‘মি. ইনক্রেডিবল’ স্টোকস !

বেন স্টোকসের সামর্থ্যের আরেকটি উজ্জ্বল বিজ্ঞাপন হয়ে থাকল ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্ট। তার অসাধারণ অলরাউন্ড নৈপূন্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে ইংল্যান্ড। এই টেস্টে স্টোকসের পারফরম্যান্স এতটাই চমকপ্রদ যে, জো রুট পর্যন্ত বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে পড়ে যাচ্ছেন। ইংল্যান্ড অধিনায়ক বলছেন, স্টোকসের সামর্থ্যের সীমানা কেবলই আকাশ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2020, 04:56 AM
Updated : 21 July 2020, 04:59 AM

শুধু ব্যাটে-বলে জ্বলে ওঠাই নয়, এই টেস্টে স্টোকস দেখিয়েছেন, অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের কত রঙ থাকতে পারে। প্রথম ইনিংসে দলের বিপর্যয়ে ব্যাট করতে নেমে খেলেছেন ১৭৬ রানের অসাধারণ ইনিংস। পরিস্থিতি ও উইকেটের দাবি মেটানো ইনিংসে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছিলেন ২৫৫ বলে, তার ক্যারিয়ারের ১০ সেঞ্চুরির মধ্যে যা মন্থরতম।

দ্বিতীয় ইনিংসে সেই স্টোকসই অন্য রূপে। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ইংল্যান্ডের জয়ের পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন ছিল দ্রুত রান তোলা। ১০ বছরের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ওপেন করতে পাঠানো হলা স্টোকসকে। তিনি উপহার দিলেন ইংল্যান্ডের ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি। তার ৫৭ বলে ৭৮ রানের অপরাজিত ইনিংসের সৌজন্যেই দ্রুত ইনিংস ঘোষণা করে বোলারদের পর্যাপ্ত সময় দিতে পারে ইংল্যান্ড।

বল হাতেও যথারীতি ছিলেন কার্যকর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে আউট করেছেন ৭৫ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ভেঙেছেন জার্মেইন ব্ল্যাকউডের (৫৫) গড়ে তোলা বাধার দেয়াল। শেষ দিকে ফিরিয়েছেন খানিকটা প্রতিরোধ গড়া আলজারি জোসেফকে।

ফিল্ডিংয়েও উজার করে দিয়েছেন সবটুকু। নিজে বোলিং করে বলের পিছু ছুটে গেছেন বাউন্ডারি পর্যন্ত। মাঠে ছিলেন যেন ইংল্যান্ডের প্রাণশক্তির উৎস।

দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে তিনি মাতিয়ে চলেছেন গত কয়েক বছর ধরেই। এই টেস্টে তার পরও যেন নতুন করে ছাড়িয়ে গেছেন নিজেকে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সেই বিস্ময় ফুটে উঠল অধিনায়ক জো রুটের কণ্ঠে।

“ আমার মনে হয় সে ‘মি. ইনক্রেডিবল।’ আমি নিশ্চিত, এই পর্যায়ের পারফরম্যান্স সে নিয়মিতই করে যেতে পারে। সত্যি বলতে, ওর সামর্থ্যের সীমানা ছুঁতে পারে আকাশ। সে যেভাবে নিজেকে এগিয়ে নিচ্ছে, এমন পারফরম্যান্স নিয়মিত না করতে পারার কারণ নেই।”

“ এই ম্যাচের মতো পরিপূর্ণ পারফরম্যান্স দেখানো এবং বিভিন্ন পরিস্থিতির দাবি মেটানো, এসব আসলে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সামর্থ্যকেই আরও বাড়িয়ে তোলে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, যদি এভাবেই সব পরিস্থিতি পড়তে পারে এবং এই আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে পারে, তাহলে এই সপ্তাহে যা করেছে ও গত ১২ মাস ধরেই যা করে আসছে, এমন অসাধারণ পারফরম্যান্স ধরে রাখতে না পারার কারণ নেই।”

এই ম্যাচের আগে সিরিজের প্রথম টেস্টে রুটের অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন স্টোকস। সেই ম্যাচে দুই ইনিংসে করেছিলেন ৪৩ ও ৪৬, উইকেট নিয়েছিলেন ৬টি।