রুবেলের আগুন ঝরানো স্পেল, সোহানের ব্যাটিং ঝলক
ক্রীড়া প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 13 Oct 2020 05:50 PM BdST Updated: 13 Oct 2020 08:54 PM BdST
ছোট রানের ম্যাচ অনেক সময় উপহার দেয় চরম নাটকীয়তা। তেমন কিছুরই আভাস মিলছিল। ১০৩ রান তাড়ায় নামা দলের ৩ উইকেট নেই শূন্য রানেই! পরে অবশ্য আর নাটক জমল না ততটা। রুবেল হোসেন, সুমন খানদের বোলিং যে মঞ্চ গড়ে দিয়েছিল, সেখানে নুরুল হাসান সোহানের কার্যকর অপরাজিত ইনিংসে শেষ পর্যন্ত জয়ের স্বস্তিতেই মাঠ ছাড়ল মাহমুদউল্লাহ একাদশ।
প্রেসিডেন্ট’স কাপের দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম একাদশকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে মাহমুদউল্লাহ একাদশ। টুর্নামেন্টের প্রথম দিনে মাহমুদউল্লাহর দল হেরেছিল শান্ত একাদশের কাছে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে রুবেল-সুমনদের দারুণ বোলিং আর নিজেদের বাজে ব্যাটিং মিলিয়ে ১০৩ রানেই গুটিয়ে যায় তামিমের দল। শুরুর ধাক্কার পর মুমিনুল হক ও সোহানের ব্যাটে দূর হয় মাহমুদউল্লাহর দলের শঙ্কা। জয় ধরা দেয় ২০ ওভার আগেই।
গতি আর আগ্রাসনের সঙ্গে দারুণ নিশানা মিলিয়ে দুর্দান্ত প্রথম স্পেলে রুবেল নেন ৩ উইকেট। এরপর আর বোলিং পাননি। পরে ৩ উইকেট নেন পেসার সুমন খানও। তাতেই গড়া হয় মাহমুদউল্লাহদের জয়ের ভিত। রান তাড়ায় টপ অর্ডারের ধ্বংসস্তুপে মুমিনুল খেলেন ৩৯ রানের ইনিংস। দলকে জিতিয়ে সোহান মাঠ ছাড়েন ৩৮ বলে অপরাজিত ৪১ রান নিয়ে।
দুই দল মিলিয়ে ১৫ উইকেট হারিয়ে রান এসেছে ২০৯। এই স্কোরকার্ড যে বার্তা দিচ্ছে, উইকেট কিন্তু মোটেও ছিল না ততটা ভয়ঙ্কর। যথারীতি মন্থর ছিল উইকেট। আবার বেশ বাউন্সও মিলেছে। কখনও কখনও গতির হেরফের হয়েছে। আকাশ ছিল মেঘলা। তবে এসব কিছুর চেয়ে ব্যাটিং ব্যর্থতার মূল দায় ব্যাটসম্যানদেরই। বাজে শট খেলেছেন বেশ কজন।
শুরুর উইকেটে অবশ্য কৃতিত্ব বোলারের। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা মাহমুদউল্লাহ একাদশকে শুরুতেই উইকেট এনে দেন রুবেল।

৩ ওভারের পর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে ১০৪ মিনিট। ম্যাচ নেমে আসে ৪৭ ওভারে।
বিরতির পর তানজিদ হাসান তামিম খেলছিলেন দুর্দান্ত। প্রতিভার জানান দেওয়া চমৎকার কয়েকটি শট খেলেন ১৯ বছর বয়সী বাঁহাতি ওপেনার।
তবে তার ১৭ বলে ২৭ রানের ইনিংস শেষ হয় আলগা শটে। রুবেলের লেগ স্টাম্পে থাকা বল তুলে দেন মিড উইকেটে।
নতুন ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুনের আউট ছিল আরও দৃষ্টিকটু। রুবেলের ওই ওভারেই লেগ স্টাম্পের বাইরের বল মিঠুনের ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ যায় শর্ট কাভারে।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে পড়তে থাকে উইকেট। তিনে নামা এনামুল হক শুরুতে টাইমিং পেতে ভুগছিলেন। সুমন আক্রমণে আসার পর কিছু শট খেলে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু সুমনের বলেই আপার কাট করে ধরা পড়েন তিনি থার্ড ম্যানে।
সুমন এর আগেই ফেরান শাহাদাত হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেনকে। দুজনই আউট হন বাড়তি লাফানো বলে, তবে বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে দায়ও ছিল তাদেরই।
লোয়ার-মিডল অর্ডারে মেহেদি হাসান ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু অল্পতেই শেষ হয় দুজনের চেষ্টা।
বাবা হওয়ার পর খুব একটা অনুশীলন না করেই খেলতে নেমে মিতব্যয়ী বোলিংয়ে মেহেদি হাসান মিরাজ নেন ২ উইকেট। লেগ স্পিনার বিপ্লব খুব ভালো বোলিং না করলেও ৩ ওভারে পেয়ে গেছেন ২ উইকেট।
মাহমুদউল্লাহদের বোলিংয়ের তৃপ্তি উবে যায় ব্যাটিংয়ে নেমেই। মুস্তাফিজুর রহমানের গতিময় এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে যান নাঈম শেখ। পরের ওভারে জোড়া আঘাত হানেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।

স্কোরবোর্ডে তখনও রান জমা হয়নি, কিন্তু উইকেট চলে গেছে তিনটি!
