ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার সরফরাজকে দেখা গেছে এই ভূমিকায়। পাকিস্তান ইনিংসের ৭১তম ওভারে মোহাম্মদ রিজওয়ান আউট হওয়ার পর ওপেনার শান মাসুদের জন্য পানি ও জুতা নিয়ে মাঠে যান সরফরাজ।
পাকিস্তানকে ১৩ টেস্ট, ৫০ ওয়ানডে ও ৩৭ টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন সরফরাজ। তার নেতৃত্বে ইংল্যান্ডে ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল পাকিস্তান, শীর্ষে উঠেছিল টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে।
পাকিস্তানের ক্রিকেটে নিজেকে যে অবস্থানে নিয়েছেন সরফরাজ, তাতে এমন কিছু তার প্রাপ্য নয় বলেই মনে করেন শোয়েব।
“দৃশ্যটি আমার ভালো লাগেনি। করাচির একটি ছেলেকে দিয়ে যদি উদাহরণ তৈরি করতে চাওয়া হয়, তাহলে তা ভুল। পাকিস্তানকে চার বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়েছে, দেশকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতিয়েছে, এমন একজনের সঙ্গে এমনটি করা যায় না। তাকে জুতা বহন করতে বাধ্য করা হয়েছে। সে নিজে থেকে যদি এমনটি করে, তাকে থামানো উচিত। ওয়াসিম আকরাম কখনও আমার জন্য জুতা নিয়ে আসেনি।”
“ এত বোঝা যায়, সরফরাজ একান্তই বাধ্যগত ও দুর্বল একজন মানুষ। যেভাবে জুতা বয়ে নিয়ে গেছে, পাকিস্তানকে নেতৃত্বও নিশ্চয়ই সেভাবেই দিয়েছে সে! এ কারণেই মিকি আর্থার (সাবেক কোচ) সব সময় তার ওপর প্রভাব খাটিয়েছে। আমি বলছি না জুতা বহন করা কোনো সমস্যা, তবে একজন সাবেক অধিনায়ক এটা করতে পারে না।”
সাবেক কিপার-ব্যাটসম্যান লতিফের চোখে শুধু সরফরাজের ঘটনাই নয়, অসঙ্গতি চোখে পড়েছে আরও।
“ আমির ও ওয়াহাবের মতো সিনিয়র খেলোয়াড়ও দলের বাইরে ছিল, তারা এমনকি খেলার পোশাকেও ছিল না। ট্র্যাক স্যুট পরে ছিল। এটা দলীয় চেতনার ব্যাপার নয়। এটা সরফরাজের মহত্ব, কারণ খেলারটির প্রতি তার ভালোবাসা প্রবল। তবে এমনটা হওয়া উচিত হয়নি।”
সরফরাজের এই ঘটনা নিয়ে পাকিস্তানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে প্রবল। শোয়েব ও লতিফের সমালোচনার পর দ্বিতীয় দিন শেষে মিসবাহ-উল-হকের সংবাদ সম্মেলনে ওঠে এই প্রসঙ্গ। পাকিস্তান কোচ ও সাবেক অধিনায়ক এখানে সমালোচনার কিছু দেখছেন না।
“এই ধরণের আলোচনা কেবল পাকিস্তানেই সম্ভব! আমি যখন অধিনায়ক ছিলাম, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটি ম্যাচে দলের বাইরে ছিলাম, আমিও তখন দ্বাদশ খেলোয়াড়ের দায়িত্ব পালন করেছি। এটা করতে কোনো লজ্জা নেই।”
“সরফরাজ মানুষ ও খেলোয়াড় হিসেবে অসাধারণ। সে জানে, এটা দলীয় খেলা। অন্য খেলোয়াড়রা যখন বাইরে অনুশীলন করছে, তখন এখানে যে আছে, তারই তো সাহায্যে এগিয়ে উচিত। এখানে অসম্মানের কিছু তো নেই। এটা সরফরাজের বিশালত্ব যে সে কিছু মনে করেনি। পাশাপাশি, একই সঙ্গে ভালো একটি দলেরও ইঙ্গিত এটি।”