‘৫টি ট্রিপল, আরও ১০টি ডাবল সেঞ্চুরির সামর্থ্য শচিনের ছিল’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার কাজটা শচিন টেন্ডুলকারের চেয়ে ভালো কেউ পারেনি। কিন্তু শতরানকে আরও বড় করার জন্য যে ক্ষুধা, সেটা তার মাঝে যেন ততটা দেখেননি কপিল দেব। ভারতের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের বিশ্বাস, মুম্বাই ক্রিকেটের ঘরানায় আটকে না থাকলে টেন্ডুলকারের নামের পাশে থাকতে পারত পাঁচটি ট্রিপল সেঞ্চুরি ও আরও ১০টি ডাবল সেঞ্চুরি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2020, 03:46 PM
Updated : 29 July 2020, 03:46 PM

টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি (৫১) এসেছে টেন্ডুলকারের ব্যাট থেকে। তবে কখনোই ট্রিপল সেঞ্চুরির কাছাকাছি তিনি যেতে পারেননি। ডাবল সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন ৬টি, সর্বোচ্চ বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০০৪ সালে অপরাজিত ২৪৮। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও সেটি ছিল তার সর্বোচ্চ।

ওই বছরই অস্ট্রেলিয়ায় ২৪১ রানের আরেকটি ইনিংস খেলেছিলেন শচিন। বাকি চার ডাবল সেঞ্চুরির একটিতেও ছুঁতে পারেননি ২২০।

সাবেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান উরকেরি ভেঙ্কট রমনের সঙ্গে ইনসাইড আউট পডকাস্টে কপিল বললেন, বড় ইনিংস খেলার রসায়ন কখনোই বুঝে উঠতে পারেননি টেন্ডুলকার।

“শচিনের এত প্রতিভা ছিল, আর কারও মাঝে অতটা দেখিনি আমরা। সে এমন একটা যুগে জন্মেছিল, যেখানে জানত কীভাবে সেঞ্চুরি করতে হয়। কিন্তু সে কখনোই আরও নির্দয় ব্যাটসম্যান হয়ে উঠতে পারেনি।”

“ ক্রিকেটের সবকিছুই শচিনের ছিল। সে জানত সেঞ্চুরি কীভাবে করতে হয়, কিন্তু জানত না কীভাবে সেঞ্চুরিগুলোকে ডাবল সেঞ্চুরি, ট্রিপল সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে হয়। অন্তত পাঁচটি ট্রিপল সেঞ্চুরি এবং আরও ১০টি ডাবল সেঞ্চুরি করার প্রতিভা শচিনের ছিল। কারণ প্রতি ওভারেই পেসার কিংবা স্পিনারকে অন্তত একটি করে বাউন্ডারি মারতে পারত সে।”

কপিলের মতে, টেন্ডুলকারের জন্য কাল হয়েছিল মুম্বাইয়ের মানসিকতা থেকে বের হতে না পারা। এজন্যই টেন্ডুলকারকে তিনি বলতেন, বিরেন্দর শেবাগকে দেখে শিখেত।

“সে (টেন্ডুলকার) আটকে পড়েছিল মুম্বাই ক্রিকেটের মানসিকতায়। যেখানে সেঞ্চুরির পর একটা দাগ টেনে আবার শূন্য থেকে শুরু করা হয়। এখানেই আমি বলতাম, ‘তুমি বিরেন্দর শেবাগের মতো হও।’

“শচিনকে বলতাম, ‘তোমার অবশ্যই শেবাগকে দেখা উচিত’, যে সেঞ্চুরিতে পৌঁছানোর পর ওভারে দুটি না হলেও অন্তত একটি বাউন্ডারির চেষ্টা করত। এতে পরের ২০ ওভারেই সে ডাবল সেঞ্চুরির কাছে চলে যেত। এটাই ছিল পার্থক্য। কখনও কখনও ব্যাপারগুলো ধরিয়ে দেওয়ার লোক পাশে থাকে না, কখনও নিজের শক্তির জায়গা সম্পর্কে ধারণা থাকে না। শচিনের উৎকর্ষতা ছিল দারুণ, অতুলনীয়। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পর প্রায়ই সে সিঙ্গেল নিয়ে অন্য প্রান্তে চলে যেত।”

টেস্ট ক্রিকেটেও বিধ্বংসী ব্যাটিং করে টেস্ট ব্যাটিংকে অন্য মাত্রা দিয়েছিলেন শেবাগ। ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছেন দুটি, আরেকবার করেছেন ২৯৩। দ্রুততম ট্রিপল সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড তার। দুইশ বলের কম খেলে ডাবল সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন রেকর্ড তিনবার।

তবে শেবাগের দুর্বলতা ছিল, অতিরিক্ত শট খেলতে গিয়ে আউট হওয়া। সেটি নিয়েও শেবাগের প্রতি পরামর্শ ছিল কপিলের।

“শেবাগকে বলতাম, ‘ শচিনের মতো হও; তোমার হাতে এতো শট আছে, যদি স্রেফ ৩০ মিনিট ধৈর্য্য ধরো, সেঞ্চুরিতে পৌঁছে যেতে পারো।”