বিরতির পর খুলনা শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ফিটনেস ট্রেনিং শুরু করেছিলেন মিরাজ। হালকা বোলিংও করেছেন। এরপর গত বুধবার থেকে অনুশীলন করছেন মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে। এখানে ফিটনেসের কাজ যেমন চলছে, ভালোভাবে শুরু করেছেন স্কিলের ঝালাইও।
অস্বস্তিটা বুঝতে পেরেছেন তিনি এখানেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে পর্যায়ে আছেন, তাতে নিজেকে এখন পরের ধাপে নেওয়ার কথা তার। কিন্তু লম্বা বিরতি বদলে দিয়েছেন অনেক বাস্তবতা। পরের ধাপ তো বহুদূর, শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে রোববার মিরাজ জানালেন, তার লড়াই এখন নিজেকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা।
“অনেকদিন পর বোলিং শুরু করেছি মিরপুরে, ৫-৬ মাস পর। তিন-চারদিন হল এখানে বোলিং করছি, ভালো লাগছে। কিন্তু অনেকদিন পরে শুরু করায় নিয়ন্ত্রণ থাকছে না, অস্বস্তি লাগছে। একটু সংশয়ে আছি, বোলিং হয়তো ভালো হচ্ছেনা যেটা আমি চাচ্ছি।”
“আমি চেষ্টা করছি যতটুক সম্ভব বোলিংটা আগে যেখানে ছিল, সেখানে আনার জন্য। এ জন্য ড্রিল থেকে শুরু করে বোলিংয়ে যে যে জিনিসগুলো দরকার, সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। আমার কোচের সাথেও কথা বলেছি, তিনিও আমার সঙ্গে অনেক আলোচনা করেছেন কীভাবে কি করলে ভালো হয়।”
এমনিতে মিরাজের টেস্ট রেকর্ডের ছবিটা এখনও পর্যন্ত যথেষ্টই উজ্জ্বল। ২২ টেস্টে নিয়েছেন ৯০ উইকেট। তবে কেবল একটি দিকই ফুটে উঠছে এতে। সময়ের সঙ্গে যতটা উন্নতি ছিল প্রত্যাশিত, তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারেননি তিনি। বোলিংয়ে যোগ হয়নি খুব বেশি নতুন অস্ত্র, পারফরম্যান্সে থাকেনি ধারাবাহিকতা। একাদশে, এমনকি স্কোয়াডে জায়গা পেতেও লড়তে হচ্ছে এখন। এ বছর এখনও পর্যন্ত খেলতে পারেননি টেস্ট।
মিরাজ নিজেও সেই বাস্তবতা জানেন। কিন্তু তার উন্নতির তাড়না থমকে গেছে সময়ের থাবায়। আপাতত তাই তার চেষ্টা আপন ছন্দ ফিরে পাওয়া।
“আমার অভিষেক থেকে টানা তিনবছর ভালোই গিয়েছে। কিন্তু লকডাউনের আগের সিরিজটা বা এর আগের দুই-তিনটা সিরিজ যেরকম চেয়েছি, সেরকম হয়নি। সেটা নিয়ে কাজ করেছিলাম, তার ভেতর লকডাউন আসায় সেভাবে করতে পারিনি।”
“আমার কাছে মনে হয়, সামনে খেলা শুরু হয়ে যাচ্ছে, অনুশীলন শুরু হয়েছে, যতটুকু সম্ভব নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে ভালো করার চেষ্টা করব। আগে যেরকম বোলিংটা করতাম, সেই ছন্দে ফিরে আসতে চাই।”
নিজের এই ঘাটতি অজানা নয় মিরাজেরও। ২২ বছর বয়সী এই স্পিনার জানালেন, স্পিন কোচ ড্যানিয়েল ভেটোরির সহায়তায় চেষ্টা করে যাবেন উন্নতি করতে।
“বিদেশের মাটিতে আমাদের স্পিনারদের জন্য চ্যালেঞ্জ থাকে, বিশেষ করে আমার জন্য বেশি। আমি মনে করি, বিদেশের মাটিতে ইকোনোমিটা গুরুত্বপূর্ণ। ওখানে সফল হতে হলে লাইন-লেংথে জোর দিতে হয় এবং ভালো জায়গায় টানা বল করতে হয়, উইকেট থেকে সাহায্য পাওয়া যায় না।”
“যতটুকু সম্ভব অনুশীলন করে, ঘাটতির জায়গা নিয়ে কাজ করছি। বিশেষ করে আমাদের বিদেশি কোচ ড্যানিয়েল ভেটোরির সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাদের বিশেষ টিপস দিয়েছেন, কীভাবে কি করলে ভালো হবে। আমাদের নিয়ে কাজও করেছেন। আশা করি সামনের দিনগুলোতে তার সঙ্গে কাজ করতে পারব। ভালো ভালো থিওরি তিনি দিতে পারবেন যে কীভাবে করলে ভালো হয়।”