আইসোলেশনেও বর্ণবাদের শিকার আর্চার

আইসোলেশনে থাকার সময়ও বর্ণবাদী আচরণের শিকার বলে অভিযোগ করলেন জফ্রা আর্চার। ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডকে (ইসিবি) তিনি জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেনস্তা হওয়ার কথা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2020, 07:59 AM
Updated : 22 July 2020, 08:44 AM

‘বায়ো-সিকিউর’ বিধি ভঙ্গ করায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল আর্চারকে। তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল হোটেল কক্ষে। ওই সময়টাতেই তাকে বর্ণবাদী গালিগালাজ করা হয়েছে বলে ডেইলি মেইলে নিজের কলামে লিখেছেন ২৫ বছর বয়সী পেসার।

“ গত কয়েকদিনে ইনস্টাগ্রামে যে ধরনের কটুকথা আমাকে বলা হয়েছে, তার বেশকিছু ছিল বর্ণবাদী এবং আমি ঠিক করেছি, যথেষ্ট হয়েছে। ক্রিস্টাল প্যালেসের ফুটবলার উইলফ্রেড জাহা অনলাইনে এক ১২ বছর বয়সীর কাছে বর্ণবাদের শিকার হওয়ার পর আমি ঠিক করেছি, কোনোকিছুই আর উপেক্ষা করব না। এজন্যই ইসিবির কাছে অভিযোগ করেছি এবং তা এখন সঠিক প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যাবে।”

গত এক বছরে এর আগেও কয়েকবার বর্ণবাদের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছিলেন আর্চার।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার পর থেকেই দারুণ পারফরম্যান্সে ইংল্যান্ড দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছেন আর্চার। গত বছর বিশ্বকাপ জয়ে তার ছিল বড় অবদান। টেস্ট ক্রিকেটেও দুর্দান্ত পারফর্ম করে চলেছেন। এবার শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনায় নায়ক থেকে মুহূর্তেই খলনায়ক হওয়ার বাস্তবতা বুঝেছেন তিনি।

“ অবশ্যই কেউই সবসময় খুব ভালো আচরণ করবে না। কিন্তু মাঝেমধ্যে আমার মনে হয়, এই পৃথিবীতে সমতা বলে কিছু নেই… আসলেই এবং সত্যিই। গত কয়েকদিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক প্রোফাইল আমি অনুসরণ করা বাদ দিয়েছি এসব থেকে দূরে থাকতে। আর ফিরে তাকাব না। এসবকে অযথা যন্ত্রণা মনে হয়েছে আমার কাছে। দুটি উইকেট নিলেই আবার সবাই প্রশংসায় ভাসাবে। খুবই অস্থির এক জগতে আমরা বাস করি।”

আইসোলেশনের ৫ দিনে দুই দফায় কোভিড-১৯ পরীক্ষায় নেগেটিভ আসার পর দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার অনুমতি পেয়েছেন আর্চার। এই ঘটনার পর তাকে নিয়ে যে তুমুল আলোচনা ও আগ্রহ, এসবে নিজের অস্বস্তিও তুলে ধরেছেন আর্চার।

“ নেটে বোলিংয়ে ফেরার সময় অনুভব করেছি, ঠিক যেন তাগিদ পাচ্ছি না। আইসোলেশন থেকে প্রথমবার রুমের বাইরে পা রাখার পর প্রতিটি পদক্ষেপে ক্যামেরার ক্লিকের শব্দ শুনতে পেয়েছি। পুরো ব্যাপারটিই আমাকে অস্বস্তিতে ফেলেছে।”

“ আমি জানি যে একটা ভুল করে ফেলেছিলাম এবং সেটির ফলও ভোগ করেছি। তবে আমি অপরাধ করিনি এবং নিজেকে ফিরে পাওয়ার অনুভূতি আবার পেতে চাই।”

লোকের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকা, তারকা খ্যাতির বিড়ম্বনা, এসব নিয়ে সতীর্থ বেন স্টোকসের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানালেন আর্চার।

“কেমন লাগছে তা নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি। বেন স্টোকসের সঙ্গেও কথা হয়েছে সোমবার রাতে। বেন আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে যে, আন্তর্জাতিক ক্রীড়ার জগতে পাদপ্রদীপের আলোয় থাকা কিভাবে সামলাতে হয়। আমার পাশে থাকার ও সমর্থন করার কথা বলেছে সে। এখন আমার শতভাগ ঠিক হওয়া প্রয়োজন যেন ক্রিকেটে মন দিতে পারি।”