প্রথম সেঞ্চুরির পর জানতাম না আরও ৯৯টি আসবে: টেন্ডুলকার

৩০ বছর আগের এই দিনে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো তিন অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন শচিন টেন্ডুলকার। কে জানত-সেদিনের সেই ১৭ বছরের এই ব্যাটসম্যান ক্রিকেট রেকর্ড বইয়ে উলট-পালট করে ফেলবেন। বিস্ময় বালক থেকে হয়ে উঠবেন ক্রিকেট কিংবদন্তি, একশ সেঞ্চুরির মালিক! টেস্ট ও ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রানও তার। এমন অনেক রেকর্ডের মালিক তার প্রথম সেঞ্চুরির তিন দশক পূর্তির দিনে পেছনে ফিরে তাকালেন, স্মরণ করলেন সেই বিশেষ দিনের কথা। জানালেন, প্রথম সেঞ্চুরির পর কল্পনাতেও ভাবেননি, সামনে আরও ৯৯টি আসবে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2020, 06:31 PM
Updated : 14 August 2020, 06:56 PM

১৯৯০ সালের ১৪ অগাস্ট ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরিটি করেছিলেন টেন্ডুলকার। ম্যানচেস্টারে সে দিন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের দৃঢ়তায় হার এড়ায় ভারত। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনি।

১৭ বছর ১০৭ দিন বয়সে অপরাজিত ১১৯ রানের ইনিংস খেলেন টেন্ডুলকার। সেই সময়ে তার চেয়ে কম বয়সে টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল কেবল পাকিস্তানের মুস্তাক মোহাম্মদের। ১৯৬১ সালে তিনি সেঞ্চুরি করেছিলেন ১৭ বছর ৭৮ দিন বয়সে। পরে ২০০১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৭ বছর ৬১ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করে সেটি ভেঙে দেন বাংলাদেশের মোহাম্মদ আশরাফুল।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম তিন অঙ্ক ছোঁয়ার দিনটি টেন্ডুলকারের মনে বিশেষ জায়গা নিয়ে আছে। টুইটারে এক ভিডিও বার্তায় ভারতের এই ব্যাটিং কিংবদন্তি জানালেন তার অনুভূতি।  

“আমার ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটি ছিল বিশেষ কিছু। কারণ, আমরা টেস্ট ম্যাচটি বাঁচাতে পেরেছিলাম এবং সিরিজ জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলাম; আর এগুলো আমাদের স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগের দিনের ঘটনা। ভারতের হয়ে খেলতে পারা আমার জন্য সৌভাগ্যের। এতো বছর ধরে আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাই।”

ছবি: আইসিসি

অভিষেকের পর নবম টেস্টে তিন অঙ্কের দেখা পান টেন্ডুলকার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৬৮ রান করেন তিনি।

৪০৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১০৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছিল ভারত, সে সময় দলের ত্রাতা হয়ে আসেন টেন্ডুলকার। ছয় নম্বরে নেমে করেন সেঞ্চুরি, দলকে বাঁচান নিশ্চিত হারের হাত থেকে।

“প্রথম ইনিংসে আমি ৬৮ রান করেছিলাম এবং শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছিলাম। দ্বিতীয় ইনিংসে ছয় নম্বরে ব্যাটিং করতে গিয়েছিলাম। আমাদের কয়েকটি উইকেট পড়ে গিয়েছিল এবং আরও অনেক ওভার খেলতে হতো। তাই আমি ক্রিস আঁকড়ে ছিলাম...আক্রমণের সুযোগ ছিল এবং সেটাও করেছিলাম। কখনও ভোলার নয়, সেই প্রথম ম্যাচ সেরা হয়েছিলাম।”

দীর্ঘ ২৪ বছরের ক্যারিয়ারে পরে আরও ৯৯ বার তিন অঙ্কের পর ব্যাট উঁচিয়ে ধরেছেন টেন্ডুলকার; ১০০ শতকের ৫১টি টেস্টে, ৪৯টি ওয়ানডেতে। প্রথমটির অনুভূতি যেমন মধুর, তেমনি শততম সেঞ্চুরির ভালোলাগাও।

“একবার এক অনুষ্ঠানে আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ‘আপনার প্রথম সেঞ্চুরি ও ১০০তম সেঞ্চুরির মধ্যে পার্থক্য কী?’ আমি উত্তরে বললাম, যখন আমি প্রথম সেঞ্চুরিটি করি, তখন আমি জানতাম না যে পরে আরও ৯৯টি আসছে। আর যখন ৯৯তম সেঞ্চুরিতে আটকে ছিলাম, তখন কিছু মানুষ আমাকে পরামর্শ দেওয়া শুরু করল-কী করা উচিত আর কী-না। তারা হয়তো বুঝতেও চায়নি যে ৯৯টি সেঞ্চুরি করে এসেছি আমি। আমার প্রথম ও ১০০তম সেঞ্চুরির মধ্যে এটাই ছিল পার্থক্য।”