এইচপি দলের শ্রীলঙ্কা সফরের সম্ভাবনা ‘ক্ষীণ’

শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিদের্শনার পর বাংলাদেশ জাতীয় দলের সফর নিয়ে যেমন তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা, তেমনি ভেস্তে যেতে বসেছে হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) দলের সফর। জাতীয় দল, এইচপি দলের ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফ মিলিয়ে ৬৫ জনের বহর শ্রীলঙ্কায় পাঠাতে চেয়েছিল বিসিবি। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কা প্রস্তাব পাঠিয়েছে কেবল ৩০ জনের দল নিয়ে সফরের।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Sept 2020, 01:51 PM
Updated : 13 Sept 2020, 03:23 PM

শ্রীলঙ্কার প্রস্তাবের পর রোববার দুপুরে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান সভায় বসেছিলেন এইচপির দায়িত্বপ্রাপ্ত বিসিবি পরিচালক নাঈমুর রহমান, বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান খালেদ মাহমুদ ও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের সঙ্গে। সেখানে আলোচনা হয়েছে শ্রীলঙ্কার প্রস্তাবের জবাবে বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রস্তাব নিয়ে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে আকরাম খান যা জানালেন, তাতে এইচপির সফরের আশা আপাতত নেই বললেই চলে।

“ওরা প্রস্তাব দিয়েছে মাত্র ৩০ জনের দল পাঠাতে হবে। আমাদের জাতীয় দলের বহরই তো ৩০ জনের বেশি হওয়ার কথা, সাপোর্ট স্টাফ সবাইকে মিলিয়ে। এরপর এইচপি তো আছেই। এই অবস্থায় আসলে এইচপি দলের সফর কঠিনই। টেস্ট ম্যাচগুলি যেহেতু এফটিপির ও আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ, আমরা সেটিকেই প্রাধান্য দিচ্ছি।”

“আগামীকাল আবার সভা করে আমরা আমাদের প্রস্তাবনা পাঠাব শ্রীলঙ্কায়। তবে এই মুহূর্তে এইচপি দলের সফরের সম্ভাবনা ক্ষীণ।”

এইচপির প্রধান নাঈমুর রহমান অবশ্য এখনই আশার শেষ দেখছেন না। তবে বাস্তবতার ইঙ্গিত থাকল তার কথাতেও।

“সফরকারী দলের সদস্য সংখ্যা ওরা অনেক কাটছাঁট করতে চাইছে, এটি একটি ইস্যু। সেখানে আমরা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। জাতীয় দল এবং এইচপির এক সঙ্গে শ্রীলঙ্কাতে খেলার পরিকল্পনাতে আছি এখনও। শ্রীলঙ্কা বোর্ড ও আমাদের বোর্ড অনেক ক্ষেত্রে একমত ছিল, সেখানে শ্রীলঙ্কান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিছু অবজারভেশন দিয়েছে। এখন আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণগুলো ওদেরকে দেব। তার পর শ্রীলঙ্কা বোর্ড তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাদেরকে জানাবে।”

“তবে ওদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিদের্শনার বাইরে তো যাওয়া যাবে না। সবকিছু শ্রীলঙ্কান বোর্ড চাইলেও করতে পারছে না, ওদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আছে, আর্মি আছে। সেসব নিয়েই কথা চলছে। আজকের আলাপে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় যাওয়া যায়নি।”

জাতীয় দল ও এইচপি দল একসঙ্গে সফরে যাবে, সেখানে নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে, এই পরিকল্পনা নিয়েই এতদিন এগোচ্ছিল বিসিবি। বাংলাদেশ দলকে সেখানে গিয়ে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না, করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ হওয়া সাপেক্ষে তৃতীয় দিন থেকেই অনুশীলন শুরু করা যাবে, এমনই কথা ছিল দুই বোর্ডের। কিন্তু শ্রীলঙ্কান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন নির্দেশনার পর বদলে গেছে বাস্তবতা।

লঙ্কান স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চাইছে বাংলাদেশ দলের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন এবং সেই সময়টায় পুরোপুরি হোটেল বন্দী থাকতে হবে দলকে। পাশাপাশি পিসিআর টেস্টসহ আরও কিছু বাধ্যবাধকতা দিয়েছে তারা। সর্বোচ্চ ৩০ জনের বহরের ব্যাপার তো আছেই। তাতে জাতীয় দলের সফরই এখন অনিশ্চয়তায়। ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হলে টেস্টের জন্য প্রস্তুতির পর্যাপ্ত সুযোগই পাবে না বাংলাদেশ দল। সফরে যাওয়ারই তাই মানে থাকে না তখন।

নাঈমুরের কণ্ঠে উঠে এলো সব বাস্তবতাই। এইচপির ভাবনা সরিয়ে রেখে আপাতত জাতীয় দলের সফর নিয়েই বেশি ভাবছেন তারা।

“খেলতে চাইলে কিন্তু খেলার পরিবেশটা থাকতে হবে। সেই পরিবেশটা তৈরি এবং সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে যেন আমরা খেলতে পারি। ৬-৭ মাস খেলার বাইরে থেকে টেস্ট ম্যাচ খেলাটা, সেই টেস্টের প্রস্তুতিটাও ঠিকঠাক আমরা করতে না পারি, সেটা তো কঠিন হবে। আমরা দুই বোর্ডই আন্তরিক আছি, সবকিছু ঠিকঠাক করে যেন মাঠে নামতে পারি।”

“এইচপির সফরটা আলাদা, অগ্রাধিকার পাবে জাতীয় দলের সফর। এইচপির ক্যাম্প আমরা এখন করতে পারব, পরেও করতে পারব। কিন্তু জাতীয় দলের যে সফর, সেটা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। আমরা যদি এই উইন্ডো মিস করি, তাহলে নতুন উইন্ডো বা স্লট বের করা কঠিন হবে। সুতরাং জাতীয় দলের টেস্ট সিরিজটা অগ্রাধিকার পাবে।”

এইচপি দলের জন্য সম্প্রতি টবি র‍্যাডফোর্ডকে প্রধান কোচ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নাঈমুর জানালেন, এইচপির প্রোগ্রামের সময় বদলে গেলে বিদেশি কোচদের সেই সময় অনুযায়ীই পাওয়ার সুযোগ আছে চুক্তিতে।