গত ১৯ জুলাই যখন ক্রিকেটারদের একক অনুশীলন শুরু হলো, তামিম তখন ভুগছিলেন পেটের ব্যথাজনিত অজানা রোগে। দেশে চিকিৎসা নিয়ে ফল না পেয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন লন্ডনে গিয়ে। সেখান থেকে ফেরার পর কোয়ারেন্টিনে ছিলেন দুই সপ্তাহ। অবশেষে রোববার শুরু করেছেন অনুশীলন।
শুরুর দিন থেকেই ফিটনেস ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং অনুশীলন করছেন তামিম। নেট সেশন করেছেন ইনডোরে। দীর্ঘ বিরতির পর এই দুই দিনের অনুশীলন থেকে নিজেকে নিয়ে স্বস্তির বার্তাই পেয়েছেন বলে সোমবার জানালেন অভিজ্ঞ ওপেনার।
“অনেক দিন পর ব্যাটিং শুরু করলাম, প্রায় চার-পাঁচ মাস পর। ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে যতটা জড়তা থাকবে মনে করেছিলাম, বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, অতটা খারাপ অবস্থা নয় আমার কাছে মনে হয়েছে। ব্যাটিং মোটামুটি ঠিকই আছে। ফিটনেসের দিক থেকেও ভালো আছে অবস্থা।”
শুরুটা ভালো হওয়ার পর এখন তার অপেক্ষা বাইরের আলো-হাওয়ায় পুরোপুরি মানিয়ে নেওয়ার। করোনাভাইরাসের কারণে গত মার্চে খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে ঘরেই যতটা সম্ভব ফিটনেসের কাজ করতে হয়েছে। মাঠের অনুশীলনে শতভাগ ধাতস্থ হতে আর কদিন সময় লাগবে, মনে করেন তামিম।
“ট্রেডমিল বলেন বা বাসায় যত কাজই করি, মাঠে রোদে মানিয়ে নিতে সপ্তাহখানেকের মতো সময় লাগবে। এরপর আরেকটু ভালো অবস্থায় থাকব। যেভাবে নিয়ম মেনে সব করছি আমরা, আমার কাছে খুবই ইতিবাচক লাগছে। আশা করি এভাবেই এগোতে থাকব।”
“এই চার-পাঁচ মাস খুবই কঠিন ছিল। আমরা বাসায়ই ছিলাম, পরিবারের সঙ্গে ছিলাম। কিন্তু একটু মানসিক চাপেও পড়ে যাচ্ছিলাম সবাই। বাসা থেকে বের হতে পারিনি। স্বাভাবিক পরিস্থিতি তো ছিল না।”
“এমনিতে একটা ট্যুর থেকে এসে যেমন ৭-৮ দিন ছুটি পাই, তখন যে কোনো জায়গায় যেতে পারি, অনেক কিছু করতে পারি। কিন্তু চার মাস ছিল ভিন্নরকম। স্বাস্থ্য নিয়ে সবার চিন্তা ছিল, পরিবারের মানুষ নিয়ে চিন্তা ছিল। অবশেষে যেটা আমরা সবচেয়ে পছন্দ করি, খেলাধুলা, সেটা করতে পারছি, এটা ভালো।”
ঘরবন্দি সময়টায় ক্রিকেটারদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে অনলাইন সেশনের ব্যবস্থা করেছিল বিসিবি। বোর্ডের মেডিকেল বিভাগ ক্রিকেটারদের খোঁজখবর রেখেছে নিয়মিত। তারপরও মানসিকভাবে পুরো চাঙ্গা হতে কিছুটা সময় লাগবে, মনে করছেন তামিম।
“এই চার মাসে বিসিবি কিছু সেশন ঠিক করে দিয়েছিল। ব্যক্তিগতভাবে আমি দুই-তিনটা সেশন করেছিলাম। সেটা অবশ্যই সাহায্য করেছে। তবে বললাম, এই ক মাস সহজ ছিল না। এখন আমাদের নিশ্চিত করতে হবে ওখান থেকে বের হয়ে এসে যত তাড়াতাড়ি মানসিকভাবে ভাল অবস্থায় যেতে পারি। কারণ আমাদের বেশ বড় একটা সফর আছে সামনে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের বেশ ভালো সুযোগ আছে এই সফরে।”
আগামী মাসে শ্রীলঙ্কায় সফরে যাবে বাংলাদেশ দল। সেখানে মাসখানেকের প্রস্তুতি শেষে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে শুরু হবে সিরিজ। সফর চূড়ান্ত হলেও সিরিজের সূচি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।