আইসিসি হল অব ফেমে জহির আব্বাস, ক্যালিস ও স্টালেকার

২০২০ সালে আইসিসি হল অব ফেমে জায়গা পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিস, পাকিস্তানের সাবেক ব্যাটসম্যান জহির আব্বাস ও অস্ট্রেলিয়ার নারী ক্রিকেট দলের সাবেক অলরাউন্ডার লিসা স্টালেকার।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 August 2020, 01:09 PM
Updated : 23 August 2020, 02:19 PM

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে রোববার এই তিন গ্রেটকে হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করে আইসিসি। ধারাভাষ্যকার অ্যালান উইলকিন্সের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের মূল অতিথি ছিলেন সুনিল গাভাস্কার, শন পোলক ও মেলানি জোন্স। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ক্যালিসদের অভিনন্দন জানান ওয়াসিম আকরাম, গ্রায়েম স্মিথ ও অ্যালিসা হিলি।

এবারের তিনজনসহ এখনও পর্যন্ত মোট ৯৩ জন সাবেক ক্রিকেটারকে হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করল আইসিসি। নিজের সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অন্তত পাঁচ বছর পর এই স্বীকৃতির জন্য বিবেচিত হন ক্রিকেটাররা।

জ্যাক ক্যালিস

দক্ষিণ আফ্রিকার চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে হল অব ফেমে জায়গা পেলেন ক্যালিস। সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারদের একজন তিনি। টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বেশি রান এসেছে তার ব্যাট থেকে, সব মিলিয়ে আছেন তিনে। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট-ওয়ানডে দুই সংস্করণেই আছে ১০ হাজার রান ও ২৫০ উইকেটের ডাবল। এই দুই সংস্করণেই দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলেছেন সবচেয়ে বেশি ম্যাচ।

২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের আগে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ক্যালিস করেছেন ২৫ হাজারের বেশি রান, উইকেট নিয়েছেন সাড়ে পাঁচশর বেশি। টেস্টে ২৩ বার হয়েছেন ম্যান অব দা ম্যাচ, আর কেউ হতে পারেনি ২০ বারও। আইসিসি টেস্ট ব্যাটসম্যানদের র‍্যাঙ্কিংয়ে তিনি শীর্ষে ছিলেন ৫৯২ দিন। রেকর্ড ৪৯৩ টেস্ট ধরে ও ৪ হাজার ২৮ দিন ছিলেন অলরাউন্ডারদের র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে।

এই সম্মান পেয়ে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া জানালেন ক্যালিস।

জহির আব্বাস

“আইসিসি হল অব ফেমে জায়গা পাওয়া অনেক বড় সম্মান। যখন খেলতে শুরু করেছিলাম, এমন কিছু তখন আমার ভাবনাতেও ছিল না। কোনো সম্মাননা বা এরকম কিছুর জন্য অবশ্যই আমি ক্রিকেট খেলিনি। আমি স্রেফ চেয়েছি, যে দলেই খেলি, ম্যাচ যেন জিতি।”

“তবে খেলাটায় যে সাফল্য পেয়েছি, যা কিছু অর্জন করেছি, যেগুলো নিয়ে আমি সত্যিই গর্বিত, সেসবের স্বীকৃতি পাওয়া দারুণ ব্যাপার।”

হল অব ফেমে জায়গা পাওয়া পাকিস্তানের ষষ্ঠ ক্রিকেটার জহির আব্বাস। গত শতকের সত্তর ও আশির দশকের স্টাইলিশ এই ব্যাটসম্যান পাকিস্তানের ইতিহাসের সেরাদের একজন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি করা একমাত্র এশিয়ান তিনি, তাকে বলা হতো ‘এশিয়ান ব্র্যাডম্যান।’

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনি এক ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি করেছেন ৮ বার, একই ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরি করেছেন চারবার। দুটিই রেকর্ড। টানা তিন ম্যাচে সেঞ্চুরি তার ব্যাট থেকেই প্রথমবার দেখেছে ওয়ানডে ক্রিকেট। ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত টানা ২১৫ দিন ছিলেন ওয়ানডে ব্যাটসম্যানদের র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে।

লিসা স্টালেকার

জহির আব্বাসের নেতৃত্বে ১৪ টেস্টে পাকিস্তান হেরেছে কেবল একটি। খেলোয়াড়ি জীবন শেষে আইসিসির ম্যাচ রেফারি ও আইসিসি সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন বিশ্ব ক্রিকেটে দারুণ সম্মানীয় এই ব্যক্তিত্ব।

ক্রিকেট ইতিহাসের অনেক গ্রেটদের সঙ্গে এই স্বীকৃতির অংশ হতে পেরে গর্বিত বলে জানালেন ৭৩ বছর বয়সী আব্বাস।

“২০২০ সালে আইসিসির হল অব ফেমে জায়গা পেয়ে নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান ও সম্মানিত মনে করছি। কীর্তিমান সব ক্রিকেটারের মধ্যে নিজেকে দেখতে পেরে আমি রোমাঞ্চিত।”

অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জয়ী তারকা স্টালেকার তার দেশের ২৭তম ও সব মিলিয়ে নবম নারী ক্রিকেটার হিসেবে হল অব ফেমে জায়গা পেলেন। এই নয় জনের মধ্যে পাঁচ জনই অস্ট্রেলিয়ার।

ক্যারিয়ারে ব্যাটিং-বোলিং দুটিতেই নিজেকে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে তুলেছিলেন স্টালেকার। মেয়েদের ওয়ানডেতে ১ হাজার রান ও ১০০ উইকেটের ডাবল অর্জন করা প্রথম ক্রিকেটারও তিনি। ওয়ানডে অলরাউন্ডারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে তিনি শীর্ষে ছিলেন ৯৩৪ দিন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে জিতেছেন দুটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

স্টালেকার তার প্রতিক্রিয়ায় জানালেন, এত বড় সম্মান পাওয়া তার কল্পনার সীমানায়ও ছিল না।

“এই স্বীকৃতি পেয়ে আমি দারুণ সম্মানিত বোধ করছি। আমার সুদূরতম কল্পনাতেও কখনও ভাবতে পারিনি, এরকম বর্ণাঢ্য ক্রিকেটারদের তালিকায় আমার নাম থাকবে।”