বিশ্বকাপ বদলে দিয়েছে মর্গ্যানের দুনিয়া

ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের ঘিরে উপমহাদেশের মতো উন্মাদনা ইংল্যান্ডে নেই। জাতীয় দলের অধিনায়ক হয়েও তাই তারকাখ্যাতির স্বাদ আগে সেভাবে পাননি ওয়েন মর্গ্যান। কিন্তু বিশ্বকাপ জয়ের পর পাল্টে গেছে চিত্র। আগে যেসব ছিল ভাবনার বাইরে, গত এক বছর ধরে সেসব অভিজ্ঞতাই হচ্ছে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2020, 05:30 AM
Updated : 14 July 2020, 05:30 AM

ইংলিশ ক্রিকেট ইতিহাসের স্মরণীয়তম দিনটির এক বছর পূর্ণ হলো মঙ্গলবার। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই, লর্ডসে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল জিতে ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিলেন মর্গ্যান।

সেই ফাইনাল যেন ছাড়িয়ে গিয়েছিল রোমাঞ্চের চূড়ান্ত সীমাও। মূল ম্যাচ ‘টাই’ হওয়ার পর সুপার ওভারেও দুই দল ছিল সমতায়। শেষ পর্যন্ত বাউন্ডারির সংখ্যায় এগিয়ে থেকে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। ক্রিকেটের জন্ম, ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্ম যে দেশে, তারা প্রথমবার স্বাদ পায় ওয়ানডে বিশ্বকাপ শিরোপার।

১৪ বছর পর ইংল্যান্ডে ‘ফ্রি-টু-এয়ার’ চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছিল কোনো ক্রিকেট ম্যাচ। ৮০ লাখের বেশি দর্শক সেখানে টিভিতে দেখেছিল ম্যাচটি।

ইংল্যান্ডের বোর্ডের লক্ষ্য ছিল, ক্রিকেটের উর্ধ্বগামী জনপ্রিয়তাকে এই মৌসুমে আরও বাড়িয়ে তোলা। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপে ভেস্তে গেছে অনেক ভাবনা। মর্গ্যান তবুও মনে করেন, ইংল্যান্ডের ক্রিকেটের অবস্থান শক্ত হয়েছে আরও। জনপ্রিয়তার স্বাদ টের পেয়েছেন তিনি নিজেও।

“ আমার মনে হয়, খেলাটার ওজন উল্লেখযোগ্যরকম বেড়েছে। বাইরে গেলেই, রাস্তায় বা পাবে বা ক্যাফেতে, লোকে আমাকে দেখলে ছুটে আসছে। শুধু দেশেই নয়, আমরা যখন ছুটিতে যাই, কেউ হয়তো কোনো টেনিস ম্যাচ বা গ্রাঁ প্রিঁ দেখতে গেল, সেখানেও একই চিত্র। কিংবা পাশের বাসায় চিৎকার শুনে কেউ হয়তো ভাবছে, তারা কী দেখছে!”

“ পুরো ব্যাপারটিই হচ্ছে ক্রীড়ার উৎসবের, আর লোকে ট্রফি জিততে ভালোবাসে। ক্রিকেটের গুরুত্ব অবশ্যই বেড়ে গেছে এবং এভাবেই আমার জীবন বদলে গেছে। লোকে এখন আমাকে অনেক বেশি চেনে।”

২০১৫ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর থেকেই পরের বিশ্বকাপ নিয়ে পরিকল্পনা সাজিয়েছিল ইংল্যান্ড। চার বছরের সাধনার ফল মিলেছিল ২০১৯ বিশ্বকাপে। এত কষ্টের ফল বলেই তা আরও মধুর লেগেছিল মর্গ্যানদের কাছে। তবে ইংল্যান্ড অধিনায়কের মতে, ফাইনাল অতি নাটকীয় হওয়ায় তা মানুষকে নাড়া দিয়েছে আরও বেশি।

“ জীবনে কোনো কিছুর জন্য বেশি পরিশ্রম করলে, সেটি বিশ্বকাপের জন্য হোক বা স্রেফ একটি ফরোয়ার্ড ডিফেন্সের জন্য, খাটুনি যত বেশি, ফল পেলে তৃপ্তিও মেলে বেশি। এটাই মানুষের ধরন, আমি এমনটিই মনে করি।”

“ তবে সেই দিনটির নাটকীয়তা আসলে খেলাটির দারুণ বিজ্ঞাপন হয়ে গেছে। ফাইনালটি আসলে ক্রিকেটের সীমানা ছাড়িয়ে গেছে। এটি আসলে ব্রিটিশ ক্রীড়া ইতিহাসের সেরা দিনগুলির একটি হয়ে উঠেছে এবং এভাবেই থাকবে আরও অনেক দিন। এটি আরও বেশি তৃপ্তিদায়ক।”