তাইজুলের নতুন অ্যাকশন দেখতেই শুধু ভেটোরির মতো নয়, নেপথ্য কারিগরও ভেটোরি। বাংলাদেশের স্পিন পরামর্শক এই কিউই গ্রেটের পরামর্শেই নিজেকে ভেঙে নতুনভাবে সাজানোর চেষ্টা করছেন তিনি।
টেস্টে বাংলাদেশের দ্রুততম ১০০ উইকেট শিকারি তিনি, এই সংস্করণে দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশও। কিন্তু নিয়মিত নন অন্য দুই সংস্করণে। এবার অবশ্য অনেকটা চমক দিয়েই বিসিবি তাকে রেখেছে লাল-সাদা দুই বলের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে। তাইজুলও তাই নিজেকে তৈরি করতে চাচ্ছেন সেই দাবি মেটানোর জন্য।
এত বছর ধরে চালিয়ে আশা অ্যাকশন বদলে ফেলাটা সহজ নয় মোটেও। তবে মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলনের পর তাইজুল জানালেন, অনেক ঘাম ঝরিয়ে এখন তিনি নতুন অ্যাকশনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন।
“৩-৪ মাস পর মাঠে ফিরে আসা কঠিন। তার পরও ক্রিকেট বোর্ড যে সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে, আমরা ২ মাসের মতো প্র্যাকটিস করলাম। ব্যক্তিগতভাবে আমি বোলিং নিয়ে কাজ করেছি। ভেটোরির সঙ্গে কথা বলেছি আমার বোলিং নিয়ে, মাঝখানে অ্যাকশন বদলেছি। অ্যাকশন নিয়ে কাজ করেছি। শরীরের সঙ্গে এখন অ্যাকশন মানিয়ে গেছে।”
“এখন টানা ২ ঘণ্টা বোলিং করতেও সমস্যা হচ্ছে না। আমাদের ব্যক্তিগত অনুশীলন যখন ছিল, তখন যে সুবিধাটা হয়েছে, যার যার কাজগুলি নিজের মতো করে করতে পেরেছি। সপ্তাহ দুয়েক হলো ব্যাটম্যানদের বোলিং করছি নেটে। আত্মবিশ্বাস বাড়তে শুরু করেছে, আরও কিছুদিন গেলে আরও বাড়বে আশা করি।”
অ্যাকশন, টেকনিকের মতো ব্যাপারগুলি অনেক সময়ই একটু ঝালাই করতে হয়ে ক্রিকেটারদের। টুকটাক ভেঙে গড়তে হয়। কিন্তু ২৮ বছর বয়সী একজন ক্রিকেটারের বোলিং অ্যাকশনে এত বড় বদলের ঘটনা বিরল। অনেকটা ঝুঁকিরও বটে। বিশেষ করে, টেস্টে তাইজুলের যেটা বড় শক্তি, লাইন-লেংথে টানা বল করে যাওয়া ও ফ্লাইটের বৈচিত্র, সেখানে আপোস করার শঙ্কা থাকেই।
তাইজুল অবশ্য সেই শঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন, বরং নিজেকে আরও ধারাল করে তুলছেন বলেই দাবি করলেন।
“এজন্য বলের বাড়তি বাউন্সের দিক চিন্তা করে, ওভার স্পিনের কথা চিন্তা করে, বিভিন্ন বৈচিত্রের কথা চিন্তা করেই অ্যাকশন বদলে ফেলেছি। এর মধ্যে ফলও পাচ্ছি, বৈচিত্র পেতে সহায়তা করছে নতুন অ্যাকশন।”
নেটে প্রতিদিনই এই অ্যাকশনে টানা বোলিং করে চলেছেন তাইজুল। অপেক্ষা এখন ম্যাচে করে দেখানোর। কিন্তু বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কার সফর দুলছে অনিশ্চয়তায়। এই বাঁহাতি স্পিনারের চাওয়া, অনিশ্চয়তা কেটে যাক, ক্রিকেটাররা ফিরুক চেনা জগতে।
“আমরা যারা ক্রিকেটার, বা যে কোনো খেলার খেলোয়াড়ই বলুন, এত লম্বা সময় খেলার বাইরে থাকা কঠিন। আমরা মাঠে থাকতেই পছন্দ করি। সামনে শ্রীলঙ্কা সিরিজ হওয়াটা তাই খুবই জরুরি। তাহলে ক্রিকেটাররা সবাই মাঠে ফিরতে পারব। আগের অবস্থায় ফিরতে পারলে ভালো লাগবে।”