খুব পরিশ্রম করছে, নিজেদের উজার করে দিচ্ছে। বোলিং বলেন বা ফিল্ডিং, সবাই সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছে। চেষ্টা থাকবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।”