অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৫২ টেস্ট ও ১৬৪ ওয়ানডে খেলা জোন্স হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার চিরবিদায় নিয়েছেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। ১৯৮৭ সালে ইডেন গার্ডেন্সে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম বিশ্বকাপ জেতা দলের সদস্য ছিলেন তিনি।
জোন্সের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে শচিন টেন্ডুলকারের। সেই স্মৃতিচারণ করে ভারতের ব্যাটিং কিংবদন্তি টুইটারে লিখেছেন, অনেক তাড়াতাড়ি চলে গেছেন এই অস্ট্রেলিয়ান।
“ডিন জোন্সের মৃত্যুর সংবাদটি খুব হৃদয়বিদারক। দারুণ একজন মানুষ খুব দ্রুত চলে গেলেন। অস্ট্রেলিয়ায় আমার প্রথম সফরে তার বিপক্ষে খেলার সুযোগ হয়েছিল। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।”
জোন্স ও ভিভ রিচার্ডস একে অপরের বিপক্ষে অনেক খেলেছেন। সেখান থেকেই দুইজনের মধ্যে গড়ে উঠে ভাইয়ের মতো সম্পর্ক। ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান লিখেছেন, সব সময় তার হৃদয়ে থাকবেন জোন্স।
“ভয়ঙ্কর এক সংবাদ শুনে উঠলাম…তুমি আমার কাছে একজন ক্রিকেটারের চেয়েও বেশি কিছু। তুমি আমার বন্ধু, আমার ভাই। বিশ্বের যেখানেই ক্রিকেট খেলা হোক, সেখানেই তোমার হাসি ও উপস্থিতি মিস করব। শান্তিতে ঘুমাও ডিনো। পৃথিবীর তোমার থেকে আরও কিছু পাওয়ার ছিল। সব সময় আমার হৃদয়ে থাকবে…।”
অস্ট্রেলিয়া দলের সতীর্থ টম মুডি যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন।
“আমরা দারুণ সতীর্থ ও পছন্দের ক্রিকেটীয় মানুষের চলে যাওয়ার করুণ সংবাদে আমি নির্বাক। তোমার ক্রিকেট পরিবারটি সবসময়ই তোমাকে মিস করবে। জেন এবং মেয়েদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা।”
বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ফেইসবুকে জোন্সের একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, শান্তিতে ঘুমাও।
ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষে একসময় ধারাভাষ্যকার হিসেবে যোগ দেন জোন্স। কমেন্টেটর ও ব্রডকাস্টার হিসেবে নিখুঁত বিশ্লেষণী ক্ষমতার জন্য পান ‘দা প্রফেসর’ খেতাব। ধারাভাষ্য কক্ষে অনেকের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি, তাদের মধ্যে একজন ভারতের হার্শা ভোগলে। যেন মানতেই চাইছেন না জোন্স আর নেই।
“না, ডিনো না। আমি নির্বাক। আমি বিস্মিত এবং এটা মানতে আমি নারাজ।”
পাকিস্তানের সাবেক পেসার শোয়েব আখতারের কাছে এই খবর কেবলই বেদনার। লঙ্কান কিংবদন্তি কিপার-ব্যাটসম্যান কুমার সাঙ্গাকারার কাছে, ভয়ঙ্কর সংবাদ।
চলতি আইপিএলে ধারাভাষ্যকারের কাজ করছিলেন জোন্স, এই টুর্নামেন্টেই খেলছেন শেন ওয়াটসন। অস্ট্রেলিয়ার তারকা এই ক্রিকেটার যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না জোন্সের চলে যাওয়া।
“আমি বিশ্বাস করতে পারছি না, ভীষণ ভালো ও মহৎ মানুষটি আমাদের মাঝে আর নেই। দুর্দান্ত একটি জীবন কাটিয়েছেন তিনি। শান্তিতে চিরনিদ্রায় থাকুন ডিনো।”
অস্ট্রেলিয়া দলের অভিজ্ঞ ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের কাছেও তার মৃত্যু অবিশ্বাস্য। প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়েছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
“ডিন জোন্সের মৃত্যুর করুণ সংবাদ শুনে ধাক্কা খেয়েছি। তার পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের শক্তি ও সাহসের জন্য প্রার্থনা করছি।”
সময়ের আরেক সেরা ব্যাটসম্যান স্টিভেন স্মিথ সমবেদনা জানিয়েছেন জোন্সের পরিবারের প্রতি।
“মুম্বাইয়ে ডিন জোন্স মারা যাওয়ার সংবাদটি অবিশ্বাস্য। তিনি অস্ট্রেলিয়ার অসাধারণ একজন ক্রিকেটার ছিলেন এবং তাকে মিস করব। তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা। শান্তিতে চিরনিদ্রায় থাকুন ডিনো।”
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজারের কাছাকাছি রান করা জোন্স ১৯৯৮ সালে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। এরপর কাজ করেছেন কোচ ও ভাষ্যকার হিসেবে। ২০১৯ সালে দেশের কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারকে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট হল অব ফেম-এ জায়গা দেওয়া হয়।