২০ বছরেও নিষেধাজ্ঞার কারণ খুঁজে পাননি আজহার

ক্রিকেটবিশ্ব কাঁপিয়ে দেওয়া সেই নিষেধাজ্ঞার ২০ বছর হতে চলেছে। দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে মুক্তি পেয়েছেন মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন। ক্রিকেটের মূল স্রোতে ফিরেছেন দাপটে। কিন্তু পেছন ফিরে তাকিয়ে, এত বছর পরও নিজের সেই নিষেধাজ্ঞার কারণ খুঁজে পান না সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2020, 06:11 AM
Updated : 30 July 2020, 06:11 AM

ভারতীয় ক্রিকেটের ভিত নাড়িয়ে দেওয়া ম্যাচ পাতানো বিতর্কে ২০০০ সালে আজহারকে আজীবন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ভারতীয় বোর্ড। সাজার বিরুদ্ধে তিনি লড়াই চালিয়ে যান আদালতে। ২০১২ সালে নিষেধাজ্ঞাকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে আজহারকে মুক্তি দেয় অন্ধ্র প্রদেশ হাই কোর্ট।

পাকিস্তানের একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটে বুধবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে আজহার দাবি করলেন, সেই অন্ধকার সময়টি নিয়ে এখনও তিনি আঁধারে।

“ যা ঘটেছে, কাউকেই সেসবের দায় দিতে চাই না। কিন্তু আমি সত্যিই জানি না, আমাকে নিষিদ্ধ করার কারণ কী ছিল….।”

“ তবে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ১২ বছর পর মুক্তি পেয়েছি। হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান হিসেবে যখন বিসিসিআইয়ের বার্ষিক সাধারণ সভায় গিয়েছিলাম, আমি খুবই তৃপ্তি পেয়েছিলাম।”

ক্যারিয়ারের প্রথম তিন টেস্টেই সেঞ্চুরির অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়ে ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছিলেন আজহার। তার সেই রেকর্ড এখনও ছুঁতে পারেননি কেউ। ক্রমে টেস্ট ও ওয়ানডেতে হয়ে ওঠেন ভারতের ভরসা। দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন দীর্ঘসময়।

দুর্দান্ত স্টাইলিশ এই ব্যাটসম্যান ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে ৯৯ টেস্টে ২২ সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ৬ হাজারের বেশি। ৩৩৪ ওয়ানডে খেলে রান ৯ হাজারের বেশি। ওয়ানডে ইতিহাসে ৯ হাজার রান স্পর্শ করা প্রথম ব্যাটসম্যান তিনিই। ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৪৭ টেস্ট ও ১৭৪ ওয়ানডেতে।

বরাবরই বিনয়ী ও শান্ত বলে বিবেচিত আজহারের বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ ভারতীয় ক্রিকেট তো বটেই, বিশ্বক্রিকেটেই ছিল বড় চমক। নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তির পর হারানো সম্মান ধীরে ধীরে পেতে শুরু করেন তিনি। হায়দরাবাদ ক্রিকেটে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৮ সালে কলকাতায় টেস্ট শুরুর ঘণ্টা বাজানোর সুযোগ পেয়েছেন। গত বছর হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের একটি স্ট্যান্ডের নামকরণ করা হয় তার নামে। গত বছরই ভারতের প্রথম দিন-রাতের টেস্টে সাবেক অধিনায়কদের সঙ্গে সম্মানিত করা হয় তাকেও।

নিষিদ্ধ না হলে হয়তো টেস্ট খেলার সেঞ্চুরি করতে পারতেন আজহার। তবে ৯৯ টেস্টে আটকে থাকা নিয়ে আক্ষেপ নেই বলে জানালেন ৫৭ বছর বয়সী এই সাবেক ব্যাটসম্যান।

“ আমি ভাগ্যে প্রবলভাবে বিশ্বাস করি। কপালে যা আছে, সেটাই হয়। এখন আমি এটিকে এভাবে দেখি যে, এই যুগের কোনো ক্লাস ক্রিকেটার একশর বেশি টেস্ট খেলে ফেলবে। ৯৯ টেস্ট খেলার যে রেকর্ড আমার আছে, এটি তো কেউ ভাঙতে পারবে না!”

“ ১৬-১৭ বছর খেলেছি, ১০ বছরের মতো নেতৃত্ব দিয়েছি। আর কী-ই বা আমি চাইতে পারি!”