সাইফ ও মুস্তাফিজের তৈরি করা সেই চাপ ধরে রাখতে পারেননি শরিফুল ইসলাম ও স্পিনাররা। চতুর্থ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ ও মুমিনুল যোগ করেন ৩৯ রান।
তাইজুল ইসলামের আর্ম ডেলিভারিতে মাহমুদউল্লাহ বোল্ড হলে আবার জমে ওঠার ইঙ্গিত মেলে। তবে মুমিনুল ও সোহানের ৩৮ রানের জুটিতে অনেকটাই শেষ হয়ে যায় তামিমদের সম্ভাবনা।
তাইজুলের বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যাওয়ার পর মুমিনুল শেষ করে আসতে পারেননি কাজ। তাইজুলেরই নিচু হওয়া বল টেনে আনেন স্টাম্পে (৬২ বলে ৩৯)। তবে শুরুর দিকে জীবন পেয়ে সোহান ঠিকই দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের ঠিকানায়।
৬ চার ও ১ ছক্কায় ৪১ রানে অপরাজিত সোহান জিতেছেন ম্যাচের সেরা ব্যাটসম্যানের পুরস্কার। উইকেটের পেছনে দক্ষতার জন্য সেরা ফিল্ডারও তিনি। দারুণ স্পেলটির জন্য ম্যাচ সেরা রুবেল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
তামিম একাদশ: ২৩.১ ওভারে ১০৩ (তামিম ২, তানজিদ ২৭, এনামুল ২৫, মিঠুন ০, শাহাদাত ১, মোসাদ্দেক ৫, সাইফ উদ্দিন ১২, মেহেদি ১৯, তাইজুল ১, শরিফুল ৪, মুস্তাফিজ ০; ইবাদত ৬-০-৩৬-০, রুবেল ৫-০-১৬-৩, সুমন ৫-০-৩১-৩, মিরাজ ৪.১-২-২-২, আমিনুল ৩-০-১৭-২)।
মাহমুদউল্লাহ একাদশ: ২৭ ওভারে ১০৬/৫ (লিটন ০, নাঈম ০, মুমিনুল ৩৯, ইমরুল ০, মাহমুদউল্লাহ ১০, সোহান ৪১*, সাব্বির ৪*; সাইফ উদ্দিন ৫-১-৮-২, মুস্তাফিজ ৭-২-১৪-১, শরিফুল ৪-০-২৮-০, মেহেদি ৫-০-১৮-০, তাইজুল ৬-০-২৭-২, আফ্রিদি ১-০-৫-০)।
ফল: মাহমুদউল্লাহ একাদশ ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: রুবেল হোসেন
ব্যাটসম্যান অব দা ম্যাচ: নুরুল হাসান সোহান
বোলার অব দা ম্যাচ: সুমন খান
ফিল্ডার অব দা ম্যাচ: নুরুল হাসান সোহান
সর্বাধিক পঠিত
- বদলি করা হল চট্টগ্রামের মানবিক পুলিশ ইউনিটের শওকতকে
- পৃথ্বী ১৫২ বলে ২২৭, রেকর্ডের ছড়াছড়ি
- ইংল্যান্ড বাদ, ড্র করলেই ফাইনালে ভারত
- দেশে ফিরে হুইল চেয়ারে চড়ে গাড়িতে উঠলেন ফখরুল
- পদ্মায় রেল সংযোগ: চীনা ঠিকাদারের কথা উড়িয়ে দিলেন রেলমন্ত্রী
- মেসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাব: মাসচেরানো
- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বন্দি মুশতাকের কারাগারে মৃত্যু
- স্পিন স্বর্গে ২ দিনেই ইংল্যান্ডকে হারাল ভারত
- ছক্কার রেকর্ডে রোহিতকে ছাড়িয়ে গাপটিল
- যেভাবে গ্রাহকের টাকা হাতিয়েছিলেন এক ব্যাংক কর্মকর্তা