ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই দুদলের ক্রিকেট লড়াইয়ের নামকরণ করা হচ্ছে দুই কিংবদন্তি স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস ও স্যার ইয়ান বোথামের নামে।
রিচার্ডস সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। আনন্দদায়ী ও আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে মাতিয়েছেন প্রায় দেড় যুগ। বোথামকে রাখা হয় সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের ছোট্ট তালিকায়ও। মাঠে প্রতিপক্ষ হিসেবে অনেক স্মরণীয় লড়াইয়ের জন্ম হয়েছে যেমন দুজনের পারফরম্যান্সে, তেমনি ইংলিশ কাউন্টি দল সমারসেটে দীর্ঘদিন একসঙ্গে দাপট দেখিয়েছেন দুজন। সেই সময় থেকেই দুজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দুই কিংবদন্তির বন্ধুত্ব নিয়েও রচিত হয়েছে অনেক গল্পগাঁথা।
ক্রিকেটের ‘বাইবেল’ হিসেবে পরিচিত উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমানাকের সম্মানে এই দুই দলের সিরিজের নামকরণ করা হয়েছিল ‘উইজডেন’ ট্রফি। ১৯৬৩ সালে অ্যালমানাকের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে এই নাম চালু হয়েছিল। এত বছর পর তা পাল্টে যাচ্ছে।
ভিভের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে তছনছ হয়েছে বিশ্বের সব বোলিং আক্রমণ। তবে ইংল্যান্ডের ওপর দিয়েই তিনি ঝড় বইয়ে দিয়েছেন বেশি। টেস্টে তার ক্যারিয়ার ব্যাটিং গড় ৫০.২৩, কিন্তু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬২.৩৬। ১২১ টেস্টে ২৪টি সেঞ্চুরি করেছেন, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৬ টেস্টে করেছেন ৮টি।
“ছেলেবেলা থেকেই যে খেলাটির প্রগাঢ় প্রেম, সেই খেলায় আমার অর্জনের জন্য যে সম্মানজনক স্বীকৃতি আমাকে দেওয়া হচ্ছে, তা জানতে পেরে আমি উচ্ছ্বসিত। ইংল্যান্ডে গিয়ে সমারসেটের হয়ে খেলার সুযোগ যখন পেলাম, প্রথম যে মানুষগুলোর সঙ্গে দেখা হয়েছিল, তাদের একজন ছিল ইয়ান বোথাম। পরে সে আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুদের একজন হয়ে ওঠে। আজীবনের বন্ধু আমরা।”
“ক্রিকেট মাঠে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের লড়াইয়ের নামকরণ আমাদের নামে হওয়া দারুণ ব্যাপার। আমার মনে হয়, মাঠের বাইরে আমাদের সম্পর্কও ফুটে উঠছে এতে, যা অসাধারণ। মাঠে আমরা ছিলাম প্রতিদ্বন্দ্বী, কিন্তু মাঠের বাইরে আমরা ছিলাম ভাই। ট্রফির একপাশে আমার নাম, আরেক পাশে তার নাম দেখে আমি গর্বিত।”
সেই সময়ের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বোথামের রেকর্ড খুব উজ্জ্বল নয়। ২০ টেস্টে রান করেছেন ৭৯২, উইকেট নিয়েছেন ৬১টি। তবে অলরাউন্ডার হিসেবে তার গ্রেটনেস নিয়ে তো সংশয় আছে সামান্যই। তার প্রতিক্রিয়ায়ও উঠে এলো মাঠের ভেতরে-বাইরে রিচার্ডসের সঙ্গে লড়াই ও সম্পর্ক।
“আমি যাদের বিপক্ষে খেলেছি, ভিভই ছিল সেরা ব্যাটসম্যান। আমার দারুণ বন্ধুও সে, তবে আমরা তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীও ছিলাম, বিশেষ করে ক্রিকেট মাঠে আর কারও উইকেট আমাকে এতটা আনন্দ দিত না।”
“ক্রিকেটের সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর একটি সবসময়ই ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলা। এই ট্রফি আমাদের নামে হওয়া অনেক বড় সম্মান। আশা করি, এবারের মতোই সামনের সিরিজগুলোও খুব রোমাঞ্চকর হবে।”